Thursday, April 14, 2016

স্মৃতিতে ড. শহিদুল্লাহ ফযলুল বারী রহ.

"গরমটা বেশী। হাফ লিটারে তো গলাই ভিজলো না। "
দৌড়ে গিয়ে আরেকটা পানির বোতল নিয়ে আসলাম। বোতলটা হাতে নিয়ে জোর করেই হুজুর পনেরো টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন "যেহেতু ছাত্ররা পয়সা উপার্জন করে না তাই নিজের টাকা খরচ করে তাদের খেদমত করা নিষেধ। হ্যা, যখন উপার্জন করবে তখন নিষেধ করবো না" মনে মনে ভাবছিলাম প্রথম উপার্জন থেকে হুজুরকে কি হাদিয়া দেয়া যেতে পারে।
এই ঘটনা মাত্র কয়েকটাদিন আগের। তখন জানতামনা যে ফজলুল বারি সাহেব হুজুরের সাথে এটাই শেষ স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে।
গত বছরের কথা। প্রতিসপ্তাহে কিছু কিছু লিখে দেখাতাম। প্রথম প্রথম তো পুরা লেখাটাই লাল করে ফেলতেন। আমার লেখার কোন অস্তিত্বই রাখতেন না। নিজের উন্নতিটা যতটুকুই চোখে পড়েছিল এরচেয়ে বড় সবক ছিল "উপমহাদেশে আরবি চর্চায় উর্দূর প্রভাবে তৈরী সংকটটা ধরতে পারা"। তাকমীলের বছর এসে ব্যস্ততা ঘিরে ফেলে। হুজুর জিজ্ঞেসও করেছিলেন শেষ বছর এসে কেন নাগাহ দিচ্ছি। যখনই বললাম সারাদিনই হাদিসের দরসে ব্যস্ততার কথা, হুজুর সাথে সাথে বললেন "আগে হাদিসের দরস, তারপর বাকি সব"।
তখন কাফিয়া পড়ি। শুরুর দিকে হুজুর তরিকাটা ধরতে বেশ কষ্ট হচ্ছিলো। পত্রিকার ভাষা, জাদীদ আরবী আর নুকতা ছাড়া নস পড়তে গিয়ে যখন নাজেহাল অবস্থা, হুজুর তখন অভয় দিয়ে বলতেন "আরে, এসব এমন আহামরি কিছু না। আমিও তো তোমাদের মত এই জামেয়াতেই পড়েছি। সত্তরের ফারেগ আমি, আমাদের সময় এখনকার মত এতসব তাদরিবের কিতাবও পড়ানো হত না। আমি শিখেছি না?"
এমন হাজারো স্মৃতি জমে আছে গত চার বছরের এই উস্তাদ-শাগরেদ সম্পর্কে। প্রত্যেকটা স্মৃতি কিছু না কিছু শেখার কথা মনে করিয়ে দেয়। সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে, তিনি আমাদেরকে কিছু চিন্তা দিয়ে গেছেন। আরবীচর্চা  নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছেন। ভাষার জগতে এক নিরব বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন। যার পুরোটাই বেশ ইতিবাচক। যার ফলে উনার প্রত্যেকটা ছাত্রই উনার প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখে।
তাছাড়া উনার ব্যক্তিত্ব, স্বকীয়তাবোধ আর
নৈতিকতার শেকলটা যে কত বেশী শক্তিশালী ছিল এটা আমরা বুঝে নিতাম যখন তার নীতিবিরোধী কোন চিন্তা নিয়ে ক্লাসে প্রশ্ন করা হত। Iftekhar তোর মনে আছে? কর্মশালা থেকে আসার পরের ক্লাসটার কথা?
২০১০ সালে লালবাগ জামেয়ায় উনাকে ডেকে এ দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুফতি আমিনী রহ.। বলেছিলেন "আপনি এখানকার ফারেগ, অতএব এই জামেয়ার প্রতি আপনার দায়িত্ব আছে"। সেই থেকেই উনার খেদমত শুরু। উস্তাদদের রেজিস্টারে সেই থেকে তার নাম নিয়মিত। এই বয়সে এসেও এত কষ্ট করে কেন সারাদিন অফিস করে  দরসের আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন এর কারণ বলতে গিয়ে তিনি প্রায়ই মুফতি আমিনী রহ. এর সেই আবেদনের কথাটি বলতেন। তবে জামেয়ার উস্তাদ হিসেবে মুফতি আমিনী রহ.এর পর যে তিনিই প্রথম বিদায় নিবেন এ কথা কখনো বলে যাননি।

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...