---মুরতাদের ব্যপারে সাহাবাদের ইজমাঃ
সন্দেহের ভিত্তিতে শরিয়তের কোন ফরজকে অস্বীকার করলে তাকে পুনরায় বিশ্বাস স্থাপনের আহ্বান জানানো হবে। যদি তারা লড়াইয়ে প্রস্তুত হয় তাহলে হুজ্জত পূর্ণ করার পর তাদের সাথে লড়াই করা হবে। আত্মসমর্পণ করলে তো ভাল অন্যথায় কাফেরদের সাথে যেই আচরণ করা হয় তাই করা হবে। অর্থাৎ হত্যা করেয়া হবে এবং তার ধন সম্পদ গনীমত বলে গন্য হবে। হত্যাটা হবে কুফুরের ভিত্তিতে।
দলিলঃ যারা ইসলামের মূলের উপর বহাল ছিল কিন্তু সন্দেহের কারণে যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করেছিল তাদের বিপক্ষে পরিপূর্ণ হুজ্জত আসার আগ পর্যন্ত তাদেরকে কাফের সাব্যস্ত করা হয়নি। [হাফেয ইবনে হাজার]
---আহলে কেবলা হওয়া সত্ত্বেও খারেজীরা কাফেরঃ
দলিলঃ ১- আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত, "ইয়াম্রুকুনা মিনাদ দিনী মুরুকাস সাহমী মিনার রমিয়্যাতি, ফাইয়ানযুরুর রামি ইলা সাহমিহি ফাইয়াতামারা ফিল ফুরকাতি হাল আলিকা বিহা মিনাদ দামি শাইউন" "নিক্ষেপকারী তীরটির আগাগোড়া সন্দেহের দৃষ্টিতে পরিক্ষা করে যে তাতে কি কিছু লেগে আছে কিনা। অর্থাৎ তাদের দ্বীন থেকে বের হওয়াটা সেই শিকারীর তীরের মত যা শিকারকে ভেদ তো করে গেছে কিন্তু তাতে কোন নিশানা নেই।
মুরুক শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, তারা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে কিন্তু নিজেরাও টের পাবেনা।
২- ইমাম বুখারী খাওয়ারেজ এবং মুলহিদের কতলের প্রবক্তা। যা বুঝা যায় ইমাম বুখারীর তরজমাতুল বাব কায়েমের ধরণ দেখে "বাবু কাতলিল খাওয়ারিজী অয়াল মুলহিদিন বা'দা ইকামাতিল হুজ্জাতি আলাইহিম"
৩- খারেজীরা প্রত্যেক সেই ব্যক্তিকে কাফের বলে থাকে যারা তাদের আকিদা বিশ্বাস বিরোধী। আর মুসলিম শরিফের হাদিস অনুযায়ী যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে কাফের বলে প্রকৃতপক্ষে যদি সে কাফের না হয়ে থাকে তাহলে বক্তা নিজেই কাফের হয়ে যায়।[কাজী আবু বকর ইবনুল আরাবী]
৪- উচু মর্যাদার সাহাবীদের কাফের বলাটা হুজুর সা কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। কেননা হুজুর নিজে তাদের জান্নাতি হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছেন। [আল্লামা সুবকি]
৫- হযরত আলীর রেওয়ায়েতে বুখারীর হাদিসে তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছেঃ আইনামা লাকিতুম ফাকতুলুহুম, ফাইন্না ফি কাতলিহিম আজরান লিমান কাতালাহুম ইউমাল কিয়ামাহ।
৬ কাফের হওয়ার জন্য ইসলাম ছেড়ে অন্য ধর্মে প্রবেশ করার ঘোষণা দেওয়া জরুরী না। বরং কুফুরী মতবাদ উক্তি ও আমল অবলম্বন করাই কাফের হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
প্রশ্নঃ খারেজীরা তো নিজেদের মুসলিম ভাবে। তাহলে কাফের কিভাবে বলা যায়?
উত্তরঃ হাদিসে এসেছে "ইয়াকুলুনাল হাক, ও্যা ইয়াকরউনাল কুরআন, ও্যা ইয়াম্রুকুনা মিনাল ইসলামি লা ইয়াতাআল্লাকু মিনহু বিশাইইন"
হক কথা বলতে থাকবে কুরআন পড়তে থাকবে কিন্তু ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে
এবং ইসলামের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবেনা।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, গাল মন্দ কটুক্তি ছাড়াও যেমন ইরতেদাদ পাওয়া যায় তেমনি ধর্ম পরিবর্তনের সংকল্প ছাড়াও কুফুরী পাওয়া যায়। যেমন ইবলিস রুবুবিয়াতের অস্বীকার করা ছাড়াই কাফের হয়েছে।
-- উদ্দেশ্যের বিপরীত কুরানের ব্যাখ্যা এবং হারামকে হালালকরণঃ
খারেজীরা মুসলমানদের জান মালকে হালাল মনে করে কুরানের কিছু আয়াতের উদ্দেশ্যের বিপরীত তাবীলের মাধ্যমে। [ইবনে তাবারী]
দলিলঃ ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়েত খারেজীরা মুহকাম আয়াতের উপর ইমান আনে কিন্তু মুতাশাবিহাতের ব্যাখ্যায় ধ্বংস হয়।
খারেজীদের কাফের না বলার ব্যাপারে মতঃ
ইলমুল কালামের আলেমদের মতে খারেজিরা ফাসেক। কারণ হচ্ছে তারা শুধু একটি বাতিল তাবীলের আশ্রয়ে নিজেদের বাদে সকল মুসলমানদের কাফের বলে থাকে।
কাফের না বলার কারণ হল তারা নিজেদের তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত বলে দাবী করে থাকে। কাফের না বলাটা জমহুরের ওলামারও মত। তবে গোমরাহির ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।
দলিলঃ হাদিসে "ইয়াতামারা" শব্দটি সন্দেহপূর্ণ। আর সন্দেহের দ্বারা কুফুর প্রমাণিত হয় না।
তবে হাফেজ ইবনে হাজার এ দলিলের জবাব দিয়েছেন। কেননা হাদিসের ভিন্ন রেওয়ায়েতে আরো দুইটি শব্দ পাওয়া যায়। যার দ্বারা ইয়াকীন পাওয়া যায়। "লাম ইউলাক মিনহু বিশাইইন" "কদ সাবাকাল ফারসু ওয়াদ দামু"। এই তিন রেওয়ায়েতের সামঞ্জস্যবিধান হল, প্রথমে তীর নিক্ষেপকারী সন্দীহান থাকলেও পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয়ে গেছে যে তার তীর শিকার ভেদ করেছে। কিন্তু এত দ্রুত হয়েছে যে তার মধ্যে রক্তের নাম নিশানাও নেই।
ইমাম কুরতুবীঃ খারেজীদের কাফের হওয়ার বিষয়টি কাফের না হওয়ার বিষয়টি বেশি স্পষ্ট।
--খারেজীদের কাফের বলা না বলার মধ্যে পার্থক্যঃ
কাফের বললে তাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে। কাফের না বললে যারা ইসলামী হুকুমতের বিরোধিতা করে যুদ্ধে নেমে পড়েছে তাদের সাথে রাষ্ট্রদোহী মুসলমানদের মত আচরণ করা হবে। অর্থাৎ যারা মারা গেল তো মারাই গেল আর যারা বেচে যাবে তাদেরকে বিদ্রোহ করার শাস্তি দেওয়া হবে। শাস্তি প্রদানের ভার শাসকের উপর ন্যস্ত হবে। তিনি চাইলে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।
--খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করা বেশী জরূরীঃ
হেকমত হচ্ছে, খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য হলো ইসলামের মুল পুজি অর্থাৎ দ্বীনকে হেফাজত করা। আর কাফের মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ানো ও অমুসলিমদের সংখ্যা কমানো। কাফেরদের সাথে যুদ্ধে মুনাফা ও উপকারীতা অর্জন হয়। আর এটা স্পষ্ট যে মুনাফা হেফাজত থেকে মূলপুজির হেফাজত গুরুত্বপূর্ণ। আর খারেজীরা ইহুদী নাসারাদের চেয়েই বেশী ক্ষতিকর ইসলামের জন্য।
--খারেজীদের তাবীলে সমস্যাঃ
ইনিল হুকমু ইল্লা লিল্লাহ এই আয়াতের বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা হযরত আলীর হুকুমকে অমান্য করেছিল। কারণ তিনি একজন হাকাম মেনে নিয়েছিলেন। [এই বক্তব্যের তাহকীক লাগবে] অথচ নিয়ম হল বাহ্যিক অর্থ যদি ইজমায়ের পরিপন্থি হয় তাহলে তাবীল করা লাগবে।
--খারেজীদের ব্যাপারে হুকুমঃ
হাদিস দ্বারা তাদের সাথে যুদ্ধের অনুমতি প্রমাণিত হয়। হযরত আলি রা বলেন, যদি তারা ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বিদ্রোহ ঘোষণা করে তাহলে তাদের সাথে যুদ্ধ করো। আর যদি জালেম বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বিদ্রোহ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো না।
ইবন্র হজার আসকালানী বলেন, কারবালার ময়দানে ইয়াজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হাররাতে উকবা ইবনে মুসলিমের বাহিনীর বিরুদ্ধে মদিনাবাসীর যুদ্ধ, মক্কাতে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়েরের যুদ্ধ এই প্রকারের মধ্যেই শামিল।
--খারেজীদের ব্যাপারে ইমাম গাজ্জালিঃ
খারেজীদের হুকুমের ব্যাপারে দুইটি সুরত। এক- মুরতাদের হুকুম লাগানো হবে। দুই- রাষ্ট্রদোহী মুসলমান আখ্যায়িত করা হবে।
খারেজীদের মধ্যে দুটি দল আছে। একদল হল, যারা ইসলামী শাসকদের সাথে বিদ্রোহ করে এবং লোকদের নিজেদের বাতিল আকিদা মানতে বাধ্য করে। এ দলটি নিশ্চিত কাফের। দ্বিতীয় দল হচ্ছে, যারা নিজেদের আকিদা মানতে বাধ্য করে না। শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল করার জন্য ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এদের উদ্দেশ্য যদি জালেমের জুলুম থেকে মুক্ত করা আর দীনকে হেফাজত করা তাহলে তারা আহলে হক। আর যদি জোশের বশবর্তী হয়ে বিদ্রোহ আর যুদ্ধ করে চাই তাদের মধ্যে কোন গোমরাহী পাওয়া যাক বা না যাক তারা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহী
--খারেজীদের ব্যাপারে মুসান্নেফ কাশ্মিরী রহ-
যারা খারেজীদের কাফের বলার পক্ষে নয় তারাই আবার "কাফের" আর "কাফের নয়" দুইভাগে ভাগ করলেন। ইবনে হাজার নিজেও কাফের আখ্যায়িত করার পক্ষে না, তবুও তিনি কাফের আখ্যায়িত না করার দলিলসমূহের জবাব দিয়েছেন। মুসান্নেফের ফায়সালা হল, যে ব্যক্তি কোন মুতাওয়াতের বিষয়কে অস্বীকার করবে তাকে কাফের বলা যাবে। ইয়াম্রুকুনা শব্দে যদিও সন্দেহ থেকে থাকে কিন্তু ইবনে মাজার হাদিস দ্বারা কাফের হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। "কদ কানা হা-উলা-ই মুসলিমিনা ফাসারা কুফফারান।
সন্দেহের ভিত্তিতে শরিয়তের কোন ফরজকে অস্বীকার করলে তাকে পুনরায় বিশ্বাস স্থাপনের আহ্বান জানানো হবে। যদি তারা লড়াইয়ে প্রস্তুত হয় তাহলে হুজ্জত পূর্ণ করার পর তাদের সাথে লড়াই করা হবে। আত্মসমর্পণ করলে তো ভাল অন্যথায় কাফেরদের সাথে যেই আচরণ করা হয় তাই করা হবে। অর্থাৎ হত্যা করেয়া হবে এবং তার ধন সম্পদ গনীমত বলে গন্য হবে। হত্যাটা হবে কুফুরের ভিত্তিতে।
দলিলঃ যারা ইসলামের মূলের উপর বহাল ছিল কিন্তু সন্দেহের কারণে যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করেছিল তাদের বিপক্ষে পরিপূর্ণ হুজ্জত আসার আগ পর্যন্ত তাদেরকে কাফের সাব্যস্ত করা হয়নি। [হাফেয ইবনে হাজার]
---আহলে কেবলা হওয়া সত্ত্বেও খারেজীরা কাফেরঃ
দলিলঃ ১- আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত, "ইয়াম্রুকুনা মিনাদ দিনী মুরুকাস সাহমী মিনার রমিয়্যাতি, ফাইয়ানযুরুর রামি ইলা সাহমিহি ফাইয়াতামারা ফিল ফুরকাতি হাল আলিকা বিহা মিনাদ দামি শাইউন" "নিক্ষেপকারী তীরটির আগাগোড়া সন্দেহের দৃষ্টিতে পরিক্ষা করে যে তাতে কি কিছু লেগে আছে কিনা। অর্থাৎ তাদের দ্বীন থেকে বের হওয়াটা সেই শিকারীর তীরের মত যা শিকারকে ভেদ তো করে গেছে কিন্তু তাতে কোন নিশানা নেই।
মুরুক শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, তারা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে কিন্তু নিজেরাও টের পাবেনা।
২- ইমাম বুখারী খাওয়ারেজ এবং মুলহিদের কতলের প্রবক্তা। যা বুঝা যায় ইমাম বুখারীর তরজমাতুল বাব কায়েমের ধরণ দেখে "বাবু কাতলিল খাওয়ারিজী অয়াল মুলহিদিন বা'দা ইকামাতিল হুজ্জাতি আলাইহিম"
৩- খারেজীরা প্রত্যেক সেই ব্যক্তিকে কাফের বলে থাকে যারা তাদের আকিদা বিশ্বাস বিরোধী। আর মুসলিম শরিফের হাদিস অনুযায়ী যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে কাফের বলে প্রকৃতপক্ষে যদি সে কাফের না হয়ে থাকে তাহলে বক্তা নিজেই কাফের হয়ে যায়।[কাজী আবু বকর ইবনুল আরাবী]
৪- উচু মর্যাদার সাহাবীদের কাফের বলাটা হুজুর সা কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। কেননা হুজুর নিজে তাদের জান্নাতি হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছেন। [আল্লামা সুবকি]
৫- হযরত আলীর রেওয়ায়েতে বুখারীর হাদিসে তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছেঃ আইনামা লাকিতুম ফাকতুলুহুম, ফাইন্না ফি কাতলিহিম আজরান লিমান কাতালাহুম ইউমাল কিয়ামাহ।
৬ কাফের হওয়ার জন্য ইসলাম ছেড়ে অন্য ধর্মে প্রবেশ করার ঘোষণা দেওয়া জরুরী না। বরং কুফুরী মতবাদ উক্তি ও আমল অবলম্বন করাই কাফের হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
প্রশ্নঃ খারেজীরা তো নিজেদের মুসলিম ভাবে। তাহলে কাফের কিভাবে বলা যায়?
উত্তরঃ হাদিসে এসেছে "ইয়াকুলুনাল হাক, ও্যা ইয়াকরউনাল কুরআন, ও্যা ইয়াম্রুকুনা মিনাল ইসলামি লা ইয়াতাআল্লাকু মিনহু বিশাইইন"
হক কথা বলতে থাকবে কুরআন পড়তে থাকবে কিন্তু ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে
এবং ইসলামের সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবেনা।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, গাল মন্দ কটুক্তি ছাড়াও যেমন ইরতেদাদ পাওয়া যায় তেমনি ধর্ম পরিবর্তনের সংকল্প ছাড়াও কুফুরী পাওয়া যায়। যেমন ইবলিস রুবুবিয়াতের অস্বীকার করা ছাড়াই কাফের হয়েছে।
-- উদ্দেশ্যের বিপরীত কুরানের ব্যাখ্যা এবং হারামকে হালালকরণঃ
খারেজীরা মুসলমানদের জান মালকে হালাল মনে করে কুরানের কিছু আয়াতের উদ্দেশ্যের বিপরীত তাবীলের মাধ্যমে। [ইবনে তাবারী]
দলিলঃ ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়েত খারেজীরা মুহকাম আয়াতের উপর ইমান আনে কিন্তু মুতাশাবিহাতের ব্যাখ্যায় ধ্বংস হয়।
খারেজীদের কাফের না বলার ব্যাপারে মতঃ
ইলমুল কালামের আলেমদের মতে খারেজিরা ফাসেক। কারণ হচ্ছে তারা শুধু একটি বাতিল তাবীলের আশ্রয়ে নিজেদের বাদে সকল মুসলমানদের কাফের বলে থাকে।
কাফের না বলার কারণ হল তারা নিজেদের তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত বলে দাবী করে থাকে। কাফের না বলাটা জমহুরের ওলামারও মত। তবে গোমরাহির ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।
দলিলঃ হাদিসে "ইয়াতামারা" শব্দটি সন্দেহপূর্ণ। আর সন্দেহের দ্বারা কুফুর প্রমাণিত হয় না।
তবে হাফেজ ইবনে হাজার এ দলিলের জবাব দিয়েছেন। কেননা হাদিসের ভিন্ন রেওয়ায়েতে আরো দুইটি শব্দ পাওয়া যায়। যার দ্বারা ইয়াকীন পাওয়া যায়। "লাম ইউলাক মিনহু বিশাইইন" "কদ সাবাকাল ফারসু ওয়াদ দামু"। এই তিন রেওয়ায়েতের সামঞ্জস্যবিধান হল, প্রথমে তীর নিক্ষেপকারী সন্দীহান থাকলেও পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয়ে গেছে যে তার তীর শিকার ভেদ করেছে। কিন্তু এত দ্রুত হয়েছে যে তার মধ্যে রক্তের নাম নিশানাও নেই।
ইমাম কুরতুবীঃ খারেজীদের কাফের হওয়ার বিষয়টি কাফের না হওয়ার বিষয়টি বেশি স্পষ্ট।
--খারেজীদের কাফের বলা না বলার মধ্যে পার্থক্যঃ
কাফের বললে তাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে। কাফের না বললে যারা ইসলামী হুকুমতের বিরোধিতা করে যুদ্ধে নেমে পড়েছে তাদের সাথে রাষ্ট্রদোহী মুসলমানদের মত আচরণ করা হবে। অর্থাৎ যারা মারা গেল তো মারাই গেল আর যারা বেচে যাবে তাদেরকে বিদ্রোহ করার শাস্তি দেওয়া হবে। শাস্তি প্রদানের ভার শাসকের উপর ন্যস্ত হবে। তিনি চাইলে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।
--খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করা বেশী জরূরীঃ
হেকমত হচ্ছে, খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য হলো ইসলামের মুল পুজি অর্থাৎ দ্বীনকে হেফাজত করা। আর কাফের মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ানো ও অমুসলিমদের সংখ্যা কমানো। কাফেরদের সাথে যুদ্ধে মুনাফা ও উপকারীতা অর্জন হয়। আর এটা স্পষ্ট যে মুনাফা হেফাজত থেকে মূলপুজির হেফাজত গুরুত্বপূর্ণ। আর খারেজীরা ইহুদী নাসারাদের চেয়েই বেশী ক্ষতিকর ইসলামের জন্য।
--খারেজীদের তাবীলে সমস্যাঃ
ইনিল হুকমু ইল্লা লিল্লাহ এই আয়াতের বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা হযরত আলীর হুকুমকে অমান্য করেছিল। কারণ তিনি একজন হাকাম মেনে নিয়েছিলেন। [এই বক্তব্যের তাহকীক লাগবে] অথচ নিয়ম হল বাহ্যিক অর্থ যদি ইজমায়ের পরিপন্থি হয় তাহলে তাবীল করা লাগবে।
--খারেজীদের ব্যাপারে হুকুমঃ
হাদিস দ্বারা তাদের সাথে যুদ্ধের অনুমতি প্রমাণিত হয়। হযরত আলি রা বলেন, যদি তারা ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বিদ্রোহ ঘোষণা করে তাহলে তাদের সাথে যুদ্ধ করো। আর যদি জালেম বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও বিদ্রোহ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো না।
ইবন্র হজার আসকালানী বলেন, কারবালার ময়দানে ইয়াজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হাররাতে উকবা ইবনে মুসলিমের বাহিনীর বিরুদ্ধে মদিনাবাসীর যুদ্ধ, মক্কাতে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়েরের যুদ্ধ এই প্রকারের মধ্যেই শামিল।
--খারেজীদের ব্যাপারে ইমাম গাজ্জালিঃ
খারেজীদের হুকুমের ব্যাপারে দুইটি সুরত। এক- মুরতাদের হুকুম লাগানো হবে। দুই- রাষ্ট্রদোহী মুসলমান আখ্যায়িত করা হবে।
খারেজীদের মধ্যে দুটি দল আছে। একদল হল, যারা ইসলামী শাসকদের সাথে বিদ্রোহ করে এবং লোকদের নিজেদের বাতিল আকিদা মানতে বাধ্য করে। এ দলটি নিশ্চিত কাফের। দ্বিতীয় দল হচ্ছে, যারা নিজেদের আকিদা মানতে বাধ্য করে না। শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল করার জন্য ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এদের উদ্দেশ্য যদি জালেমের জুলুম থেকে মুক্ত করা আর দীনকে হেফাজত করা তাহলে তারা আহলে হক। আর যদি জোশের বশবর্তী হয়ে বিদ্রোহ আর যুদ্ধ করে চাই তাদের মধ্যে কোন গোমরাহী পাওয়া যাক বা না যাক তারা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহী
--খারেজীদের ব্যাপারে মুসান্নেফ কাশ্মিরী রহ-
যারা খারেজীদের কাফের বলার পক্ষে নয় তারাই আবার "কাফের" আর "কাফের নয়" দুইভাগে ভাগ করলেন। ইবনে হাজার নিজেও কাফের আখ্যায়িত করার পক্ষে না, তবুও তিনি কাফের আখ্যায়িত না করার দলিলসমূহের জবাব দিয়েছেন। মুসান্নেফের ফায়সালা হল, যে ব্যক্তি কোন মুতাওয়াতের বিষয়কে অস্বীকার করবে তাকে কাফের বলা যাবে। ইয়াম্রুকুনা শব্দে যদিও সন্দেহ থেকে থাকে কিন্তু ইবনে মাজার হাদিস দ্বারা কাফের হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। "কদ কানা হা-উলা-ই মুসলিমিনা ফাসারা কুফফারান।
No comments:
Post a Comment