"খাদিজা নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ" থেকে বদরুল সাহেব কর্তৃক সংগঠিত সেই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে একটা আন্দোলন হচ্ছিলো। নেতৃত্বে ছিলো ফজিলাতুন্নেসা নামে এক শিক্ষার্থী। সে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী না। আজ তার মায়ের ফোনে ফোন করে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে "যেখানেই তোকে পাবো সেখানেই খাদিজার মতো কুপিয়ে মারবো।" ফজিলাতুন্নেসার বাবা নেই। এবং তার পরিবারেও এমন কেউ নেই যে এখন তাদের নিরাপত্তা দিতে পারে।
ক্ষমতাসীনদের অন্যায়ের প্রতিবাদে ন্যায় বিচার চাওয়ার পর এ ধরণের পরিণামগুলো আজকাল স্বাভাবিকই বলা চলে। কারণ এসব ঘটনার পর আসামী যে উনাদের দলের কেউ না এটা প্রমাণ করতে তাদের বেশ ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। কে কালে হুমকি দিলো এতসব দেখার সময়টা কোথায়?
এদিকে আমরা পুরুষরা যখন চুড়ি পরে ঘরে বসে থাকার দায়িত্ব নিয়েই নিয়েছি তখন তো ফজিলতুন্নেছাদের ঝুকি নিয়ে মাঠে নেমে আসার কোন বিকল্পও নেই। কাল তাকে যদি আরেকটি খাদিজা হতে হয়? সেই ভয় অবশ্যই তার আছে। তাই আত্মরক্ষার তাগীদে হলেও বিচারের দাবীতে তাদের মাঠে নামতে হচ্ছে। তবে এটা স্পষ্ট যে, এতে তার কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ ছিলো না। সে এখানে সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বার্থেই ঝুকিটা নিয়েছিলো। সরকার মহোদয়ের কাছে দাবী শুধু এতটুকুই যে এই অন্যায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিটা একবার দিন। এরপর দেখুন তারা এসব ধৃষ্টতা প্রদর্শনের সাহস পুনরায় দেখাতে পারে কিনা!
জানিনা বর্তমান সময়ের করুণ বাস্তবতাকে অতিক্রম করে সরকার মহোদয়ের কানে তাদের এই বিচার চাওয়ার আর্তনাদ আদৌ পৌছবে কিনা। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ফজিলাতুন্নেসারা এই বাস্তবতার আদলেই এভাবে হুমকির স্বীকার হয়ে যাবেন। এবং বাকিরা তার থেকে মুখে কুলুপ এটে বসে থাকার সবক নিবেন। আজ যদি আপনার পরিবারে কারো সাথে এর চেয়েও মারাত্মক কিছু ঘটে, কিছু বলার আগে আপনি দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য হুমকীর কথা ভাববেন। আপনিও প্রতিবাদ করবেন না। ভাববেন যে বিপদ একটা এসেছে, সহ্য করে কাটিয়ে দেই। কথা বললে বিপদ আরো বাড়বে।
তো বেশ ধারাবাহিকতার সহিত অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস, ক্ষমতা অথবা এধরণের কোন প্রবণতা না থাকাটা এখন সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন সব কিছু দেখে নির্বাক তাকিয়ে থাকা ছাড়া তেমন বিশেষ কিছু হয়তো করারও নেই। তবে আমরা একটা কাজ করতে পারি। আমাদের সর্বোচ্চ ঘৃণাটুকু বরাদ্দ রাখতে পারি সেইসব নরপিশাচ ও তাদের মদতদানকারী সম্প্রদায়ের জন্য। যাতে সেই ঘৃণা থেকে এসব অন্যায়ের প্রতিরোধের কিছু পরিকল্পনা উঠে আসে। তাহলে হাদিসে বর্ণিত অন্যায়ের প্রতিবাদের সর্বশেষ ধাপটুকু অন্তত মেনে চলা হবে। "ওয়াজালিকা আজআফুল ইমান"। এতে হয়তো একটা সময় প্রতিবাদের প্রথম ধাপ "ফাবিয়াদিহ" এর উপর আমল করার তৌফিকও আল্লাহ দিয়ে দিবেন।
No comments:
Post a Comment