Thursday, December 10, 2015

বড় চাচ্চু চাচীর বাংলাদেশ সফর- ২০১৫

বড় চাচ্চু বহুদিন পর আসলেন ইউকে থেকে। তিনি একজন শান্তিপ্রিয় ও শান্তিকামী মানুষ। রাজনৈতিক কোন দল সমর্থন করেন না। আর কোন্দলও করেন না। যেটা করেন সেটা হচ্ছে বড় দায়িত্বের সাথে সব দলের সমালোচনা। হয়তো সেটা অত্যাধিক দেশপ্রেম থেকেই করেন। কারন তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাই বাংলাদেশ নিয়ে নাকি স্বপ্ন তাকে দেখতেই হয়। 

চাচ্চু ফেসবুক প্রজন্ম না, তবে ভাবসাবে মনেহচ্ছে, অনেকদিন পর আজকে শুরুটা ফেসবুক বন্ধ ও বাকস্বাধিনতা হরনের নিন্দা দিয়েই করবেন। কারণ চাচী এয়ারপোর্টে নেমেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন "হাউ এম আই গনা লিভ উইদাউট ফেইসবুক!!!" তাছাড়া চাচ্চুও এয়ারপোর্টের অব্যবস্থাপনা ও কর্মকর্তাদের দায়ত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ডে এরইমধ্যে বেশ ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন সরকারের উপর। 

কিন্তু একি!!! বাংলাদেশের এতসুন্দর পিচঢালা রাস্তা নাকি তাকে মুগ্ধ করে ফেলেছে। ফ্লাইওভার গুলো করাটা এ সরকারের বড় সফলতা। কোন ট্রাফিক নেই। হাউ অরগ্যানাইজড!!! এত্তো সুন্দর করে সাজানো ক্রিস্টমাস ট্রি নাকি লন্ডনের রাস্তায়ও দেখা যায়না।

চাচীর এসবে কিছু আসছে যাচ্ছেনা। ফেসবুক বন্ধের নিন্দা তার শুনতেই হবে। আমি তখনো জানি না যে, সব খুলে দেয়ার যেই প্রতিশ্রুতি তারানারা দিয়েছিলেন, সব কিছু খুলে দিয়ে সে প্রতিশ্রুতি ইতিমধ্যেই তারা রক্ষা করে ফেলেছেন। তাই আমি চাচীকে খুশি করার জন্য কিছুক্ষন ফেসবুক বন্ধের অপকারীতা বয়ানসহ সরকারের ফ্যাসিবাদি আচরনের তীব্র নিন্দাজ্ঞাপন করলাম। কারন চকলেটস তো সব চাচীর কাছেই। তাই তাকে খুশি করাটা জরুরী। 

এরপর বাসায় এসে আরেকটা খুশির খবর দিলাম "চাচীইইই! ইউ ডোন্ট হ্যাভ টু ডাই, ফেইসবুক খুইল্লা দিসে, এখন আপনি লাগেজ খুলতেই পারেন, আর চকলেটস বের করতেই পারেন 



পরদিন...


-এত্তো চকলেট!!! সব আমার জন্য!!! 
- এই দুই বক্স স্পেশালি ফর ইউ এন্ড ইউর ফ্রেন্ডস.. বাকি সবারটা পরে দিবো.. ইউ ওয়ানা শেয়ার ইউথ ইউর ফ্রেন্ডস সো আমি আগেই তোমারটা রেডি করে রাখসি...
- থ্যাঙ্কুউউউ চাচী..   

চকলেট বক্স হাতে পাওয়ার পর থেকাই স্মৃতিশক্তি কেমন জানি দুর্বল হয়া যাইতেসে.. আমার ফ্রেন্ডস জানি কারা ছিল??
সবাইরেই এখন অনেক আপন মনে হইতেসে.. একদম ভাই বোনের মতন আপন.. বন্ধু ছাড়া লাইফ তো পসিবল.. কিন্তু চকলেট ছাড়া লাইফ ..... কেমনে পসিবল???

Friday, November 20, 2015

একদা বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ হয়েছিল

আমি সেবার ফ্রান্সে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফ্রান্সের অলিগলি থেকে শুরু করে মহাসড়ক কোনটাই আমার দেখার ভাগ্য হয়নি। কারণ ভিপিএন বলেছিল শুধুমাত্র সে আমাকে সেইখানে বসবাসকারী হিসেবে তাঁর ঠিকানা ধারণ করতে দেবে। তাও শুধু সেই সুবিধাটুকুই গ্রহণ করতে পেরেছিলাম।

তখনকার দেয়া একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস... 

দুইদিন কত্তো আরামসে চালাইলাম, ভিপিএন টিপিএন কিচ্ছুই লাগলো না, আজকে সকালে তাহারা টের পাইলো যে আমি দেশে বইসা দেশদ্রোহী কার্যকলাপ সম্পাদন করিয়া যাইতেছি। বাধা এলো, বিপত্তি এল, বাধ্য হয়ে আশ্রয় চাইলাম ভিপিএনের কাছে। কিন্তু হায় হায়, উনি দেখি আমারে একই সাথে ফ্রান্স আর প্যারিসে পাঠায় দিছেন। 
যাক সমস্যা নাই, আমি কিন্তু পুরাই নিউট্রাল, প্যারিস হামলার পক্ষে বিপক্ষে আমি কোন স্ট্যাটাস দেই নাই, বাইচ্চা গেছি ..

Monday, November 16, 2015

যার যা খুশি লিখতেই পারে, তবে যদি নোংরা হয় অন্যের নিউজফিড...

কোন এক কবি একটু আগে বলছিলেন, হৃদয় নাকি এখন বুক থেকে ফেসবুকে এসে গেছে। তাই বেগ আর আবেগ দুইটাই এখন ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণে। বুক বলতে তো কিছুই নাই, যাহা আছে সবই ফেস। এবং এই ফেস যখন যেই এক্সপ্রেশান দিবে, কোন রকম চিন্তা ভাবনা ছাড়া সেটাই আপনি উগ্রে দিবেন অন্যের নিউজফিডে। কখনো কমেন্টবক্সে আর কখনো ইনবক্সে। কারণ আপনি ফ্রীডম অফ স্পিচে বিশ্বাস করেন। এতে কার কতটুকু মান গেল বা জাত গেল তা দেখে আপনার কাজ নেই। 

পরিক্ষা শেষে এক কাজে এলিফ্যান্ট রোড যাচ্ছি, রিকসায় ফেসবুকিং চলছে। হঠাৎ একটা পোস্টে চোখ আটকে গেল : "মাওলানা হাসান জামিল সাহেব বিদায় নিচ্ছেন ফেসবুক থেকে"...
হাসান জামিল সাহেবকে আমি প্রথম চিনেছি ইউটিউব থেকে। উনার আলোচনাগুলা ভাল লাগে, প্রায়ই শোনা হয়। তাই এই বিদায়ী পোস্টটা ভাল লাগলো না। উনার মত একজন ব্যক্তির বিদায়টা মোটেও কোন সুসংবাদ না। এদিক দিয়েই যখন যাচ্ছি, ভাবলাম একবার দেখাটা করেই যাই।

বিদায়ের কারণটা উনি স্ট্যাটাসে কিছুটা উল্লেখ করেছেন, তবে সরাসরি শুনে বুঝতে পারলাম কস্টটা একটু বেশীই পেয়েছেন। আমি উনাকে একটু এলিটিজমে বিশ্বাস করার পরামর্শ দিলাম। ফ্রেন্ডলিস্টে প্রবেশ ও পোস্টে কমেন্টাধিকার সংরক্ষিত বাকি সবাইকে ফলোয়ারের কাতারে রাখা যেতে পারে। তবে এতে উনার আপত্তি ছিল কারণ উনি কখনোই এভাবে অন্যের মতপ্রকাশের স্বাধিনতায় হস্তক্ষেপের পক্ষে ছিলেন না। হয়তো তার খেসারতই এখন দিতে হচ্ছে।

বৃদ্ধ বণিতার সংখ্যা সে হারে টের না পাওয়া গেলেও আবালরা কিন্তু নিয়মিতই ভার্চুয়ালি তাদের অস্তিত্বের জানান দিয়ে যাচ্ছে। এবং আশংকাজনক হারে এ সংখ্যা বেড়ে চলছে। ইদানিং বুদ্ধিজীবি হয়ে ওঠার যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে এটা যে কোন দিকে মোড় নিবে এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। হ্যা, সচেতনতা অবশ্যই দরকার, বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চা, চিন্তার চর্চা সবই প্রয়োজন। কিন্তু সেটা অবশ্যই নিয়ম মেনে। একজন একটা অপিনিয়ান দিলো, এটা আপনার ভাল না লাগাটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু তাকে আক্রমণ করে "আমারটাই সঠিক" বুঝানোটা খুবই অস্বাভাবিক। আর তাতেই বিপত্তিটা বাধে যখন কেউ ভাবে যে, আমি বুঝি আর না বুঝি এখানে একটা পন্ডিতি দেখিয়ে যে কোন মুল্যে নিজকে বুদ্ধিজীবি আকারে হাজির করতেই হবে। কার সাথে কথা বলছি বা কার স্ট্যাটাসে কমেন্ট করছি এ নিয়ে মাথা ঘামাতে গেলে তো আমার আর বুদ্ধিজীবি হয়ে ওঠা হবে না। 
তাই না!!!

Saturday, November 7, 2015

সাইকেল হারালো, দুঃখের অনুভূতি টের পেলাম একমাস পর

অনেকদিন পর টাইমলাইনের খুব পেছনে যাইতে মন চাইলো। আগের আমিটারে খুজতে। তখন আমার একটা সাইকেল ছিল। প্রথম তারে পায়া আমি সুইটহার্ট ডাকসিলাম। স্ট্যাটাস দিসিলাম। তার জন্য আমার মায়া ছিল।

একদিন সে বুঝলো মায়াগুলা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই সে না বইলা চইলা গেলো। তারে হারায়া আমার একটুও কষ্ট লাগলোনা সেদিন। নিজেরে হারানোর বয়েস তখনো একদিন হয়নাই। তাই হয়তো। আমার আর তার বিচ্ছেদের বয়স গতরাতে একমাস পূর্ণ হইলো। ভালো থাকিস ...

Thursday, October 15, 2015

অনুমতিবিহীন ঘুরাঘুরি এরপর ধরা খাওয়ার ভয়ে থাকার সেইসবদিন

ওয়েটিং ফর আব্বুর বকা। অন্নেক দিন পর আব্বু আজকে এমন সিরিয়াসভাবে রাগলেন। 
বিকেল থেকেই খোজ দ্যা সার্চ চলছিল। এমনটা হবার কথা ছিল না। অনাকাঙ্খিতভাবে রিপোর্টটা আব্বুর কানে পৌছেই যতসব বিপত্তি বেধেছে।

আজকের কাহিনী হয়তো কিছুটা ভিন্ন। তবে ছুটির সময়ও আব্বু আমাকে ঘুরতে যাওয়ার অনুমতিটা একদম দিতে পারেন না। একবার আব্বুর সাথে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আমি এর কারণটা কিছুটা বুঝেছিলাম। 
গত বছরের কথা, ডাক্তার আব্বুকে আমার বয়স জিজ্ঞেস করেছিল। আব্বু সতেরো বলেছিলেন। অথচ আমার বয়স তখন একুশ ছিল। তাই ভাবছি, বকা খেয়ে অভ্যস্ত হতে হবে। তা না হলে প্রতিবাদী হওয়া যাবে না। আর আব্বুর এই মনোভাবের প্রতিবাদ না করতে পারলে কপালে বিয়া নাই। 

সারাদিন নিখোজ থেকে রাতে বাসায় আসলাম। আম্মুর কথায় বুঝলাম আব্বুর রাগের মাত্রাটা অন্যদিনের চাইতে বেশী। রাতের খাবার দেয়া হয়েছে। বাধ্যগত সন্তানের মত একেবারে আব্বুর পাশে গিয়ে খেতে বসলাম। পরিস্থিতি হালকা করার জন্য কিছু বলার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু নিষ্ঠুর শব্দগুলা ভয়ে আমারে একা রাইখাই পালাইছে। খাওয়া শেষ। আব্বু এখনো কিছু বলেননাই। ভয় বাড়ছে। মনে হচ্ছে আজকের বকাটা আনুষ্ঠানিকভাবে হবে। খাওয়ার পর আব্বু ছোট বোনকে দিয়ে আমাকে ডাকাবেন। এবং আব্বু তার রুমে বিচারকের আসন গ্রহণ করে বসে থাকবেন। তখন আমি অপরাধীর মত মাথা নিচু করে ঢুকবো। ইশ!!! কি ভয়ঙ্কর!!!

অনেকে যারা আব্বুর রাগ সম্পর্কে কিছুটা জানে তারা আমার এইসব দুঃসাহসী কর্মকান্ড দেখে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে " ভাই! তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরাটাই কি কলিজা?একটুও ভয় পাওনা হুজুররে?"
প্রশ্নকারী ভাই ও বন্ধুগন, ঠিক এ মুহুর্তে আপনাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।



পরদিন...


আব্বু আজকে একাই বাজারে গিয়েছেন। আমাকে নেন নাই। এবার রাগের ধরনটা কেমন জানি। আব্বু হয়তো বুঝে গেছেন যে চুপ করে থাকাটাই বেশী কার্যকর। একবার বকা দিয়ে দিলে তো সব শেষই হয়ে গেল। 

বাজার নিয়ে বাসায় ঢুকবেন, এমন সময় গেটে একটা হুজুর এসে গার্ডকে জিজ্ঞেস করলো:
- মাহদি কি এই বাসায় থাকে?
গার্ড আব্বুকে দেখিয়ে দিয়ে দিলো। 
- আসসালামুয়ালাইকুম.. হুজুর, টাঙ্গাইলে আমার একটা মাদরাসা আছে। গতবছর আপনাদের গ্রামের মাহফিলে গিয়েছিলাম। সেখানে আপনার ছেলের বয়ানটা খুব ভাল লেগেছিলো। তখন থেকেই আমার ইচ্ছা যে এই বছর আমার মাদরাসার মাহফিলে ছেলেটাকে দাওয়াত দিবো। 
- আচ্ছা, কিন্তু ওর তো সামনের মাসে পরিক্ষা। সফরের প্রথম সপ্তাহে। পরিক্ষা হলে তো যেতে পারবেনা। 
- সমস্যা নাই হুজুর, আমাদের মাহফিল আগামী মাসের ২৭ তারিখে। পরিক্ষার হয়তো ততদিনে শেষ হয়ে যাবে। 
- আচ্ছা বাসায় চলেন। কথা বলেন দেখেন ওর সাথে।

আব্বু বাসায় ঢুকে আমাকে যেভাবে আদর করে ডাকটা দিলেন, সেই ডাকেই আমি অনুমান করে নিলাম যে বাসায় ঢুকার আগের কনভারসেশনটা এরকমই ছিল। বিষয় সেটা না। বিষয় হইলো এই ঘটনায় আব্বুর রাগটা পানির মত মাটি হয়ে গেছে। আজকে দুপুরে খেতে বসে আমার আর কথা খুজতে হয়নাই। আব্বুই কিভাবে বয়ান রেডি করতে হবে সেই বয়ান দিয়ে যাচ্ছিলেন। "বুঝছো! পরিক্ষার পড়া আগে। আর হাদিসের কিতাব ঠিক মত পড়লে বয়ান এমনেই রেডি হয়া যাবে।"
আমি আবারো সেই বাধ্যগত ছেলের মত:
"জি আব্বু"

ধন্যবাদ, কালকে যারা আমারে বিভিন্ন অজিফা শিখায় দিছিলেন। সেই অজিফার বরকতেই হয়তো আল্লাহ টাইম মতন হুজুরটারে পাঠায় দিছেন।



সেইদিন রাতে...

এক ঘটনায় এতকিছু হয়া যাবে ভাবিনাই। কালকে আম্মুর কাছে নাকি আব্বু বলছিলো, ও যেই পাগলামী শুরু করছে, দাওরা শেষ করার সাথে সাথে বিয়া করায় দিতে হবে। ভেবে পুলোকিত হলাম যে আব্বু আমার ব্যাপারে ভাবতে শুরু করেছেন।

সে থেকে একখানা খবর দুনিয়াতে প্রসিদ্ধ হইয়াছে, আমি নাকি শীঘ্রই বিবাহের কার্য সম্পাদন করতে যাচ্ছি। আমিও চাই, খবর খানা জলদি সত্য হয়ে উঠুক। আর এই রাতের বেলায় তো চাওয়াগুলা তীব্র আকার ধারন করতেই পারে।







 

Thursday, September 24, 2015

কুরবানীর গরু- ২০১৫


কুরবানীর গরু- ২০১৫


বাসায় ঢুকার সাথে সাথে ছোট বোনের ঝাড়ি "কালো গরু কেন কিনলা? ও বুঝছি, তোমার তো আবার কালো পছন্দ। এবার তুমি হাটে গেছ তো তাই গরুও এবার কালো হয়া গেছে তাইনা???"

গত দুই বছর হাটে যাইনাই এটা ওর কেমনে মনে আছে ভাইবা অবাক হইলাম।

এইবার একটা অভিজ্ঞতা হইলো।
জিবনে আপনি সবচেয়ে বেশী প্রশ্নের মুখোমুখী কখন হবেন জানেন? যখন আপনি হাট থেকে কুরবানীর গরুটা কিনে ফেলবেন এবং সাথে নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিবেন। প্রশ্ন এবং উত্তর উভয়টাই আপনার জানা থাকবে। এবং প্রথমে কিছুক্ষন আপনি বেশ আগ্রহের সাথেই উত্তর দিয়ে যেতে থাকবেন। কিছুক্ষন পর যখন গরুর হাটের হাটু পানিতে আপনার পা ডুবিয়ে হাটা শুরু  করতে হবে আর গোবরমাখা কাদায় টাখনুতক ডেবে যাবে তখন মনে মনে কইবেন " এই কাদাগুলা দিয়া গরুর পিঠে দামখানা লেইখা দিলেই পারতাম।"

এরপর যখন সুদুর কুস্টিয়া থেকে আগত এই গ্রাম্যগরুগুলা হাট থেকে প্রথমবারের মত ঢাকা শহরের রাস্তায় বের হবে এবং গাড়ির হর্ন আর লাইট দেখে কখনো এদিক সেদিক দৌড় দিবে আবার কখনো তার মাথার হর্নখানি দিয়ে আপনাকে গুতা দিতে ছুটে আসবে আর সুপার মার্কেটের সামনে এমন জ্যাম লেগে থাকবে যা নিয়ন্ত্রণে কোন ট্রাফিক নেই, তখন এসির ভেতর থেকে গাড়ির গ্লাস নামিয়ে মানুষ আপনার কাছে আবার সেই প্রশ্নটা করবে, "ভাই কত নিলো?"

 এখন তাদের প্রশ্ন আপনার কাছে অবান্তর মনে হবে বিধায় আপনি কান পর্যন্ত পৌছানোর অথবা এর উত্তর দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন না । কারন এখন আপনি গাড়ি থামানো আর পাগলা গরু সামলানোর মত দুই মহৎ কাজে ব্যস্ত।

ছবিতে ডানপাশের গরুটা একটু বেশিই ডানপিটে। একবার রাখাল সহ উল্টা দিকে দৌড় দিয়েছিলো। বেশি পাগলা। বামেরটা আমি টাইনা আনছি। এটা কিঞ্চিত শান্ত।রাস্তায় মাত্র তিনাবার ক্ষেপছিলো। দুইবার তো গুতা দিয়াই দিসিলো। চান্স দেই নাই। সাথে সাথে নাকের রশি ধইরা ফেলছিলাম। অবশেষে হার মানতে বাধ্য হইসে। ইম্প্রেসিভ ব্যাপার হইলো এক রাতে সে তাঁর পাগলামী ভুইলা পোষও মাইনা গেছে। এখন আমারে দেখলেই আদর নিতে মাথা বাড়ায় দেয়। এটার চোখটা অন্নেক কিউট। ছবিতে বুঝা যাইতেসে না।

আসলে হাটে গিয়ে এই ভীড়ের মাঝে গরু কেনা এবং সাথে হেটে বাসায় নিয়ে আসা এই কস্টগুলা না করলে মনে হয় কুরবানীর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্লেভার মিস করে ফেললাম।


তো এরপর এলো ঈদের দিন

নাও হুজুর ইজ সো রেডি ফর কুপাকুপি, সবে চারটা "গোহত্যা" করে ছুরি ধার দিতে গ্যারেজে ঢুকেছেন, বাহির থেকে আবার ডাক, "মাহাদি কই মাহাদি!!! ভাতিজা একটু এইদিকে, আমারটা ফালায় দিছে" পুরো এলাকাই এখন আমিময় ... স্ট্যাটাস দাওয়ার টাইমই নাই .. তাও Jawad একটা ছবি তুইলা ফেললো অজান্তেই .. তাই আপলোডায় দিলাম... (তখন যে চাপা মারছিলাম এটা আজকে দুই বছর পরও মনে আছে। আসলে ছবিটা অজান্তে তুলেনাই) 

Sunday, August 30, 2015

নাজিব মাহফুজঃ কথোপকথন

নোবেল বিজয়টা আমাকে এমন একটা লাইফস্টাইল উপহার দিলো, যেটা আমি আসলে চাইনি —নাজিব মাহফুজ


নাজিব মাহফুজের আজকে মৃত্যুদিন। তার মৃত্যু নিয়ে আসেল কোন হা-হুতাশ নাই। সুদীর্ঘ এক জীবন পার করেই তিনি বিগত হইছেন। আজকে যেহেতু তিরিশে আগস্ট, সো, আমরা তাকে তাকে স্মরণ করলাম। নোবেল বিজয় নাজিব মাহফুজের জীবনের মূল ঘটনাই বলতে হবে। তিনি একজন আরব, তথা ইজিপশিয়ান- আরব সাহিত্যিক হিসেবে তিনিই প্রথম নোবেল এওয়ার্ড পেয়েছেন। এটা খুব বড় ঘটনা। এটা খুব স্বস্তির খবর। নাজিব মাহফুজ মারা গেছেন দুই হাজার ছয়ে। জীবিতকালে তার এই ইন্টারভিউটা নিয়েছিলেন মোহাম্মদ সালমাভী। খুবই সংক্ষিপ্ত। ইন্টারভিউটা অনুবাদ করেছেন আশরাফ মাহদী। 


সাহিত্যে নোবেল পেতে যাচ্ছেন খবরটা শোনার পর আপনার কেমন লেগেছিল?
এটা অবশ্যই অবাক করা এবং ভালো লাগার মত একটি খবর ছিল। এ সম্মান আমার ভাগ্যে জুটবে, এ আশা কখনো করিনি। আমাদের সময় এনাটোল ফ্রেঞ্চ, বার্নার্ড শ, আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ে, উইলিয়াম ফকনারের মত উঁচুমানের লেখকরা নোবেল পেত। তাদের মধ্যে জেন পল সার্ট্রি আর আলবার্ট ক্যামাসও ছিল। সে সময় লোকে বলে বেড়াতো যে, একদিন কোন এক আরব সাহিত্যিকও এই নোবেল প্রাইজ জিতে দেখাবে। কিন্তু আমার কখনোই মনে হত না যে, এমন কিছু ঘটবে। বা এটাও সম্ভব।
কিন্তু আপনার নোবেল জেতার প্রায় বিশ বছর আগে তো আব্বাস মাহমুদ আল আক্কাদ আপনাকে মনোনীত করেছিলেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন যে, আপনাকে এই নোবেল প্রাইজের যোগ্য মনে করেন।
আল আক্কাদ সবসময় তার চিন্তার ব্যাপারে খুব সাহসী ছিলেন। মন্তব্য করার সময় লোকে কি বলবে তা খুব কমই ভাবতেন।
নোবেল প্রাইজ পাওয়াটা কোন দিক থেকে আপনাকে প্রভাবিত করল? জীবনে অথবা পরবর্তী সাহিত্য রচনায় কোন রকম রূপান্তর ঘটিয়ে দিল? 
হ্যা, এটা আমাকে ধারাবাহিক লিখে যাওয়ার সাহস জুগিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমি এই এওয়ার্ডটা আমার রাইটিং ক্যারিয়ারের অনেক পরে এসে পেয়েছি। এরপর প্রকাশিত হওয়া ‘একোস অব এন অটোবায়োগ্রাফি’ এখন পর্যন্ত একমাত্র বই। আপাতত ‘ড্রিমস অফ রিকিউপারেশন’ লিখছি। এমনকি ‘কশতুমুর’ উপন্যাসটি, যা কিনা আল আহরাম পত্রিকা ধারাবাহিকভাবে ছেপেছিল, সেটাও ছিল নোবেল প্রাইজে পাওয়ার আগে। পরবর্তীতে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে নোবেল বিজয়টা আমাকে এমন একটা লাইফস্টাইল উপহার দিলো, যেটা আমি আসলে চাইনি। এইসব ইন্টারভিউ, মিডিয়ায় উপস্থিতির বাড়তি ঝামেলা, এগুলোতে আমি অভ্যস্ত নই। আমি চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে নিজের কাজ করে যেতে।

কিভাবে একজন লেখক হয়ে উঠলেন? অনুপ্রেরণার উৎসটা কি? 
স্কুলে থাকতেই লেখালেখি করতাম। তখন খাতায় লেখতাম। আল মানফালুতি, ত্বাহা হোসেন ও আল আক্কাদের মত সমসাময়িক ও নতুন ধারার আরব সাহিত্যিকরা আমার বেশ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। তারাই মূলত লেখালেখির নেশাটা প্রচণ্ডভাবে আমার ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে মাধ্যমিকে পড়ার সময় আমি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সাহিত্য বিভাগে চলে আসি।
নোবেল পাওয়ার আগ পর্যন্ত আপনার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটা কি ছিল?
মাধ্যমিকে সাহিত্য বিভাগে আসার ঘটনাটা গুরুতপূর্ণ ছিল। তাছাড়া ১৯৯৪-তে আমার উপর হওয়া হামলাটাকে ছোটখাটো কোন ঘটনা বলা যায় না। এক যুবক আমার গলায় ছুরি চালানোর চেষ্টা করেছিল। এ-হামলার পর দীর্ঘসময় পর্যন্ত আমার ডানহাত প্যারালাইজড ছিল। তবে এ দুর্ঘটনার পর দেশ ও মানুষ যেভাবে আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছে সেটা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছে।
নোবেল পাওয়ার আগে আপনার কাজগুলো আরবি সাহিত্যে কেমন প্রভাব ফেলত?
এর উত্তরটা সমালোচকদের উপর ছেড়ে দেয়া উচিত বলে মনে করছি। তারাই ভালো বলতে পারবে আমার লেখা আরবি সাহিত্যে কোন প্রভাব ফেলেছে কিনা। তবে নোবেল পাওয়ার পর একটা ইতিবাচক ব্যাপার লক্ষ্য করেছি। আরবি সাহিত্যের উপর করা কাজগুলো এখন অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। একজন রাশিয়ান ভিজিটর এরকমই বলছিল আমাকে। তারা ফ্র্যাঙ্কফার্ট আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজন করছে। সেখানে আমাকেও নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আজ/এসআর/৩০২

Sunday, July 12, 2015

ঈদ ও ঢাকার ভিক্ষুক

ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকার রাস্তায় ভিক্ষুকদের দাপট যে কতটা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায় সেটা বুঝতে হলে দুই মিনিট ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকলেই চলে। তারা এসেই সজোরে গাড়ির গ্লাস নক করা শুরু করবে। আর ভিক্ষা না দিলে ইসাকি স্টাইলে একটা ভেচকি মেরে গালিগালাজ করতে করতে বিদায় হবে। আজব!!! এগুলা ভিক্ষুক নাকি চাদাবাজ? ভাবখানা এমন যেন ভিক্ষা না দিয়ে আমরা তাদের নৈতিক অধিকার খর্ব করছি এবং আমাদের এই অপরাধকর্মের (!) প্রতিবাদ হিসেবেই যেন তাদের এই অদ্ভুতরকম বাজে আচরণ সহ্য করতে হচ্ছে।
অবশ্য সহানুভূতি অর্জনের চেস্টাও তারা কম করে না। এসব স্ট্রিট ফকিরদের কখনোই হাত অথবা পা পুরোপুরি সহিহ সালেম থাকেনা। বিকলাঙ্গ সাজার এই আইডিয়াটা বেশ পুরোনো হলেও প্রত্যেক ঈদে আইডিয়া নবায়ন হয়। যদিও অনেকের অঙ্গ ভ্যানিস করার কাচা কস্টিউম খালি চোখেই ধরা যায়। আর এই ফেক ব্যপারটা অনেকের কাছে স্পস্ট হওয়ায়  সহানুভূতি অর্জনে এখন অনেকটাই অক্ষম আমাদের "ভিক্ষুকসমাজ"। তাই হয়তো তাদের এভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা...

Monday, June 15, 2015

শাহী মসজিদ ও আড্ডাময় রাত

গতরাতের আড্ডাটাকে একরকম সিরিয়াস আলোচনা বলা চলে। এবং একপর্যায়ে তা রূপ নিয়েছে তুমুল বিতর্কে। তাই আজকে পোস্টানোর  মত ভাল একটা সেলফি খিচার টাইমটাও পাইনাই। রাজশাহীর ফরমালিনমুক্ত এবং রসযুক্ত আম খাওয়ার পরও গতরাতের আড্ডায় রসকষের যথেষ্ট অভাব ছিল। যদিও শুরুতে ফ্রয়েড নিয়ে বেশ হাস্যরস্য হয়েছে। পরে সবাই নিজের ভেতরে একটা আর্টিফিশিয়াল সিরিয়াসনেস নিয়ে আসে। সবই আর্ট কালচারের প্রভাব।এরপর মজার ব্যপার বলতে শুধু তুহিনের গনতন্ত্রের  ব্যাখ্যায় জিবনানন্দদাশকে টেনে আনার ব্যপারটাই ছিল। যদিও জিবনানন্দ জিবনে ফরমালিনযুক্ত আম খায় নাই। :p
শুরুটা নেসার ভাই করেছেন। প্রশ্ন তুলে দিয়ে তিনি উধাও। চুপচাপ কেবল শুনেই যাচ্ছিলেন। শেষরাতে যখন দেখলেন যে কোন সুরাহা হচ্ছে না, তখন একটা পক্ষ নিয়ে সমাধানে যাওয়ার একটা বৃথা চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু ততক্ষণে দুপক্ষের অবস্থান খুবই এক্সট্রিম পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে।
ইসলাম আর গনতন্ত্রের উপর আস্ত একটা রাত পার হল। একদিক থেকে বিষয়টা কয়েকরাত আলোচনার। তবে গনতন্ত্রের বিরোধে গিয়ে একটা জায়গায় আলোচনা আর সামনে বাড়েনি। শুধু অবস্থানই শক্ত হচ্ছিল। কেউ ছাড়বার পাত্র না।
একদিকে তুহিন, জুবায়ের ভাই আর সাদের মত প্রগতিশীল এবং আর্ট কালচারে বিশ্বাসী ব্যক্তিত্ববর্গ অন্যদিকে বিশিষ্ট তাত্ত্বিক ও দার্শনিক ইফতেখার ও চৈন্তিক নেসার ভাইয়ের সাথে আমার মত অসহায় অবলা মাহদি। আর কবি মোঃ তালহা ভাই তো রাতভর শুধু গভীর পর্যবেক্ষণই চালিয়ে গেলেন। কবিতাও প্রস্তুত। এখন শুধু প্রকাশের অপেক্ষায় ...

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...