Monday, May 30, 2016

আই এম জিপিএফাইভঃ একটি স্যাটায়ার

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সকলেরই জেনে রাখা প্রয়োজন। 

GPA5এর নতুন ফুলফর্ম ইনভেন্ট করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে "গেটিং পয়েন্ট"। এটা আমাদের দেশের সদ্যজিপিএফাইভপ্রাপ্ত
কৃতিসন্তানদের উদ্ভাবিত ফুলফর্ম। পুরাতন ব্যাখ্যা তারা কেন গ্রহণ করবে? তারা নতুন প্রজন্ম না? তাছাড়া শিক্ষাদীক্ষার দিক থেকেও তারা পূর্ববর্তীদের তুলনায় অগ্রগামী। বিশ্বাস না হলে তাদের রেজাল্ট দেখেন!!! 
এরপরও যদি এতটুকু ক্রিয়েটিভিটি মেনে নিতে না পারেন তাইলে তো মিয়া আপনে ব্যাকডেটেড। এই প্রজন্ম তখন আপনাকে সংকীর্ণমনা বলতে বাধ্য হবে।

আচ্ছা, মাছরাঙ্গার সেই ক্লিপ থেকে আরো কিছু ক্রিয়েটিভ তথ্য পাওয়া গেছে। একটু সদিচ্ছা থাকলেই কিন্তু এসব তথ্যের যুগোপযোগী ব্যাখ্যা দেয়া যায়। দরকার কিন্তু.. 

SSCএর ফুলফর্ম হচ্ছে "জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট"। কাহিনীটা হল, এখনকার 
SSCএর সার্টিফিকেট দিয়ে যে এর চেয়ে উপরের লেভেলের কিছু আশা করাটা বোকামী এই বিষয়টা বাংলার কৃতিসন্তান-সন্ততিরা হয়তো বুঝতে পেরেছেন। 
তাই এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে নিজ দায়িত্বে একটা নতুন সংজ্ঞা দাড় করিয়ে নিয়ছেন। আবার কারো কারো মতে ফুলফর্মটা আসলে হবে 
"স্কুল সেকেন্ডারী সার্টিফিকেট।" অবশ্য এই গভীর সংকটাপন্ন অবস্থায় এতটুকু আগপিছ তো মেনে নেয়াই যায়।

"আমি জিপিএ৫ পেয়েছি" এটার ইংরেজি অনুবাদ নিয়েও জিপিএ ফাইভপ্রাপ্ত "মুজতাহিদদের" মাঝে কিঞ্চিত ইখতেলাফ রয়েছে।
কারো মতে "I am GPA5"। এই বাক্যটা যে কতটা বিশুদ্ধ ও সাহিত্যপূর্ণ সেটা বূঝতে হলে অবশ্যই বালাগতের "যায়েদুন আদলুন" এর কায়েদাটা জানা থাকতে হবে।
করণ অর্থটা তখন এমন হবে যে, সে এতটাই যোগ্য যে তার সত্ত্বাটাই আস্ত একখানা 'জিপিএফাইভ" এ রূপ নিয়েছে।
আর কারো মতে ইংরেজি অনুবাদটা হবে 'I give GPA5" এটাও কিন্তু ভুল বলা যায় না। তখন ব্যাখ্যাটা হবে,
এত্তো এত্তো জিপিএফাইভ তিনি পেয়েছেন যে এখন লোকজনকে দিয়ে বেড়াচ্ছেন। 

একজন ম্যাডামের মতে অপারেশন সারচলাইটের অর্থ হচ্ছে "অপারেশনের সময় যেই লাইট দিয়ে সার্চ করা হয়"। যেহেতু তিনি এই প্রজন্মের তাই
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তিনি অবশ্যই ধারণ করেন। অতএব এটারও ব্যাখ্যা আছে। 
ম্যাডাম এখানে শাব্দিক অর্থ উদ্দেশ্য নিয়েছেন। শব্দের সাথে পারিভাষার একটা যোগসূত্র থাকেই। পাকিস্তানী বাহিনীরা তো আর রাতের আঁধারে লাইট না জ্বালিয়ে হামলা করতে আসে নাই তাই না? গ্রো আপ ম্য্যান...

স্বাধীনতা দিবস এক বর্ণনামতে ১৭ই আগস্ট (ক্লোজ এনাফ  ) আরেক বর্ণনামতে ৬ই ডিসেম্বর। আর বিজয় দিবস- ২৬এ ডিসেম্বর। ভাই থামেন! ভুল ধরার আগে লজিকটা শুনেন।
আগে স্বাধীনতা দিবস হয়, এরপরই বিজয় দিবস হয়। ইটজ সো লজিক্যাল। মানতে না পারলে কিচ্ছু করার নাই।

"জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন কাজী নজরুল।" হয়তোবা লিখছিলেন। পরে রবীন্দ্রনাথ সেইখানেও পদকের মতই কোন ঘটনা ঘটাইছে। সম্ভব কিন্তু!

"নেপালের রাজধানী নেপচুন।" এটা অবাক হওয়ার মত কোন ঘটনা না।
হতে পারে নতুন নামকরন হয়েছে। অথবা রাজধানী পরিবর্তনের নতুন আপডেট এখনো
জনসাধারণের কাছে এসে পৌঁছেনি।
অথবা এটাও সম্ভব যে, সে শিক্ষার্থী পৃথিবীর বাইরের কোন নেপালের কথা বলছিলো।
যেটা জগতের সাধারণ বিজ্ঞানীদের পক্ষে অবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। থিঙ্ক পজিটিভ। একটু পজিটিজ চিন্তা করতে পারলেই কিন্তু আমরা 
তাদের ক্রিয়েটিভিটা ধরতে পারবো।

সাংবাদিক সাহেব এইসব অমুল্য ক্রিয়েটিভ তথ্যগুলো উদ্ধার করে জাফ্রিকবাল স্যারকে অবহিত করার পর স্যার অনেকগুলো
"তারমানে" থেকে যেই ফাইনাল "তারমানে"টা বের করে আনলেন সেটা হল 
"এই জিপিএ ফাইভটা সত্যইকারের জিপিএ ফাইভ না 
যেটা তাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।" 

স্যারের এহেন উক্তি শুনে আমি শুধু নির্বাক তাকিয়েই রইলাম। একি করলেন স্য্যার! এমন ব্যাপক পঁচানি খাওয়ার পরও প্রজন্মকে বাচানোর মত কোন ব্যাখ্যাই তিনি দিলেন না!!!
এই প্রজন্ম এখন "আই হেইট পলিটিক্স" এর কি ব্যাখ্যা করবে? অবশ্য মুজতাহিদ যেহেতু.. করে নেবে একটা ইজতেহাদ।
কিন্তু স্যারই এখন আর মাদরাসার ব্যাকডেটেড পোলাপানগুলারে কিভাবে প্রগতী শিখাবে... শুধুই করুণা... 

Sunday, May 22, 2016

যেবার আমি দুইমাস পর বাসায় গেলাম

আব্বু এটা বার্থডে গিফট হিসেবে না দিলেও আমি কিন্তু গিফট হিসেবেই নিলাম। বেশী পছন্দ হয়ে গেছে জিনিষটা। ডার্ক ব্রাউন কালারটা এত্তো সুন্দরী কেন!!! একদম মাক্ষন পুরা। খায়া ফালাইতে ইচ্ছা করতাসে।

দীর্ঘ দুই মাস পর বাসায় আসলে একটু অধিক আদর যত্ন তো আমি ডিজার্ভ করতেই পারি। তো গতরাতে যখন সেটা চলছিলো, তখনই মাথায় আসলো যে এটা একটা সুবর্ণ সুযোগ বড়সড় কিছু আবদার করে বসার। জিনিষটা এমনিতেও দরকার ছিল। আম্মুকে মনে করিয়ে দিলাম যে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই উনার ছেলের তেইশ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। আব্বু যদি বারণ করে বসেন তাহলে উনার ছেলের আগামীকালকের বয়সটা স্মরণ করিয়ে দিবেন। ছেলে এখন কিন্তু আর ছোট নাই।

তবে আব্বু তো আব্বুই। রীতিমত তারাবীহর অজুহাত দেখিয়ে বললেন "সারাবছর তো তেলাওয়াত করোনা, এই কয়টাদিন ভালমত ইয়াদ করো। যা লাগবে রমজানের পর"।
কথাটা আব্বু খারাপ বলেন নাই। কিন্তু ল্যাপটপটাও যে লাগবে আমার। এইসব ক্ষেত্রে আম্মুই শেষ ভরসা। তাই শেষমেশ আম্মুর মাধ্যমে বিলটা পাশ করানো হলো।
সো হাফ ক্রেডিট গোজ টু আম্মু আর বাকি হাফ... আচ্ছা সেটা আব্বুকেই দেই..

Friday, May 20, 2016

ফারাগাত ও বিদায়ী স্মৃতি

১০ই এপ্রিল ২০১৬।
সবক শেষে মিষ্টি খাওয়ানোর দিন ...



আচ্ছা, যাদের পর্যন্ত বক্স পৌঁছাইতে পারিনাই তারা আপাতত দেইখাই চোখের ক্ষুধাটা মিটায় রাখেন। 
তবে আজকে বিশেষ আফসোস করার মত কোন ঘটনা ঘটে নাই। টাঙ্গাইলের সামান্য চমচম, এই আর কি।
আগামী ২৯ তারিখ স্পেশাল দাওয়াত আছে। সেদিন আমাদের বিদায় দেয়া হবে। সেইদিন আসবেন। কিছু আনন্দ আর বিরহ ভাগাভাগি করবোনে। 

তবে টেনশনের বিষয় হইলো আরও একটা দিন এইভাবে যাবে।
একটা দিন যে এখন কত মূল্যবান সেটা বুঝি যখন সারাদিনে একটাবারও নিউজফিড চেক করার কথা মনে পড়ে না। আসলে এইসব বিদায়ের ফরমালিটির জন্য আলাদা একটা বছর দরকার। আর সেইটা অবশ্যই আফটার অর বিফোর বেফাক। মিষ্টি খাওয়াইতে গিয়া আজকে আধাদিন ওয়েস্ট, একমাসও নাই পরিক্ষার। 
দোয়ার দরখাস্ত


এরপর ২২শে এপ্রিল। খতমে বুখারীর দাওয়াতের কার্ড হাতে আসলো...


এইগুলা খতমে বুখারীর দাওয়াতের কার্ড। মাত্র দশটা আছে এখানে। সবাইকে দিতে গেলে আরো অনেকগুলা লাগবে। কার্ডগুলা সুন্দর হইছে। নিজের কাছেই রাইখা দেওয়ার মত। ছোটবেলায় এমন সুন্দর কার্ড পাইলে জমাইতাম।
আচ্ছা গল্প বাদ। এখন পড়ালেখায় ব্যস্ত আছি, দাওয়াতের কার্ড পৌছানোর সময়টাও নাই। 

যদি আমি ফোন দিয়ে দাওয়াত দেয়ার সময় না পাই তাহলে কার্ড দেখে নিজ দায়িত্বে দাওয়াতটা গ্রহণ কইরা নিবেন কিন্তু...

এরপর খতমে বুখারী, পরিক্ষা।
এরপর...
বিদায়...
২০শে মে



শাহী মসজিদের বড় গেটের সামনে দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় পথচারীরা হয়তো আজকে বেশ অবাকই হয়েছে। হয়তো ভাবছিলো, হুজুররা এভাবে কাঁদছে কেন? কেউ মারা গেছে নাকি?
এখন আর মাত্র কয়েকজন আছে, বাকিরা সবাই একে একে বিদায় নিয়ে গেছে সকাল থেকে। একটু আগে যখন দুজনকে এগিয়ে দিতে গিয়ে বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে রিকশা ঠিক করছিলাম, তখন মনে হচ্ছিলো আকাশ বুঝি আমাদের দেখেই কাঁদছে। তখন যারা বিদায় দিচ্ছিলো কিছুক্ষণ পর তারা নিজেরাই বিদায় নিয়ে ফেলেছে। একজন  বলছিলো, "যাওয়ার সময় এত খারাপ লাগবে জানলে  জীবনে কারো সাথে হয়তো এতটা বন্ধুত্বই করতাম না।" তাহলে কি শুধু ঝগড়াই করতাম? কিন্তু আজকের এই সময়টায় এসে তো সেই ঝগড়াঝাঁটি আর খুনসুটিগুলোই বেশি মনে পড়ছে।
গতরাতে কেউ ঘুমায়নি। সারারাত বসে শেষবারের মত একটু গল্প করেছিলাম। কত স্মৃতি, কত হাসিকান্না, দৃশ্যপটে পুরো সময়টা ভেসে বেড়াচ্ছিল। এই স্মৃতিচারণের ব্যাপারটা বোধহয় কিছুটা আত্মঘাতী ছিল। যার ফলে সবার এভাবে চলে যাওয়াটা কিছুতেই মেনে নেয়া যাচ্ছে না। সম্পর্কের গভিরতাগুলো আগে কখনো এতটা উপলব্ধি করার সুযোগ পাইনি। আপন কোন ভাই নেই আমার। তাই জানিনা যে নিজের আপন ভাইয়ের বিচ্ছেদেও মানুষ এভাবে কাঁদে কিনা।
এতগুলো বছর একসাথে পড়ালেখা, ক্লাসের ফাঁকে মাসআলার ইখতেলাফ নিয়ে হুজুরের তাকরীরের উপর ঝগড়া বাধিয়ে দেয়া, আবার কখনো আড্ডাবাজি, ক্লাস না থাকলে সেই সুদূর সোহরাওয়ার্দীর  "আবুধাবী"তে গিয়ে ক্রিকেট খেলা, কুরবানীর বন্ধে দলবেধে দূরের সফরে যাওয়া, আর অল্পতেই খুনসুটি, মারামারি, এসব কিছুর সেই সোনালী মুহুর্তগুলো নিয়ে এখন চাইলেও আর কারো সাথে গল্প করা যাবে না। চাইলেও এই দীর্ঘ সময়ের বন্ধুত্বগুলোকে এখন আর প্রাণবন্ত করে তুলতে পারবোনা। স্বার্থপর দুনিয়াটা কিছুদিনের মধ্যে সবাইকে ব্যস্ত করে ফেলবে। দীর্ঘ সময়ের এ স্মৃতিগুলোকে মলিন করে ফেলবে। এটাই সত্য কথা। এটাই বাস্তবতা। যাওয়ার সময় সান্তনা দিতে গিয়ে অনেকেই বলছিলো "আরেহ! কিসের বিদায়! আবার তো দেখা হবেই"। কিন্তু এই মিথ্যা কথাটা তো মানুষ শেষ দেখার সময়ও বলে।


এরপর সিলেট... শেষ সফর... বিদায়ী সফর

কয়েকটা দিন বৃষ্টির ছোয়া পাওয়ার পর বিছানাকান্দি আর রাতারগুল যে ভয়ংকর সুন্দর রূপটা ধারণ করে সেটা দেখার সুযোগ আসার পরও মিস করার মত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আমার জীবনে ঘটতে দিতে চাইনা বলেই কেবল মাত্র ৩০০ দিনেরও কম ব্যবধানে একই জায়গায় তিন তিনটা সফর.... কান্ট হেইট ইউ সিলট.....

ট্যুরের সিদ্ধান্তটা হুট করেই হয়েছে। কথা হচ্ছে, পরিক্ষার পর এই হালকা রিফ্রেশমেন্টটা দরকার ছিল খুব। এসে মনে হচ্ছে না খুব বেশী লস করে ফেলেছি। সিলেটের আকাশটা সত্যিই অসম্ভবরকম সুন্দর লাগছ আজকে। ঢাকার ঝড় বৃষ্টির তেমন প্রভাব নেই এখানে। তবে হালকা মেঘ জমবে মনে হচ্ছে। যেটা খুব করে চাচ্ছি। 

ক্লাসমেট ফ্রেন্ডগুলোর সাথে এটাই হয়তো শেষ সফর। থাক.. দুঃখটা ফেরার সময় করবোনে। আই বেটার ট্রাই টু লিভ ইন দা মোমেন্ট। দিনটা ভাল যাবে মনে হচ্ছে...


The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...