এখন প্রায় রাতই হাসপাতালে মুহাম্মাদের পাশে বসে কাটানো হয়। শেষরাতে অন্য দুইজন এলে পরে আমরা চলে আসি। তো হাসপাতাল থেকে হোটেল আল রাজ্জাক বেশি দূরে না। সেখানে বেশ কয়েকবার খাওয়া হলেও সাহরীতে তাদের বিশাল সমাহারের যে প্রসিদ্ধ গল্পটা আছে এটা শুধু লোকমুখেই শুনে এসেছি এতদিন। হাসপাতাল থেকে যেহেতু এই সময়ই বের হওয়া হয় তাই ঠিক করে রেখেছিলাম একদিন সেখানে খেয়ে দেখবো।
রিকশা না পেয়ে একটা ভ্যানওয়ালা মামাকে নামিয়ে দিয়ে আসতে বললাম। ফাকা রাস্তায় ভ্যানে চড়ে রাতের ঢাকা দেখার অনুভূতিটা যে এতটা চমৎকার সেটা আগে জানলে প্রতিদিন তারাবীহ আগেই একটা ভ্যান ঠিক করে রাখতাম। যাতে নামাজ শেষে ঘুরতে বের হতে দেরী না হয়।
যথারীতি আমাদের ভ্যান হোটেল রাজ্জাকের সামনে থামলো। যে চিত্র দেখলাম তাতে মনে হল যত দ্রুতগতিতে সম্ভব ভ্যান থেকে লাফিয়ে নেমে দূরে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। এতে লজ্জা কিছুটা হলেও কম পাওয়া যাবে। কারণ হোটেলের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের যতটুকু জায়গা ছিল পুরাটা কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আরো এদিক সেদিকেও কিছু রাখা হয়েছে। রাত তখন বাজে মাত্র দুইটা। গাড়ি এখনো আসছে, আরো আসবে। আর আমরা এখানে এসেছি ভ্যানে করে সেহরী খেতে।
এত বড় হোটেলটায় বসার জায়গা নেই। সিরিয়াল ধরে দাড়ানোটা তেমন কষ্টের না হলেও বেশ লজ্জার ছিল। কারণ সিরিয়ালে ওয়েষ্টার্ন পোষাকে সাহরী খেতে আসা কিছু আপুও দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের দেখে এক ঢাকাইয়া ভদ্র লোক তো বলেই বসলেন, "কিছু তো আহে সাহরী খাইতে আর কিছু আহে রূপ দেহাইতে।" বুঝলাম না, সাহরী খেতেও কেন মুখে এত ময়দা মেখে আসতে হবে? আচ্ছা বাপের টাকায় কিনা ময়দা মাখুক সমস্যা নাই। কিন্তু এটা তো রমজান মাস, অন্তত সাহরী খাওয়ার মত সাওয়াবের কাজ করতে আরেকটু শালীন পোশাক পরে আসলেই বা কি এমন রূপ ঢাকা পড়ে যেতো!
হুম্ম, তখন আবার তাদের একটা অপ্রাপ্তি থেকে যেতো যেটা পরবর্তী চিত্র দেখে বুঝলাম।
হুম্ম, তখন আবার তাদের একটা অপ্রাপ্তি থেকে যেতো যেটা পরবর্তী চিত্র দেখে বুঝলাম।
চিত্রটা ছিল এরকম:
কিছু ভাইয়ারা সেলফি তুলছেন আর চেকইন দিচ্ছেন। আর সুযোগে সুযোগে আপুদের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু দুষ্টু মন্তব্য করছে। এতে আপুদের কিছু আসছে যাচ্ছে তো নাই বরং আরো মান বাড়ছে বলেই মনে হলো। এটা তো বিশাল প্রাপ্তি না!
কিছু ভাইয়ারা সেলফি তুলছেন আর চেকইন দিচ্ছেন। আর সুযোগে সুযোগে আপুদের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু দুষ্টু মন্তব্য করছে। এতে আপুদের কিছু আসছে যাচ্ছে তো নাই বরং আরো মান বাড়ছে বলেই মনে হলো। এটা তো বিশাল প্রাপ্তি না!
সিট খালি পেয়ে বসার পর দৃষ্টিকে খাবারের দিকে নিবিষ্ট রাখার জোরদার প্রয়াস চালাচ্ছিলাম। চোখকে মনে করিয়ে দিলাম ইটজ রামাদান। তাছাড়া এত সুস্বাদু খাবার রেখে এদিক সেদিক তাকালে খাবারেরা অভিমান করতে পারে। খাবারটা সত্যিই ভাল ছিল। বিলটাও অবশ্য ভালই উঠেছে। সেলফিটা একদম খাওয়া শেষ হওয়ার পর তুলেছি। কারণ আপলোডের নিয়ত ছিল না। শুধু একটা স্মৃতি রাখা আর কি। কিন্তু সেলফি তোলার সময় যখন মেয়েলি কণ্ঠে এই কথাটা কানে এল "দেখ দেখ, হুজুররাও..." আড় চোখে তাকালাম। জিদ চাপলো। এখন তো এটা আপলোডও দিবো.. কার কি!!!