ওয়েটিং ফর আব্বুর বকা। অন্নেক দিন পর আব্বু আজকে এমন সিরিয়াসভাবে রাগলেন।
বিকেল থেকেই খোজ দ্যা সার্চ চলছিল। এমনটা হবার কথা ছিল না। অনাকাঙ্খিতভাবে রিপোর্টটা আব্বুর কানে পৌছেই যতসব বিপত্তি বেধেছে।
আজকের কাহিনী হয়তো কিছুটা ভিন্ন। তবে ছুটির সময়ও আব্বু আমাকে ঘুরতে যাওয়ার অনুমতিটা একদম দিতে পারেন না। একবার আব্বুর সাথে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আমি এর কারণটা কিছুটা বুঝেছিলাম।
গত বছরের কথা, ডাক্তার আব্বুকে আমার বয়স জিজ্ঞেস করেছিল। আব্বু সতেরো বলেছিলেন। অথচ আমার বয়স তখন একুশ ছিল। তাই ভাবছি, বকা খেয়ে অভ্যস্ত হতে হবে। তা না হলে প্রতিবাদী হওয়া যাবে না। আর আব্বুর এই মনোভাবের প্রতিবাদ না করতে পারলে কপালে বিয়া নাই।
সারাদিন নিখোজ থেকে রাতে বাসায় আসলাম। আম্মুর কথায় বুঝলাম আব্বুর রাগের মাত্রাটা অন্যদিনের চাইতে বেশী। রাতের খাবার দেয়া হয়েছে। বাধ্যগত সন্তানের মত একেবারে আব্বুর পাশে গিয়ে খেতে বসলাম। পরিস্থিতি হালকা করার জন্য কিছু বলার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু নিষ্ঠুর শব্দগুলা ভয়ে আমারে একা রাইখাই পালাইছে। খাওয়া শেষ। আব্বু এখনো কিছু বলেননাই। ভয় বাড়ছে। মনে হচ্ছে আজকের বকাটা আনুষ্ঠানিকভাবে হবে। খাওয়ার পর আব্বু ছোট বোনকে দিয়ে আমাকে ডাকাবেন। এবং আব্বু তার রুমে বিচারকের আসন গ্রহণ করে বসে থাকবেন। তখন আমি অপরাধীর মত মাথা নিচু করে ঢুকবো। ইশ!!! কি ভয়ঙ্কর!!!
অনেকে যারা আব্বুর রাগ সম্পর্কে কিছুটা জানে তারা আমার এইসব দুঃসাহসী কর্মকান্ড দেখে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে " ভাই! তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরাটাই কি কলিজা?একটুও ভয় পাওনা হুজুররে?"
প্রশ্নকারী ভাই ও বন্ধুগন, ঠিক এ মুহুর্তে আপনাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
পরদিন...
আব্বু আজকে একাই বাজারে গিয়েছেন। আমাকে নেন নাই। এবার রাগের ধরনটা কেমন জানি। আব্বু হয়তো বুঝে গেছেন যে চুপ করে থাকাটাই বেশী কার্যকর। একবার বকা দিয়ে দিলে তো সব শেষই হয়ে গেল।
বাজার নিয়ে বাসায় ঢুকবেন, এমন সময় গেটে একটা হুজুর এসে গার্ডকে জিজ্ঞেস করলো:
- মাহদি কি এই বাসায় থাকে?
গার্ড আব্বুকে দেখিয়ে দিয়ে দিলো।
- আসসালামুয়ালাইকুম.. হুজুর, টাঙ্গাইলে আমার একটা মাদরাসা আছে। গতবছর আপনাদের গ্রামের মাহফিলে গিয়েছিলাম। সেখানে আপনার ছেলের বয়ানটা খুব ভাল লেগেছিলো। তখন থেকেই আমার ইচ্ছা যে এই বছর আমার মাদরাসার মাহফিলে ছেলেটাকে দাওয়াত দিবো।
- আচ্ছা, কিন্তু ওর তো সামনের মাসে পরিক্ষা। সফরের প্রথম সপ্তাহে। পরিক্ষা হলে তো যেতে পারবেনা।
- সমস্যা নাই হুজুর, আমাদের মাহফিল আগামী মাসের ২৭ তারিখে। পরিক্ষার হয়তো ততদিনে শেষ হয়ে যাবে।
- আচ্ছা বাসায় চলেন। কথা বলেন দেখেন ওর সাথে।
আব্বু বাসায় ঢুকে আমাকে যেভাবে আদর করে ডাকটা দিলেন, সেই ডাকেই আমি অনুমান করে নিলাম যে বাসায় ঢুকার আগের কনভারসেশনটা এরকমই ছিল। বিষয় সেটা না। বিষয় হইলো এই ঘটনায় আব্বুর রাগটা পানির মত মাটি হয়ে গেছে। আজকে দুপুরে খেতে বসে আমার আর কথা খুজতে হয়নাই। আব্বুই কিভাবে বয়ান রেডি করতে হবে সেই বয়ান দিয়ে যাচ্ছিলেন। "বুঝছো! পরিক্ষার পড়া আগে। আর হাদিসের কিতাব ঠিক মত পড়লে বয়ান এমনেই রেডি হয়া যাবে।"
আমি আবারো সেই বাধ্যগত ছেলের মত:
"জি আব্বু"
ধন্যবাদ, কালকে যারা আমারে বিভিন্ন অজিফা শিখায় দিছিলেন। সেই অজিফার বরকতেই হয়তো আল্লাহ টাইম মতন হুজুরটারে পাঠায় দিছেন।
সেইদিন রাতে...
এক ঘটনায় এতকিছু হয়া যাবে ভাবিনাই। কালকে আম্মুর কাছে নাকি আব্বু বলছিলো, ও যেই পাগলামী শুরু করছে, দাওরা শেষ করার সাথে সাথে বিয়া করায় দিতে হবে। ভেবে পুলোকিত হলাম যে আব্বু আমার ব্যাপারে ভাবতে শুরু করেছেন।
সে থেকে একখানা খবর দুনিয়াতে প্রসিদ্ধ হইয়াছে, আমি নাকি শীঘ্রই বিবাহের কার্য সম্পাদন করতে যাচ্ছি। আমিও চাই, খবর খানা জলদি সত্য হয়ে উঠুক। আর এই রাতের বেলায় তো চাওয়াগুলা তীব্র আকার ধারন করতেই পারে।
বিকেল থেকেই খোজ দ্যা সার্চ চলছিল। এমনটা হবার কথা ছিল না। অনাকাঙ্খিতভাবে রিপোর্টটা আব্বুর কানে পৌছেই যতসব বিপত্তি বেধেছে।
আজকের কাহিনী হয়তো কিছুটা ভিন্ন। তবে ছুটির সময়ও আব্বু আমাকে ঘুরতে যাওয়ার অনুমতিটা একদম দিতে পারেন না। একবার আব্বুর সাথে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আমি এর কারণটা কিছুটা বুঝেছিলাম।
গত বছরের কথা, ডাক্তার আব্বুকে আমার বয়স জিজ্ঞেস করেছিল। আব্বু সতেরো বলেছিলেন। অথচ আমার বয়স তখন একুশ ছিল। তাই ভাবছি, বকা খেয়ে অভ্যস্ত হতে হবে। তা না হলে প্রতিবাদী হওয়া যাবে না। আর আব্বুর এই মনোভাবের প্রতিবাদ না করতে পারলে কপালে বিয়া নাই।
সারাদিন নিখোজ থেকে রাতে বাসায় আসলাম। আম্মুর কথায় বুঝলাম আব্বুর রাগের মাত্রাটা অন্যদিনের চাইতে বেশী। রাতের খাবার দেয়া হয়েছে। বাধ্যগত সন্তানের মত একেবারে আব্বুর পাশে গিয়ে খেতে বসলাম। পরিস্থিতি হালকা করার জন্য কিছু বলার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু নিষ্ঠুর শব্দগুলা ভয়ে আমারে একা রাইখাই পালাইছে। খাওয়া শেষ। আব্বু এখনো কিছু বলেননাই। ভয় বাড়ছে। মনে হচ্ছে আজকের বকাটা আনুষ্ঠানিকভাবে হবে। খাওয়ার পর আব্বু ছোট বোনকে দিয়ে আমাকে ডাকাবেন। এবং আব্বু তার রুমে বিচারকের আসন গ্রহণ করে বসে থাকবেন। তখন আমি অপরাধীর মত মাথা নিচু করে ঢুকবো। ইশ!!! কি ভয়ঙ্কর!!!
অনেকে যারা আব্বুর রাগ সম্পর্কে কিছুটা জানে তারা আমার এইসব দুঃসাহসী কর্মকান্ড দেখে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে " ভাই! তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরাটাই কি কলিজা?একটুও ভয় পাওনা হুজুররে?"
প্রশ্নকারী ভাই ও বন্ধুগন, ঠিক এ মুহুর্তে আপনাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
পরদিন...
আব্বু আজকে একাই বাজারে গিয়েছেন। আমাকে নেন নাই। এবার রাগের ধরনটা কেমন জানি। আব্বু হয়তো বুঝে গেছেন যে চুপ করে থাকাটাই বেশী কার্যকর। একবার বকা দিয়ে দিলে তো সব শেষই হয়ে গেল।
বাজার নিয়ে বাসায় ঢুকবেন, এমন সময় গেটে একটা হুজুর এসে গার্ডকে জিজ্ঞেস করলো:
- মাহদি কি এই বাসায় থাকে?
গার্ড আব্বুকে দেখিয়ে দিয়ে দিলো।
- আসসালামুয়ালাইকুম.. হুজুর, টাঙ্গাইলে আমার একটা মাদরাসা আছে। গতবছর আপনাদের গ্রামের মাহফিলে গিয়েছিলাম। সেখানে আপনার ছেলের বয়ানটা খুব ভাল লেগেছিলো। তখন থেকেই আমার ইচ্ছা যে এই বছর আমার মাদরাসার মাহফিলে ছেলেটাকে দাওয়াত দিবো।
- আচ্ছা, কিন্তু ওর তো সামনের মাসে পরিক্ষা। সফরের প্রথম সপ্তাহে। পরিক্ষা হলে তো যেতে পারবেনা।
- সমস্যা নাই হুজুর, আমাদের মাহফিল আগামী মাসের ২৭ তারিখে। পরিক্ষার হয়তো ততদিনে শেষ হয়ে যাবে।
- আচ্ছা বাসায় চলেন। কথা বলেন দেখেন ওর সাথে।
আব্বু বাসায় ঢুকে আমাকে যেভাবে আদর করে ডাকটা দিলেন, সেই ডাকেই আমি অনুমান করে নিলাম যে বাসায় ঢুকার আগের কনভারসেশনটা এরকমই ছিল। বিষয় সেটা না। বিষয় হইলো এই ঘটনায় আব্বুর রাগটা পানির মত মাটি হয়ে গেছে। আজকে দুপুরে খেতে বসে আমার আর কথা খুজতে হয়নাই। আব্বুই কিভাবে বয়ান রেডি করতে হবে সেই বয়ান দিয়ে যাচ্ছিলেন। "বুঝছো! পরিক্ষার পড়া আগে। আর হাদিসের কিতাব ঠিক মত পড়লে বয়ান এমনেই রেডি হয়া যাবে।"
আমি আবারো সেই বাধ্যগত ছেলের মত:
"জি আব্বু"
ধন্যবাদ, কালকে যারা আমারে বিভিন্ন অজিফা শিখায় দিছিলেন। সেই অজিফার বরকতেই হয়তো আল্লাহ টাইম মতন হুজুরটারে পাঠায় দিছেন।
সেইদিন রাতে...
এক ঘটনায় এতকিছু হয়া যাবে ভাবিনাই। কালকে আম্মুর কাছে নাকি আব্বু বলছিলো, ও যেই পাগলামী শুরু করছে, দাওরা শেষ করার সাথে সাথে বিয়া করায় দিতে হবে। ভেবে পুলোকিত হলাম যে আব্বু আমার ব্যাপারে ভাবতে শুরু করেছেন।
সে থেকে একখানা খবর দুনিয়াতে প্রসিদ্ধ হইয়াছে, আমি নাকি শীঘ্রই বিবাহের কার্য সম্পাদন করতে যাচ্ছি। আমিও চাই, খবর খানা জলদি সত্য হয়ে উঠুক। আর এই রাতের বেলায় তো চাওয়াগুলা তীব্র আকার ধারন করতেই পারে।
No comments:
Post a Comment