Friday, March 23, 2018

যেমন ছিল ওমর রা. এর যুগে মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা

মিসর বিজয়ের পর মুসলামদের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম শুরু হয় খেলাফতে ইসলামীর প্রথম রাজধানী ফুসতাত নগরী থেকে। মূলত আলেকজান্দ্রিয়া বিজয়ের পরই মিসরে রোমানদের পতন ঘটে। এবং  আমর ইবনুল আস রা. এর একটা ইচ্ছা ছিল বন্দর নগরী আলেকজান্দ্রিয়াকে রাজধানী বানানোর। সে অনুমতি চেয়ে তিনি ওমর রা. কে পত্রও লিখেছিলেন। কিন্তু ওমর র. যখন জানতে পারলেন আলেকজান্দ্রিয়ায় অবস্থান করলে আরবের সাথে মিসরের রাজধানীর ব্যবধানটা হবে জলপথের মাধ্যমে তখন তিনি আর সে অনুমতি দিলেন না। কারণ আরবরা জলপথে যুদ্ধ করে অভ্যস্থ ছিলনা।

খলিফার নির্দেশনা অনুযায়ী আমর ইবনুল আস রা. আলেকজান্দ্রিয়া বিজয়ের পর ফুসতাত নগরীতে ফিরে এলেন। 
ফুসতাত হচ্ছে সেই জায়গা মিসর অভিযানে এসে যেখানে সাহাবায়ে কেরাম প্রথম তাবু স্থাপন করেছিল। আরবিতে তাবুকে ফুসতাতও বলা হয়। পরে এই জায়গার নামই হয়ে যায় ফুসতাত।

ফিরে এসে সর্বপ্রথম তিনি ফুসতাত নগরীতে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দিলেন। এবং এই মসজিদকে কেন্দ্র করেই তিনি ইসলামী আদর্শে রাষ্ট্র গঠনের রূপরেখা তৈরী করলেন। 
বেশ গুরুত্বের সাথে মসজিদটি নির্মাণ করা হল। কেবলা নির্ধারণের দায়িত্বে ছিলেন ৮০ জন সাহাবী। তাদের মধ্যে যুবায়ের ইবনুল আউওয়াম, আবু দারদা, উবাদা ইবনে সামেত, আবু যর গিফারী রা. বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এই মসজিদকে কেন্দ্র করে হযরত আমর রা. রাষ্ট্রের দুটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
১ শিক্ষাকেন্দ্র
২ বিচারালয়

ইসলামের প্রথম যুগে মিসরের বিচার বিভাগের সার্বিক কাজ এই মসজিদ থেকেই পরিচালনা করা হত। সে আদালতের বিচারক ছিলেন রাসুলুল্লাহ সা. এর সম্মানিত সাহাবায়েকেরামগণ।

পাশাপাশি তিনি প্রথম দ্বীনী শিক্ষাব্যবস্থাও গড়ে তোলেন এই মসজিদকে কেন্দ্র করেই।
দেশ বিজয়ের পর কেন আমর রা এর কাছে দ্বীনী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন গুরুত্ব পেল সেটা বুঝতে হলে দুটি প্রেক্ষিত জানা জরুরী।
১ যেহেতু শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে মিসর রোমানদের যুগে থেকেই বেশ অগ্রগামী ছিল তাই এই ক্ষেত্রে তার মোকাবেলায় শক্তিশালী ইলমী ভিত রচনা তখন সময়ের দাবী ছিল। তাছাড়া রোমানদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে থাকা মিসরীরা মুসলমানদের আচার-সভ্যতার প্রতি শুরু থেকেই আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল।
২ বিজয়ের পর আরবের মুসলমানদের উল্লেখযোগ্য একটি জনসংখ্যা মিসরে চলে আসে। এতে মুসলমানদের জন্যেও স্বতন্ত্র একটি শিক্ষাব্যবস্থা ও সংস্কৃতির ধারা চালু করার প্রয়োজন দেখা দেয়।
পদক্ষেপটি এই দুই প্রেক্ষিতে কতটা সাফল্য পেয়েছে সেটা ইতিহাসই বলে দিয়েছে।

মিসরের ভাষা তখন আরবি ছিল না। এবং এই পদক্ষেপের ফলে জোর করে মিসরীদের উপর আরবি চাপিয়েও দিতে হয়নি। আরবদের সংস্পর্শে এসে যে মুগ্ধতা তৈরী হয়েছিল তাতেই তারা ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুনকে সাদরে গ্রহণ করতে শুরু করেছে।
ইতিহাসের এই অধ্যায়ে এসে আরব মুসলিমদের উপর প্রাচ্যবিদরা ক্ষোভ ঝাড়ার জন্য দৃশ্য বেশ হাস্যকর। তারা মুসলমানদের এই সভ্যতার বিনির্মাণকে “সাংস্কৃতিক আগ্রাসন” বলে চালিয়ে দেওয়ার হীন প্রচেষ্টা করে থাকে। কারণ আমর রা. এর এই উদ্যোগে মুসলমানরা এতটাই ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছিল যা আজও দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। মাত্র এক শতাব্দি পর এসে এক চতুর্থাংশ খৃষ্টান মিশরীরা মুসলমান হয়ে যায় এবং সমস্ত মিসরীরা সাচ্ছন্দে আরবি ভাষাকে তাদের জাতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। এবং সেই ভাষা ও ধর্মের সাথে যেই আত্মিক বন্ধন তাদের তৈরী হয়েছে আজও তার দৃঢ়তা চোখে পড়ার মত।

হযরত আমর ইবনুল আস রা এর এই মাদরাসার শিক্ষক সকলেই ছিলেন রাসুলের সম্মানিত সাহাবীগণ। সে সময় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাদিসে নববীর ইলম অন্বেষণে বহু মানুষের সমাগম ঘটতো।
পাঠদানের বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল কুরআন ও তাফসির, হাদিস ও হাদিসের রেওয়ায়াত। এবং এই মাদরাসার মুহতামিম বা মুদির ছিলেন প্রসিদ্ধ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা। তিনি কুরআন হাদিসের বিস্তর জ্ঞান লাভের পাশাপাশি তাওরাতের উপরও বেশ পান্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সা. থেকে বহু হাদিসের বর্ণনাকারী এই সাহাবী হাদিস চর্চায় সেখানে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন একেবারে মৃত্যু পর্যন্ত। তার কবরটি আজও সেই মসজিদের পাশেই রয়েছে।

পরবর্তীকালেও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিশ্বের বুকে অন্যতম বৃহৎ দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল জামেউ আমর ইবনুল আসের প্রাঙ্গণ।

ইমাম আল্লামা ইবনে সায়েগ হানাফীর কথা থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। উনি বলেছেনঃ আমি সাতশত উনপঞ্চাশ হিজরীর পূর্বে এই মসজিদে ইলম সাধনার অবস্থা দেখেছি। রাতের বেলায় এখানে আঠারো হাজার প্রদিপ জালানো হত। যেই কাজে প্রত্যহ ১১ কিনতার তেল ব্যয় হত।

এবং শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করা ছাড়াও সূচনালগ্ন থেকেই যেহেতু বিচার ব্যবস্থার মূলকেন্দ্র হিসেবে খলিফারা এই মসজিদকে বিবেচনা করতেন তাই একই সাথে মুসলিম সুলতান ও আলেম ওলামাদের এই মসজিদের সাথে সবসময়ই গভীর একটা সম্পর্ক ছিল।
আমর ইবনুল আস রা. এর তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদ মিসরের মুসলিম সভ্যতা নির্মাণে কতটুকু অবদান রেখেছে সে নিয়ে আল্লামা সুয়ুতি রহ. তার কিতাব “হুসনুল মুহাদারা”তে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

আবুল হাসান আলী নদভী যখন ১৯৫০ সালে মধ্যপ্রাচ্যে এসেছিলেন তখন এই মসজিদে নামাজ আদায় করে বলেছিলেন “নামাজে রুহানী এক ধরণের স্বাদ অনুভূত হল। মনে হল এমন এক আকর্ষণ অনুভব করেছি যা অন্য কোন মসজিদে হয়নি”।

মসজিদটি তখন একেবারেই সাদাসিধে ধরণের ছিল। এবং কিছুটা অবহেলিত দেখে আলী মিয়া নদভী বেশ কষ্ট পেয়েছিলেন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মালিক ফারুক জুমাতুল বিদা আদায় করতেন বলে ব্যবস্থাপনা কমিটি এর কিছু যত্ন নিত। আজ সত্তর বছর পরে এসেও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। পুরাতন মিসরে এর অবস্থান হওয়ার কারণে মসজিদের বাইরের পরিবেশ এখনো বেশ অবহেলিত। তবে ভেতরে ঢুকে নামাজ পড়ার পর এখনো ইবাদাতের যে প্রশান্তি অনুভূত হয় সেটা সত্যিই ভাষায় বর্ণনা করার মত নয়।

-আশরাফ মাহদি
শিক্ষার্থী - আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়

Friday, March 16, 2018

মুসলমানদের মিসর বিজয় ও নববী আদর্শের কিছু শিক্ষা

হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর যুগে মিসর ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থার অধীনে আসে। এর আগ পর্যন্ত মিসরে রোমান শাসকদের রাজত্ব ছিল। রোমানদের পূর্বে শাসক ছিল টলেমীয় আলেকজান্ডারগণ। তাদের আগে ছিল পারসিক এথনীয়গণ। তাদের আগে গ্রীক শাসকগণ। এবং তাদেরও আগে শাসন করেছে ফেরাউনরা। প্রায় পাচ হাজার বছর ধরে ইতিহাসের সব ক্ষমতাধর মহানায়কেরা নিজেদের সভ্যতা কায়েম করেছে মিসরের মাটিতে। এবং সেকালের বহু নিদর্শন মিসর এখনো ধারণ করে রেখেছে। হাজার হাজার বছরের সেসব ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে থাকতে পেরেছে বলেই আজও মিসর এক রহস্যময় আকর্ষণ নিয়ে টিকে আছে।

ফেরাউনদের যুগেরও প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পর মিসরে মুসলমানদের আগমণ ঘটে। বিশ্বের দুই পরাশক্তি রোম-পারস্যকে কুপোকাত করে মিসর অভিযানে এসেছিল আমর ইবনুল আসের বাহিনী। সে সময় মুসলমানদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ঠিক কতখানি বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং প্রাচ্যবিদদের ভাষায় বলতে গেলে, "পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য সব দেশ বিজয় করে মুসলমানরা কতটা "হিংস্র" হয়ে উঠেছিল" সেসব বুঝার জন্য  মুসলমানদের মিসর বিজয়ের প্রেক্ষাপট জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সময় তখন ৬৬১ খৃষ্টাব্দ। হযরত ওমর রা. এর খেলাফতকাল। তিনি সিরিয়া বিজয়ের পর সেনাপ্রধান আমর ইবনুল আস রা. কে ৩৫০০ সৈন্য বাহিনীসহ মিসর অভিযানে পাঠান। মুসলমানরা তখন মিসরে প্রবেশ করেছিল সিনাই অঞ্চল দিয়ে। যেটি একালে এসেও মিসরের সীমান্তের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল বলে বিবেচিত হয়।

সেনাপ্রধান আমর ইবনুল আস রা. আলেকজান্দ্রিয়া থেকে কিছু দূরে সর্বপ্রথম তাবু স্থাপন করে সেনানিবাস তৈরী করললেন। তাবুর সেই নগরীকে ফুসতাত বলা হত।
আলেকজান্দ্রিয়া তখন প্রায় ১৫০০ বছরের পুরোনো রাজধানী।

ওদিকে মুসলমান সৈন্যদের আগমনের খবর পেয়ে আলেকজান্দ্রিয়ার শাসক মুকাওকাস দুইজন গণ্যমান্য ক্যাথলিক নেতাদের পাঠান হযরত আমর রা. এর সাথে সাক্ষাত করতে। এরপর আমর রা. তাদের সাথে যেই আচরণ করলেন তা ছিল জীহাদের পূর্বে প্রতিপক্ষকে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার সুযোগ উন্মোচন করার নববী আদর্শের নমুনা। কারণেই প্রথমেই হেদায়েতে দাওয়াত ও তা গ্রহণ না করলে কর প্রদান করে সন্ধিচুক্তি প্রস্তাবনার নির্দেশ জীহাদের অভিযানে পাঠানোর পূর্বে রাসুলুল্লাহ সা. সাহাবীদের করেছেন বলে বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ আছে।

আমর রা. প্রথমে পাদ্রিদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। বেশ নম্রতার সাথে দাওয়াত দেওয়ার পর তাদের নিকট দুইটি প্রস্তাব রাখলেন:

১ যে ব্যক্তি আমাদের দাওয়াতকে গ্রহণ করবে সে আমাদের মধ্যে একজন বলেই গণ্য হবে।
২ আর যে ব্যক্তি দাওয়াতকে গ্রহণ করবেনা আমরা তার প্রতি কর প্রদানের প্রস্তাব পেশ করবো। এবং তার প্রতিরক্ষা দায়িত্ব গ্রহণ করবো।

ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তাদেরকে তিনদিন সময় দেওয়া হল। এবং পাদ্রিরা আরো একদিন বাড়িয়ে, মোট চারদিন সময় চেয়ে নিয়ে ফিরে গেল।

পাদ্রিদের মুখ থেকে সবকিছু শুনে মুকাওকাস সকলকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার হুকুম দিল। কিন্তু যখন তারা ভেবেচিন্তে দেখলো মুসলমানদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে পেরে ওঠার কোন সম্ভবনাই নেই তখন তারা জনগণকে চোরাগোপ্তা হামলার প্রতি উৎসাহিত করতে লাগলো।  তবে জনগণ ততক্ষণে বাস্তবতা উপলব্ধি করে ফেলেছে। তারা মুকাওকাসের হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে জানিয়ে দিল "যে বাহিনী সবেমাত্র বিশ্বের দুই পরাশক্তি পারস্য(ইরান) এর কিসরা ও রোমের কায়সারকে হারিয়ে মিসর বিজয়ের অভিযানে এসেছে তাদের সাথে যুদ্ধে যাওয়াটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। আমরা সন্ধিচুক্তি করতে চাই"।
এরপরও রাজা মুকাওকাসের একনিষ্ঠ কিছু অন্ধ অনুসারী তখন মুসলমানদের উপর হামলা করার দুঃসাহস দেখাতে গিয়ে সদলবলে করুণভাবে নিহত হয়েছিল।

চতুর্থ দিন কথা অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কাউকে আসতে না দেখে মুসলমানরা যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে আইনে শামস কুয়াটি ঘেরাও করে। আইন শামস হল সেই অঞ্চল যাকে এখন মানুষ কায়রো বলে চেনে। তবে কায়রো নগরী তখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মুসলমানরা কেবলমাত্র কুয়া ঘেরাও করার পরই আইনে শামসের রাজা এর ভয়াবহতা টের পেয়ে যায়। সাথে সাথে সে আমর ইবনুল আস রা. এর দরবারে এসে সন্ধি চুক্তি করে ফেলে। এবং তাদের দেখাদেখি আলেকজান্দ্রিয়ার রাজা মুকাওকাসও সন্ধিচুক্তি করে ফেলে। তবে অনেক ইতিহাসবিদরা বলেছেন আলেকজান্দ্রিয়া বিজয় করতে আমর রা. কে সংক্ষিপ্ত একটি যুদ্ধের অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছিল। এছাড়া পুরো মিসরই বিনাযুদ্ধে সন্ধিচুক্তি মেনে নিয়েছিল।

আমর ইবনুল আস রা: তখন  সন্ধিনামায় লিখেছিলেন:
"এই হচ্ছে মিসরবাসির প্রতি আমরের নিরাপত্তানামা। তাদের কোন ধর্মীয় স্থাপনায় হস্তক্ষেপ করা হবেনা। ধর্মীয় এবং নাগরিক কোন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেনা। এই সন্ধিনামায় যারা একাত্মতা প্রকাশ করবে তারা কর আদায় করবে।"

এভাবেই উভয় ধর্মের লোকদের ধর্মীয় সহাবস্থান মেনে নেওয়ার মাধ্যমে সেই যুগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সূচনা হয়েছিল তা মিসরে আজও বহাল আছে। জনসংখ্যার পঁচাশি ভাগ মুসলমান হলেও পনেরো ভাগ খৃষ্টানদের সাথে তাদের অসাম্প্রদায়িক আচরণের কোন নজির নেই।

মুসলমানদের এ ধরণের বিজয় প্রমাণ করে শত্রুর ভেতরে আল্লাহ তায়ালা সে যুগে মুসলমানদের কি পরিমাণ প্রভাব সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। কিসরা কায়সারের সাম্রাজ্য ধুলিস্যাত করে মুসলমানদের যে প্রতাপ তৈরী হয়ে গিয়েছিল এতে মুসলমানরা পারতো কোন সুযোগ না দিয়ে সরাসরি যুদ্ধ লিপ্ত হতে। কিন্তু নববী আদর্শ থেকে তারা সেই সময়ও একচুল এদিক সেদিক নড়েননি। প্রথমে হেদায়েতের দাওয়াত দিয়েছেন। দাওয়াত গ্রহণ করতে না চাইলে নিজ ধর্মে বহাল থেকেও শুধু মাত্র কর আদায় করে সন্ধি চুক্তির সুযোগ প্রদান করেছেন। তারা চাইলেই পারতেন এই মিসরবাসীকে তখনই তরবারির জোর দেখিয়ে মুসলমান বানিয়ে ফেলতে। অথবা কালিমা না পড়ার অপরাধে জবাই করে কতল করে ফেলতে।
কিন্তু তারা তো এসবের কোনটাই করেন নি। কোন ধরণের রক্তপাত ছাড়াই কেবলমাত্র সন্ধিচুক্তির মাধ্যমে একটি দেশকে ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থার ছায়াতলে তারা নিয়ে এসেছিলেন। মুসলমানদের দেড় হাজার বছর পুরোনো একটি দেশ বিজয়ের ঘটনা আজকের প্রেক্ষাপটেও আমাদের জন্য কতটা শিক্ষণীয় হয়ে আছে।

-আশরাফ মাহদি
শিক্ষার্থী - আলআযহার ইউনিভারসিটি

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...