Wednesday, September 21, 2016

শ্যামলবাংলা রিসোর্ট ও আমাদের একদিন

যাওয়ার কথা ছিল মনপুরা, যাওয়া হলো শ্যামল বাংলা। মনপুরার সেই বিশেষ ট্যুরটা নস্যাৎ করার দায় যাদের উপর চাপানোর কথা তারা আগেভাগেই সাইকেল নিয়ে সুদূর চাটগাঁও পাড়ি জমিয়েছেন। আর এ নিয়ে তাদের কোনরকমের দোষারোপের সুযোগ যাতে না পাওয়া যায় সেজন্য তাদের একজন জানিয়েও দিয়েছেন যে তারা খুব টাফ পিরিয়ড পার করছেন। Shakil ভাই অবশ্য তাদের সেই অজুহাতীয় পোষ্টে সর্বকালের সেরা সান্তনাটাই দিয়েছেন। "প্রথম প্রথম তো... ঠিক হয়ে যাবে..."  এত জিনিয়াস কেমনে ব্রো!

এখন কথা হচ্ছে, তাদের অতসব অজুহাত শোনার মত পর্যাপ্ত সময় আমাদের হাতে নাই। অতএব এই "হুটহাট ট্যুর"এর আয়োজন আমাদের করতে হয়েছে। তবে ট্যুরের এই যুগোপযোগী নামকরণটা Jubayer ভাই নিজে করে থাকলেও সকাল সাতটার আগ পর্যন্ত নাকি তিনি নিজেই নিশ্চিত ছিলেন না যে ট্যুরটা হচ্ছে। এটা তথ্যটা Abdullah ভাইয়ের মুখে শুনে তাকে কিছু একটা বলবো ভাবছিলাম। কিন্তু রোহিতপুরের সেই সর্বকালের সেরা খিচুড়ির সন্ধানে নিয়ে গিয়ে জুবায়ের ভাই সেই বলার সুযোগটা আর বাকি রাখলেন না। আপনেও সো জিনিয়াস ভাই! 

নাস্তা সেরে সেখান থেকে "আট মিনিটে" কেরানীগঞ্জ ইকোপার্ক। নতুন একটা রিসোর্ট হয়েছে। জায়গাটা পরিসরে কিছুটা ছোট হলেও সময় কাটানোর জন্য খুব একটা মন্দ না। সুইমিংপুলের পানিতে আধো আধো সাতারের চেষ্টায় শরীর ব্যাথা করার মধ্যে একটা উপভোগ্য ব্যাপার ছিল। আরো নানান বিষয় ছিল যে কারণে এই রিসোর্টটাকেও জিনিয়াস বলা যায়। 

ওয়াটএভার, আই এম সো থ্যাংকফুল টু অল দিজ গুড পিপল যাদের সাথে যাওয়ার কারণে আজকের মিনি ট্যুরটা অসাধারণ হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, এত এত গেট টুগেদার আর আড্ডার ফলে আমাদের ফ্রেন্ডশীপটা এতটাই গভীর হয়েছে যে আমরা নিজেরাও ভুলে যাই যে আমাদের পরিচয়ের শুরুটা ছিলো কেবলই একটা সোসাল নেটওয়ার্কের থ্রুতে। বেশ রিফ্রেশিং কিছু ট্যুর অথবা দীর্ঘ সময় ধরে জমিয়ে আড্ডা দেয়ার পর যখন এটা মনে পড়ে, খুব অবাকই লাগে। আর তখন ছোট্ট করে একটা থ্যাংকস দেই ফেসবুককে। আবার দ্যাট মোমেন্ট যখন দিনশেষে ফেরার পথে Abu Bakar ভাই কোন বড় হুজুরের কাছে এই বলে ধরা খায় যে "হুজুর! আমরা ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত" তখন আবার ঠিকই তারে আচ্ছা মতন ধোলাই দেই সবাই মিলে। Rashidul ভাই! ইজন্ট দ্যাট হিপোক্রেসি! তবে ভাই, আর যাই বলেন, সারাদিনের সেই হাই প্রোফাইল ম্যানার কিন্তু আপনে ডিনার টেবিলে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২২০ টাকার জন্য এক মিনিট নিরবতা



Sunday, September 11, 2016

পশু কুরবানী ও মানবতাবাদ

কুরবানীকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের এই "নির্মম তরিকায় পশুহত্যা"র মাঝে যেসব প্রজাতির অতিদরদী মানবরা মানবতা বা সামাজিকতা খুজে পাননা তাদের থেকে আমরা প্রায়ই বেশ আপত্তিকর কিছু প্রশ্ন শুনে থাকি। অবান্তর সেসব প্রশ্নের জবাবে আরিফ আজাদ ভাই তার সময়োপযোগী এই গল্পটা নিজ ব্লগে পোষ্ট দিলেন। লিংক দেয়ার জন্য লিংকদাতাকে অশেষ ধন্যবাদ। ওর্থ শেয়ারিং মনে হলো তাই লেখার শেষ অংশটুকু শেয়ার করলাম।

"আমরা রসুলপুরে পৌঁছাই ভোর সাড়ে চার'টে তে। তখন কিছু কিছু জায়গায় ফজরের আজান পড়ছে।যেখানে নেমেছি, সেখান থেকে বেশকিছু পথ হাঁটতে হবে।
খানিকটা হেঁটে একটা মাটির ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালাম। বুঝতে পারলাম, এটা মসজিদ।ভেতরে একটি কুপি বাতি মিটমিট করে জ্বলছে।
ব্যাগপত্র রেখে দু'জনে ওজূ করে নিলাম। মসজিদে মানুষও আমরা তিনজন। আজব! তিন সংখ্যাটা দেখি একদম পিঁছু ছাড়ছেনা।লঞ্চেও ছিলাম তিনজন। মসজিদে এসেও দেখি আমরা তিনজন।
নামাজ শেষ হয়েছে একটু আগে। আমরা বসে আছি মসজিদের বারান্দায়।আরেকটু আলো ফুঁটলে বেরিয়ে পড়বো। ঈমাম সাহেব আমাদের পাশে বসে কোরআন তিলাওয়াত করছেন। মাঝারি বয়স। দাঁড়িতে মেহেদি লাগিয়েছেন বলে দাঁড়িগুলো লালচে দেখাচ্ছে। উনি সূরা আর রহমান তিলাওয়াত করছেন। 'ফাবি আইয়্যি আলা-য়্যি রাব্বিকুমা তুকাযযিবান' অংশটিতে এসে খুব সুন্দর করে টান দিচ্ছেন। পরান জুড়ানিয়া।
আর রাহমান তিলাওয়াত করে উনি কোরআন শরীফ বন্ধ করলেন। বন্ধ করে কোরআন শরীফে দুটি চুমু খেলেন।এরপর সেটাকে একবার কপালে আর একবার বুকে লাগিয়ে একটি কাপড় দিয়ে পেঁছিয়ে একটা কাঠের তাকে তুলে রাখলেন।
আমরা লোকটার দিকে তাকিয়ে আছি। লোকটা আমাদের দিকে ফিরে বললেন,- "আমনেরা কি শহর হইতে আইছেন?"
সাজিদ বললো,- 'জ্বি।'
-"আমনেরা কি লেহাপড়া করেন?"
সাজিদ আবার বললো,- 'জ্বি।'
-"মাশাল্লাহ মাশাল্লাহ। আমনেরা শহরে পইড়্যাও বিগড়াইয়া যান নাই। শুকুর আলহামদুলিল্লাহ।"
লোকটার কথা আমি ঠিক বুঝিনি। সাজিদ বুঝেছে। সে জিজ্ঞেস করলো,- 'চাচা, শহরে পড়াশুনা করলে বিগড়িয়ে যায়, আপনাকে কে বললো?'
লোকটা হঠাৎ গম্ভীরমুখ করে বললেন,- 'হেইয়া আবার কেডায় কইবে বাপ! মোর ঘরেই তো জন্মাইছে একখান সাক্ষাৎ ইবলিশ।'
- 'কি রকম?'- সাজিদের প্রশ্ন।
- 'মোর এক্কুয়াই পোলা। পড়ালেহা করতে পাডাইল্যাম ঢাকার শহরে। হেইনে যাইয়া কি যে পড়ালেহা করসে! এহন কয়, আল্লা-বিল্লা কইয়া বোলে কিস্যু নাই। এই যে, এহন তো বাড়ি আইছে। আইয়া কইতেয়াছে কি বোঝঝেন, কয় বোলে কোরবানি দিয়া মোরা ধর্মের নামে পশুহত্যা হরি। এইগুলা বোলে ধর্মের নাম ভাইঙ্গা খাওনের ধান্দা হরি মোরা। কিরপিক্যা যে এইডারে ঢাকায় পড়তে পাডাইল্যাম বাপ! হালুডি হরাইলে আইজ এই দিন দেহা লাগতে না!"
লোকটার সব কথা আমি বুঝতে পারিনি। তবে, এইটুকু বুঝেছি যে, লোকটার ছেলে ঢাকায় পড়ালেখা করতে এসে নাস্তিক হয়ে গেছে।
সাজিদ বললো,- 'আপনার ছেলে এখন বাড়িতে আছে?'
- 'হ'
সাজিদ আমার দিকে ফিরে বললো, - 'দেখেছিস, মেঘনার এতো বড় বুকেও কিন্তু নাস্তিকদের বসবাস আছে। হা হা হা।'
সিদ্ধান্ত হলো ছেলেটার সাথে দেখা করে যাবো।
সকাল ন'টায় ছেলেটার সাথে আমাদের দেখা হলো।বয়সে আমাদের চেয়ে ছোট হবে। জিজ্ঞেস করে জানলাম, ছেলেটা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিষয় নিয়ে পড়ছে। ফাষ্ট ইয়ারে। নাম- মোঃ রফিক।
সাজিদ রফিক নামের ছেলেটার কাছে জিজ্ঞেস করলো,- 'কোরবানি নিয়ে তোমার প্রশ্ন কি?'
ছেলেটা বললো,- 'এইটা একটা কু-প্রথা। এভাবে পশু হত্যা করে উৎসব করার কোন মানে হয়?'
সাজিদ বললো,- 'তুমি কি বিজ্ঞান সম্পর্কে কিছু জানো?'
ছেলেটি চোখ বড় বড় করে বললো,- 'আপনি কি আমাকে বিজ্ঞান শিখাচ্ছেন নাকি? ইণ্টারমিডিয়েট লেভেল পর্যন্ত আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম।'
সাজিদ বললো,- 'তা বেশ। খাদ্যশৃঙখল সম্পর্কে নিশ্চই জানো?'
- 'জানি। জানবো না কেনো?'
- 'খাদ্যশৃঙখল হলো, প্রকৃতিতে উদ্ভিদ আর প্রাণীর মধ্যকার একটি খাদ্যজাল। যেসব উদ্ভিদ সূর্যের আলো ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করে নেয়, তাদের বলা হয় উৎপাদক। এই উৎপাদককে বা সবুজ উদ্ভিদকে যারা খায়, তারা হচ্ছে প্রথম শ্রেণীর খাদক.......'
ছেলেটা বললো,- 'মশাই, এসব আমি জানি। আপনার আসল কথা বলুন।'
ছেলেটার কথার মধ্যে কোনরকম আঞ্চলিকতার টান নেই।তাই বুঝতে অসুবিধে হচ্ছেনা।
পাশ থেকে ছেলেটার বাবা বলে উঠলেন,- 'এ, হেরা বয়সে কোলং তোর চাইয়া বড় অইবে! মান-ইজ্জত দিয়া কথা কইতে পারোনা?'
ছেলেটা তার বাবার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। সে দৃষ্টিতে পড়াশুনা জানা ছেলের মূর্খ বাবার প্রতি অবজ্ঞার ছাপ স্পষ্ট।
সাজিদ বললো,- 'বেশ। তোমাদের গরু আছে?'
- 'আছে।'
- কয়টা?'
ছেলেটার বাবা বললেন,- 'হ বাপ, মোগো গরু আছে পাঁচখান। দুইডা গাই, এক্কুয়া ষাঁড় গরু। লগে আবার বাছুরও আছে দুইডা!
- 'আচ্ছা রফিক, ধরো- তোমাদের যে দুটি গাভি আছে, তারা এইবছর দুটি করে বাচ্চা দিলো। তাহলে তোমাদের মোট গরুর সংখ্যা হবে ৯ টি।ধরো, তোমরা পশু হত্যায় বিশ্বাসী নও।তাই, তোমরা গরুগুলো বিক্রিও করো না। কারন, তোমরা জানো, বিক্রি হলেই গরুগুলো কোথাও না কোথাও  কোরবানি হবেই।ধরো, এরপরের বছর গরুগুলো আরো দুটি করে বাচ্চা দিলো।মোট গরু তখন ১৩ টি। এরপরের বছর দেখা গেলো, বাচুরগুলোর মধ্য থেকে দুটি গাভি হয়ে উঠলো, যারা বাচ্চা দিবে।এখন মোট গাভির সংখ্যা ৪ টি। ধরো, ৪ টি গাভিই এরপরের বছর আরো দুটি করে বাচ্চা দিলো।তাহলে, সে বছর তোমাদের মোট গরুর সংখ্যা কতো দাঁড়ালো?'
ছেলেটির বাবা আঙুলে হিসাব কষে বললেন,- 'হ, ১৯টা অইবে!'
সাজিদ বললো,- 'বলোতো রফিক, ১৯ টা গরু রাখার মতো জায়গা তোমাদের আছে কিনা? ১৯ টা গরুকে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য, পর্যাপ্ত ভূষি, খৈল, ঘাস আছে কিনা তোমাদের?'
- 'না'- ছেলেটা বললো।
- 'তাহলে, আল্টিমেইটলি তোমাদের কিছু গরু বিক্রি করে দিতে হবে। এদের যারা কিনবে তারা তো গরু কিনে গুদামে ভরবে না, তাই না? তারা গরুগুলোকে জবাই করে মাংশ বিক্রি করবে। গরুর মাংশ আমিষের চাহিদা পূরণ করবে,আর চামড়াগুলো শিল্পের কাজে লাগবে, তাই না?'
- 'হুম'
- 'এটা হলো প্রকৃতির ব্যালেন্স। তাহলে,প্রকৃতির ব্যালেন্স ঠিক রাখার জন্য পশুগুলোকে জবাই করতেই হচ্ছে।সেটা এমনি হোক, অথবা কোরবানে।'
ছেলেটা বললো,- 'সেটা নিয়ে তো আপত্তি নেই।আপত্তি হচ্ছে, এটাকে ঘিরে উৎসব হবে কেনো?'
সাজিদ বললো,- 'বেশ! উৎসব বলতে তুমি হয়তো মিন করছো, যেখানে নাচ-গান হয়, ফূর্তি হয়, আড্ডা,ড্রিংকস হয়। মিছিল হয়, শোভাযাত্রা হয়, তাই না? কিন্তু দেখো, মুসলমানদের এই উৎসব সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে নাচ-গান নেই,আড্ডা-মাস্তি নেই।ড্রিংক'স নেই, মিছিল-শোভাযাত্রা নেই।আছে ত্যাগ আর তাকওয়ার পরীক্ষা।আছে, অসহায়দের মুখে হাসি ফোটানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা-তদবির।সমাজ থেকে শ্রেণী বৈষম্য দূর করে, ধনী-গরীব সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়। এরকম উৎসবে সম্ভবত কার্ল মার্ক্সেরও দ্বিমত থাকার কথা না। কার্ল মার্ক্স কে চিনো?'
ছেলেটা এরপর কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলো।তারপর বললো,- 'আরজ আলি মাতুব্বরকে চিনেন আপনি?'
সাজিদ বললো,- 'হ্যাঁ, চিনি তো।'
- 'কোরবানি নিয়ে উনার কিছু যৌক্তিক প্রশ্ন আছে।'
- 'কি প্রশ্ন, বলো?'
ছেলেটা প্রথম প্রশ্নটি বললো। সেটি ছিলো-
'আল্লাহ ইব্রাহীমের কাছে তার সবচাইতে প্রিয় বস্তুর উৎসর্গের আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু, ইব্রাহীমের কাছে সবচাইতে প্রিয় বস্তু তার ছেলে ইসমাঈল না হয়ে তার নিজ প্রান কেন হলো না?'
সাজিদ মুচকি হেসে বললো,- 'খুবই লজিক্যাল প্রশ্ন বটে।
আমি যদি আরজ আলি মাতুব্বরের সাক্ষাৎ পেতাম, তাহলে জিজ্ঞেস করতাম, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে, তাদের কাছে তাদের নিজের প্রাণের চেয়ে দেশটা কেনো বেশি প্রিয় হলো? কেন দেশ রক্ষার জন্য নিজেদের প্রাণটাকে মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিলো?
দুটো জিনিসই সেইম ব্যাপার। ইব্রাহিমের কাছে নিজের চেয়েও প্রিয় ছিলো পুত্রের প্রাণ, আর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে নিজের চেয়ে প্রিয় ছিলো নিজের মাতৃভূমি।
কিন্তু, পরীক্ষার ধরন ছিলো আলাদা। ইব্রাহিমকে বলা হলো, প্রিয় জিনিস কুরবানি করতে, আর মুক্তিযোদ্ধাদের বলা হলো- প্রিয় জিনিস রক্ষা করতে।কিন্তু, আমরা দেখতে পেলাম - দু দলের কারো কাছেই প্রিয় বস্তু নিজের প্রাণ নয়।
সুতরাং, আরজ আলি মাতুব্বরের মাতব্বরিটা এইখানে ভুল প্রমানিত হলো।'
ছেলেটা কাঁচুমাচু করে দ্বিতীয় প্রশ্ন করলো।
আরজ আলি মাতুব্বর বলেছেন,- 'আল্লাহ পরীক্ষাটা করেছেন ইব্রাহিমকে।ইব্রাহিমের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই পরীক্ষাটা কেন তার অনুসারীদের দিতে হবে?'
সাজিদ বললো,- 'এইটাও খুব ভালো প্রশ্ন। আমরা মুহাম্মদ সাঃ কে অনুসরন করি। তাহলে, আমরা কি বলতে পারি যে,- কই, আমাদের উপর তো জিব্রাঈল আঃ ওহী নিয়া কখনোই আসে নাই। তাহলে, মুহাম্মদের উপরে আসা ওহি আমরা কেনো মানতে যাবো? বলো, প্রশ্নটা কি আমরা করতে পারি?'
ছেলেটা চুপ করে আছে। সাজিদ বললো,- 'আরজ আলি মাতুব্বরের Leader & Leadership বিষয়ে আদতে কোন জ্ঞানই ছিলো না। তাই তিনি এইরকম প্রশ্ন করে নিজেকে সক্রেটিস বানাতে চেয়েছিলেন।'
ছেলেটা তার তৃতীয় প্রশ্ন করলো-
'আরজ আলি মাতুব্বর বলেছেন,- নবী ইব্রাহিমকে তো কেবল পুত্র ইসমাঈলকে কোরবানি করা সংক্রান্ত পরীক্ষায়ই দিতে হয়নি, অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হবার মতো কঠিন পরীক্ষাও তাকে দিতে হয়েছিলো। তাহলে, মুসলমানরা ইব্রাহিমের স্মৃতি ধরে রাখতে পশু কোরবানি করলেও, ইব্রাহিমের আরেকটি পরীক্ষা মতে- মুসলমানরা  নিজেদের অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে না কেনো?'
আরজ আলি মাতুব্বরের আগের প্রশ্নগুলো আমার কাছে শিশুসুলভ মনে হলেও, এই প্রশ্নটিকে অনেক ম্যাচিউর মনে হলো। আসলেই তো। দুইটাই ইব্রাহীম আঃ এর জন্য পরীক্ষা ছিলো। তাহলে, একটি পরীক্ষার স্মৃতি ধরে রাখতে আমরা যদি পশু কোরবানি করি, তাহলে নিজেদের অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করি না কেনো?
পদ্মা থেকে সাঁ সাঁ শব্দে বাতাস আসতে শুরু করেছে।
সাজিদ বললো,- 'রফিক, তার আগে তুমি আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দাও। তুমি কি শেখ মুজিবকে ভালোবাসো? তার আদর্শকে?'
ছেলেটা বললো,- 'অবশ্যই। তিনি না হলে তো বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকতো না। তিনি আমাদের জাতির পিতা।'
- 'তুমি ঠিক বলেছো। শেখ মুজিব না হলে বাংলাদেশ হয়তো কোনদিন স্বাধীনই হতো না। সে যাহোক, শেখ মুজিবকে জীবনে দুটি বড় ধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছিলো।
প্রথমে, একটা দেশকে স্বাধীন করার লড়াইয়ে সামনে থেকে নের্তৃত্ব দেওয়া।
দ্বিতীয়ত, স্বপরিবারে খুন হওয়া। আমি কি ঠিক বললাম রফিক?'
- 'হু'
- 'এখন, তুমি শেখ মুজিবের আদর্শ বুকে ধারন করো। তুমি ৭১ এর চেতনায় নিজেকে বলিয়ান ভাবো। তুমি ৭ ই মার্চে বিশাল মিছিলে যোগদান করো। ১৬ ই ডিসেম্বরে সভা-সমাবেশে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে শ্লোগান দাও। কিন্তু, ১৫- ই আগষ্টে রাস্তায় বেরিয়ে কোনদিন বলেছো- হে মেজর ডালিমের বংশধর, হে খন্দকার মোস্তাকের বংশধর, তোমরা কে কোথায় আছো, এসো- আমাকেও মুজিবের মতো স্বপরিবারে খুন করো', বলো কি?'
আমি সাজিদের কথা শুনে হো হো হো করে হাসা শুরু করলাম। ছেলেটার মুখ তখন একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। সাজিদ আবার বলতে শুরু করলো,- 'তুমি এটা বলো না।শেখ মুজিবের আদর্শ বুকে ধারন করে এরকম কেউই এটা বলেনা। যদি কেউ এরকম বলে, তাহলে তাকে মানুষে বলবে,- 'কি ব্যাপার? লোকটাকে কি ভাদ্র মাসের কুকুরে কামড়িয়েছে নাকি?'
সাজিদের কথা শুনে এবার রফিকের বাবাও হা হা হা করে হাসতে লাগলো। ছেলেকে পরাজিত হতে দেখে পৃথিবীর কোন বাবা এত খুশি হতে পারে, এই দৃশ্য না দেখলে বুঝতামই না।
আমরা রসুলপুরের পথে হাঁটা ধরলাম।পদ্মাপাড়ের জনবসতিগুলো দেখতে একেবারে ছবির মতো। নিজেকে তখন আমার হোসেন মিয়ার ময়না দ্বীপের বাসিন্দা মনে হচ্ছিলো। আর সাজিদ?  তাকে আপনারা আপাতত হোসেন মিয়া রূপেই ভাবতে পারেন।"

Tuesday, September 6, 2016

ইসলামের দৃষ্টিতে খারেজীদের বিধান

---মুরতাদের ব্যপারে সাহাবাদের ইজমাঃ
সন্দেহের ভিত্তিতে শরিয়তের কোন ফরজকে অস্বীকার করলে তাকে পুনরায় বিশ্বাস স্থাপনের আহ্বান জানানো হবে। যদি তারা লড়াইয়ে প্রস্তুত হয় তাহলে হুজ্জত পূর্ণ করার পর তাদের সাথে লড়াই করা হবে। আত্মসমর্পণ করলে তো ভাল অন্যথায় কাফেরদের সাথে যেই আচরণ করা হয় তাই করা হবে। অর্থাৎ হত্যা করেয়া হবে এবং তার ধন সম্পদ গনীমত বলে গন্য হবে। হত্যাটা হবে কুফুরের ভিত্তিতে।
দলিলঃ যারা ইসলামের মূলের উপর বহাল ছিল কিন্তু সন্দেহের কারণে যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করেছিল তাদের বিপক্ষে পরিপূর্ণ হুজ্জত আসার আগ পর্যন্ত তাদেরকে কাফের সাব্যস্ত করা হয়নি। [হাফেয ইবনে হাজার]

---আহলে কেবলা হওয়া সত্ত্বেও খারেজীরা কাফেরঃ
দলিলঃ ১- আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত, "ইয়াম্রুকুনা মিনাদ দিনী মুরুকাস সাহমী মিনার রমিয়্যাতি, ফাইয়ানযুরুর রামি ইলা সাহমিহি ফাইয়াতামারা ফিল ফুরকাতি হাল আলিকা বিহা মিনাদ দামি শাইউন" "নিক্ষেপকারী তীরটির আগাগোড়া সন্দেহের দৃষ্টিতে পরিক্ষা করে যে তাতে কি কিছু লেগে আছে কিনা। অর্থাৎ তাদের দ্বীন থেকে বের হওয়াটা সেই শিকারীর তীরের মত যা শিকারকে ভেদ তো করে গেছে কিন্তু তাতে কোন নিশানা নেই।
মুরুক শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, তারা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে কিন্তু নিজেরাও টের পাবেনা।
২- ইমাম বুখারী খাওয়ারেজ এবং মুলহিদের কতলের প্রবক্তা। যা বুঝা যায় ইমাম বুখারীর তরজমাতুল বাব কায়েমের ধরণ দেখে "বাবু কাতলিল খাওয়ারিজী অয়াল মুলহিদিন বা'দা ইকামাতিল হুজ্জাতি আলাইহিম"
৩- খারেজীরা প্রত্যেক সেই ব্যক্তিকে কাফের বলে থাকে যারা তাদের আকিদা বিশ্বাস বিরোধী। আর মুসলিম শরিফের হাদিস অনুযায়ী যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে কাফের বলে প্রকৃতপক্ষে যদি সে কাফের না হয়ে থাকে তাহলে বক্তা নিজেই কাফের হয়ে যায়।[কাজী আবু বকর ইবনুল আরাবী]
৪- উচু মর্যাদার সাহাবীদের কাফের বলাটা হুজুর সা কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। কেননা হুজুর নিজে তাদের জান্নাতি হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছেন। [আল্লামা সুবকি]
৫- হযরত আলীর রেওয়ায়েতে বুখারীর হাদিসে তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছেঃ আইনামা লাকিতুম ফাকতুলুহুম, ফাইন্না ফি কাতলিহিম আজরান লিমান কাতালাহুম ইউমাল কিয়ামাহ।
৬ কাফের হওয়ার জন্য ইসলাম ছেড়ে অন্য ধর্মে প্রবেশ করার ঘোষণা দেওয়া জরুরী না। বরং কুফুরী মতবাদ উক্তি ও আমল অবলম্বন করাই কাফের হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

প্রশ্নঃ খারেজীরা তো নিজেদের মুসলিম ভাবে। তাহলে কাফের কিভাবে বলা যায়?
উত্তরঃ হাদিসে এসেছে "ইয়াকুলুনাল হাক, ও্যা ইয়াকরউনাল কুরআন, ও্যা ইয়াম্রুকুনা মিনাল ইসলামি লা ইয়াতাআল্লাকু মিনহু বিশাইইন"
হক কথা বলতে থাকবে কুরআন পড়তে থাকবে কিন্তু ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে
এবং ইসলামের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবেনা।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, গাল মন্দ কটুক্তি ছাড়াও যেমন ইরতেদাদ পাওয়া যায় তেমনি ধর্ম পরিবর্তনের সংকল্প ছাড়াও কুফুরী পাওয়া যায়। যেমন ইবলিস রুবুবিয়াতের অস্বীকার করা ছাড়াই কাফের হয়েছে।

-- উদ্দেশ্যের বিপরীত কুরানের ব্যাখ্যা এবং হারামকে হালালকরণঃ
খারেজীরা মুসলমানদের জান মালকে হালাল মনে করে কুরানের কিছু আয়াতের উদ্দেশ্যের বিপরীত তাবীলের মাধ্যমে। [ইবনে তাবারী]
দলিলঃ ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়েত খারেজীরা মুহকাম আয়াতের উপর ইমান আনে কিন্তু মুতাশাবিহাতের ব্যাখ্যায় ধ্বংস হয়।

খারেজীদের কাফের না বলার ব্যাপারে মতঃ
ইলমুল কালামের আলেমদের মতে খারেজিরা ফাসেক। কারণ হচ্ছে তারা শুধু একটি বাতিল তাবীলের আশ্রয়ে নিজেদের বাদে সকল মুসলমানদের কাফের বলে থাকে।
কাফের না বলার কারণ হল তারা নিজেদের তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত বলে দাবী করে থাকে। কাফের না বলাটা জমহুরের ওলামারও মত। তবে গোমরাহির ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।
দলিলঃ হাদিসে "ইয়াতামারা" শব্দটি সন্দেহপূর্ণ। আর সন্দেহের দ্বারা কুফুর প্রমাণিত হয় না।

তবে হাফেজ ইবনে হাজার এ দলিলের জবাব দিয়েছেন। কেননা হাদিসের ভিন্ন রেওয়ায়েতে আরো দুইটি শব্দ পাওয়া যায়। যার দ্বারা ইয়াকীন পাওয়া যায়। "লাম ইউলাক মিনহু বিশাইইন" "কদ সাবাকাল  ফারসু ওয়াদ দামু"। এই তিন রেওয়ায়েতের সামঞ্জস্যবিধান হল, প্রথমে তীর নিক্ষেপকারী সন্দীহান থাকলেও পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয়ে গেছে যে তার তীর শিকার ভেদ করেছে। কিন্তু এত দ্রুত হয়েছে যে তার মধ্যে রক্তের নাম নিশানাও নেই।

ইমাম কুরতুবীঃ খারেজীদের কাফের হওয়ার বিষয়টি কাফের না হওয়ার বিষয়টি বেশি স্পষ্ট।

--খারেজীদের কাফের বলা না বলার মধ্যে পার্থক্যঃ
কাফের বললে তাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে।  কাফের না বললে যারা ইসলামী হুকুমতের বিরোধিতা করে যুদ্ধে নেমে পড়েছে তাদের সাথে রাষ্ট্রদোহী মুসলমানদের মত আচরণ করা হবে। অর্থাৎ যারা মারা গেল তো মারাই গেল আর যারা বেচে যাবে তাদেরকে বিদ্রোহ করার শাস্তি দেওয়া হবে। শাস্তি প্রদানের ভার শাসকের উপর ন্যস্ত হবে। তিনি চাইলে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।

--খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করা বেশী জরূরীঃ
হেকমত হচ্ছে, খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য হলো ইসলামের মুল পুজি অর্থাৎ দ্বীনকে হেফাজত করা। আর কাফের মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ানো ও অমুসলিমদের সংখ্যা কমানো। কাফেরদের সাথে যুদ্ধে মুনাফা ও উপকারীতা অর্জন হয়। আর এটা স্পষ্ট যে মুনাফা হেফাজত থেকে মূলপুজির হেফাজত গুরুত্বপূর্ণ। আর খারেজীরা ইহুদী নাসারাদের চেয়েই বেশী ক্ষতিকর ইসলামের জন্য।

--খারেজীদের তাবীলে সমস্যাঃ
ইনিল হুকমু ইল্লা লিল্লাহ এই আয়াতের বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা হযরত আলীর হুকুমকে অমান্য করেছিল। কারণ তিনি একজন হাকাম মেনে নিয়েছিলেন। [এই বক্তব্যের তাহকীক লাগবে] অথচ নিয়ম হল বাহ্যিক অর্থ যদি ইজমায়ের পরিপন্থি হয় তাহলে তাবীল করা লাগবে।

--খারেজীদের ব্যাপারে হুকুমঃ
হাদিস দ্বারা তাদের সাথে যুদ্ধের অনুমতি প্রমাণিত হয়। হযরত আলি রা বলেন, যদি তারা ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বিদ্রোহ ঘোষণা করে তাহলে তাদের সাথে যুদ্ধ করো। আর যদি জালেম বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বিদ্রোহ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো না।
ইবন্র হজার আসকালানী বলেন, কারবালার ময়দানে ইয়াজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হাররাতে উকবা ইবনে মুসলিমের বাহিনীর বিরুদ্ধে মদিনাবাসীর যুদ্ধ, মক্কাতে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়েরের যুদ্ধ এই প্রকারের মধ্যেই শামিল।

--খারেজীদের ব্যাপারে ইমাম গাজ্জালিঃ
খারেজীদের হুকুমের ব্যাপারে দুইটি সুরত। এক- মুরতাদের হুকুম লাগানো হবে। দুই- রাষ্ট্রদোহী মুসলমান আখ্যায়িত করা হবে।
খারেজীদের মধ্যে দুটি দল আছে। একদল হল, যারা ইসলামী শাসকদের সাথে বিদ্রোহ করে এবং লোকদের নিজেদের বাতিল আকিদা মানতে বাধ্য করে। এ দলটি নিশ্চিত কাফের। দ্বিতীয় দল হচ্ছে, যারা নিজেদের আকিদা মানতে বাধ্য করে না। শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল করার জন্য ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এদের উদ্দেশ্য যদি  জালেমের জুলুম থেকে মুক্ত করা আর দীনকে হেফাজত করা তাহলে তারা আহলে হক। আর যদি জোশের বশবর্তী হয়ে বিদ্রোহ আর যুদ্ধ করে চাই তাদের মধ্যে কোন গোমরাহী পাওয়া যাক বা না যাক তারা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহী

--খারেজীদের ব্যাপারে মুসান্নেফ কাশ্মিরী রহ-
যারা খারেজীদের কাফের বলার পক্ষে নয় তারাই আবার "কাফের" আর "কাফের নয়" দুইভাগে ভাগ করলেন। ইবনে হাজার নিজেও কাফের আখ্যায়িত করার পক্ষে না, তবুও তিনি কাফের আখ্যায়িত না করার দলিলসমূহের জবাব দিয়েছেন। মুসান্নেফের ফায়সালা হল, যে ব্যক্তি কোন মুতাওয়াতের বিষয়কে অস্বীকার করবে তাকে কাফের বলা যাবে। ইয়াম্রুকুনা শব্দে যদিও সন্দেহ থেকে থাকে কিন্তু ইবনে মাজার হাদিস দ্বারা কাফের হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। "কদ কানা হা-উলা-ই মুসলিমিনা ফাসারা কুফফারান। 

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...