Tuesday, June 28, 2016

একটি রমজানময় রাত বা সেহরীনাইট

এখন প্রায় রাতই হাসপাতালে মুহাম্মাদের পাশে বসে কাটানো হয়। শেষরাতে অন্য দুইজন এলে পরে আমরা চলে আসি। তো হাসপাতাল থেকে হোটেল আল রাজ্জাক বেশি দূরে না। সেখানে বেশ কয়েকবার খাওয়া হলেও সাহরীতে তাদের বিশাল সমাহারের যে প্রসিদ্ধ গল্পটা আছে এটা শুধু লোকমুখেই শুনে এসেছি এতদিন। হাসপাতাল থেকে যেহেতু এই সময়ই বের হওয়া হয় তাই ঠিক করে রেখেছিলাম একদিন সেখানে খেয়ে দেখবো।

রিকশা না পেয়ে একটা ভ্যানওয়ালা মামাকে নামিয়ে দিয়ে আসতে বললাম। ফাকা রাস্তায় ভ্যানে চড়ে রাতের ঢাকা দেখার অনুভূতিটা যে এতটা চমৎকার সেটা আগে জানলে প্রতিদিন তারাবীহ আগেই একটা ভ্যান ঠিক করে রাখতাম। যাতে নামাজ শেষে ঘুরতে বের হতে দেরী না হয়।

যথারীতি আমাদের ভ্যান হোটেল রাজ্জাকের সামনে থামলো। যে চিত্র দেখলাম তাতে মনে হল যত দ্রুতগতিতে সম্ভব ভ্যান থেকে লাফিয়ে নেমে দূরে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। এতে লজ্জা কিছুটা হলেও কম পাওয়া যাবে। কারণ হোটেলের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের যতটুকু জায়গা ছিল পুরাটা কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আরো এদিক সেদিকেও কিছু রাখা হয়েছে। রাত তখন বাজে মাত্র দুইটা। গাড়ি এখনো আসছে, আরো আসবে। আর আমরা এখানে এসেছি ভ্যানে করে সেহরী খেতে।

এত বড় হোটেলটায় বসার জায়গা নেই। সিরিয়াল ধরে দাড়ানোটা তেমন কষ্টের না হলেও বেশ লজ্জার ছিল। কারণ সিরিয়ালে ওয়েষ্টার্ন পোষাকে সাহরী খেতে আসা কিছু আপুও দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের দেখে এক ঢাকাইয়া ভদ্র লোক তো বলেই বসলেন, "কিছু তো আহে সাহরী খাইতে আর কিছু আহে রূপ দেহাইতে।" বুঝলাম না, সাহরী খেতেও কেন মুখে এত ময়দা মেখে আসতে হবে? আচ্ছা বাপের টাকায় কিনা ময়দা মাখুক সমস্যা নাই। কিন্তু এটা তো রমজান মাস, অন্তত সাহরী খাওয়ার মত সাওয়াবের কাজ করতে আরেকটু শালীন পোশাক পরে আসলেই বা কি এমন রূপ ঢাকা পড়ে যেতো!
হুম্ম, তখন আবার তাদের একটা অপ্রাপ্তি থেকে যেতো যেটা পরবর্তী চিত্র দেখে বুঝলাম।

চিত্রটা ছিল এরকম:
কিছু ভাইয়ারা সেলফি তুলছেন আর চেকইন দিচ্ছেন। আর সুযোগে সুযোগে আপুদের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু দুষ্টু মন্তব্য করছে। এতে আপুদের কিছু আসছে যাচ্ছে তো নাই বরং আরো মান বাড়ছে বলেই মনে হলো। এটা তো বিশাল প্রাপ্তি না!

সিট খালি পেয়ে বসার পর দৃষ্টিকে খাবারের দিকে নিবিষ্ট রাখার জোরদার প্রয়াস চালাচ্ছিলাম। চোখকে মনে করিয়ে দিলাম ইটজ রামাদান। তাছাড়া এত সুস্বাদু খাবার রেখে এদিক সেদিক তাকালে খাবারেরা অভিমান করতে পারে। খাবারটা সত্যিই ভাল ছিল। বিলটাও অবশ্য ভালই উঠেছে। সেলফিটা একদম খাওয়া শেষ হওয়ার পর তুলেছি। কারণ আপলোডের নিয়ত ছিল না। শুধু একটা স্মৃতি রাখা আর কি। কিন্তু সেলফি তোলার সময় যখন মেয়েলি কণ্ঠে এই কথাটা কানে এল "দেখ দেখ, হুজুররাও..." আড় চোখে তাকালাম। জিদ চাপলো। এখন তো এটা আপলোডও দিবো.. কার কি!!!

Sunday, June 26, 2016

গেণ্ডারিয়া মসজিদে পুলিশি হামলা

লোকটা যখন পুলিশকে বললো "আমরা নামাজ পড়বো আপনি গুলি চালালে চালান" তখন তার কথায় বাংলাদেশের মুসলমানদের অসহায়ত্বের চিত্রই ফুটে উঠছিলো। কোথায় যেনো যুদ্ধটা চলছে কেউ ধরতেই পারছেনা। সবাই কিন্তু হেরে যাচ্ছে। আবার সেখানেই আরেকজন তখন বুকভরা সাহস নিয়ে বলে ওঠে "আরেহ, পিস্তল দেখায়েন না"। এ প্রতিবাদী বাক্যটা শেষমেশ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা নিজেদের মাটিতেই দাঁড়িয়ে আছি।

সে এলাকায় হিন্দুদের সাতটা ঘরের জন্য সাতটা মন্দির থাকলেও মুসলমানদের পঞ্চাশটা ঘরের জন্য একটা মসজিদ ছিল না। তাই মুসলমানরা মিলে  নিজেদের জায়গায় একটা মসজিদ নির্মাণ করে নামাজ আদায় শুরু করে দিয়েছিলো। এরপর হিন্দুরা এসে নামাজে বাধা দিলো। আচ্ছা এটাকে কি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বলা যাবে না? ওসিকে নিয়ে এসে পিস্তল দেখিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মুসলমানদের মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার মত ন্যক্কারজনক ঘটনা দেখে খুব কষ্ট লাগা এবং এর প্রতিক্রিয়া হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তাই এ ঘটনা যদি কোন দাঙ্গায় রূপ নেয় তখন ভালভাবে মনে রাখতে হবে যে সাম্প্রদায়িকতাটা আসলে কারা উষ্কে দিয়েছে!

যদি মেনেও নেই যে মসজিদটা হিন্দুদের জায়গার উপর করা হচ্ছিলো বলে তারা বাধা দিয়েছে তাহলে সেটা প্রমাণ করাটা বিচার-তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার না? কোন ধরনে সোর্স ছাড়াই পুলিশ এইভাবে মুসল্লিদের উপর এভাবে চার্জ করে কি করে? তাও আবার মসজিদে গিয়ে!

ঘটনা গতকাল জোহরের নামাজের সময়ের। আজ একদিন হতে চললো তাও এখন পর্যন্ত  কোন টিভি চ্যানেল এই নিউজটাকে কাভার করার মত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি। স্থানীয় লোকজনের মোবাইলের ক্যামেরায় ধারন করা দুএকটা ভিডিও দেখে কিছু জানা যাচ্ছে। পরিস্থিতি আসলে কোনদিকে যাচ্ছে? এ অপরাধের প্রতিবাদ বা নিন্দাবাদ কোনটা জানানোর ক্ষমতাই কি নেই আমাদের? নাকি অন্য কোন শক্তি আমাদের দেশে হস্তক্ষেপ করার পথ সুগম হয়ে যাওয়ার ভয়ে চুপ করে বসে আছি? হুম্ম ভয় তো আছেই। প্রতিবাদ, আন্দোলন এসব করলে এখন 'জঙ্গি' ফাতওয়া আসতে পারে। জমিটা হিন্দুদের এটা প্রমাণ করা তাদের জন্য তেমন কষ্টকর কিছুনা। যেহেতু প্রশাসন সাথে আছে।

তো আমরা চুপই থাকি। কারণ চুপ করে বসে থাকলেই তো ভারতের জন্য বাংলাদেশে আসার পথ খুব বেশী দুর্গম হয়ে যাবে। যেমনিভাবে 'জঙ্গি ফাতওয়া'র পর আমেরিকার পথ তো বেশ দুর্গম হয়ে গেছে। তাদের এসব পথ দুর্গম করার স্বার্থে আমাদের আর অনেক কিছু দেখে চুপ থাকতে হবে।

Wednesday, June 22, 2016

ইসলামোফোবিয়া ও একটি এক্সপেরিমেন্ট

ইউরোপের কোন দেশে যদি কোন সাদা চামড়াওয়ালা ইসলামবিদ্বেষী পথেঘাটে জনসম্মুখে কোন মুসলিমের উপর জঙ্গি বলে আক্রমণ করে বসে এটা দেখে অন্যান্য পথচারীদের কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে, এর উপর মুসলিম ইউট্যুবার করিম সাহেব একটা এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। ভিডিওতে দেখা গেছে মুসলিম দম্পতিটাকে উগ্রবাদীদের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে নিজ থেকে এগিয়ে আসছেন অনেক পথিচারী। এমন কি একজন ইহুদী তো বেশ চটে গিয়ে পাল্টা হুমকিও দিয়ে ফেলেছে উগ্রবাদী উত্যক্তকারীদের। এ ভিডিওর মাধ্যমে তারা বুঝাতে চেয়েছে মুসলমানদের নামে আন্তর্জাতিক মিডিয়া যা কিছুই ছড়াক ইউরোপের মানুষের মধ্যে অপরাধবোধটা কিছুটা হলেও বাকি আছে এখনো।
এটা একটা অমুসলিম দেশের রমজান মাসের চিত্র। আচ্ছা ধরেন, এই নিরীক্ষাটা রমজানের শুরুতে যদি আমাদের দেশে চালানো হতো। কোন এক চৌরাস্তায় গোপন ক্যামেরা ফিট করা হলো। কি চিত্র ধরা পড়তো ক্যামেরায়? মানে, আমি সেই জঙ্গিসন্দেহে ধরপাকড়ের চিত্রের কথা বলছি যাদের সংখ্যা দুইদিনে হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

হ্যা, ইউরোপের মত কোন সাদাচামড়ার উগ্রবাদী এসে আক্রমণ না করলেও আপনার বন্ধু পুলিশ কিন্তু আপনাকে ছাড়তোনা। রোজা রেখে রাস্তায় বের হয়েছেন। ইফতারটা জেলে বসেও করা লাগতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে যদি আবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয় তাহলে রাস্তায় চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী শাহি ইফতারগুলো একনজর দেখার সৌভাগ্য আপনার অর্জন হয়েও যেতে পারে। আবার ধরেন, আপনি রাতে মাদরাসার বোর্ডিং থেকে খানা এনে রেখেছেন সেহরী খাবেন বলে, পুলিশ সেহরীর টাইমে তল্লাশীর নামে ঢুকে আপনার সেহরী খেয়ে চলে গেল। এই ছোটখাটো ঘটনার নিন্দাবাদ বা প্রতিবাদ কোনটা করারই প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হবেনা আপনার। কারণ আপনার মাদরাসার একজন উস্তাদকে বিনাঅপরাধে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে তাতেই তো প্রতিবাদ হয়না এখন আর। 

আচ্ছা, অপরাধবোধের কথা বলছিলাম। হয়তো জঙ্গি ইস্যুটা রাজনৈতিক বলে সবাই অরাজনৈতিক থাকতে চায়। তাই এই অপরাধটা তারা বোধ করেনা। তাই প্রতিবাদও হয়না। তবে এই অরাজনৈতিক মানুষগুলা যখন আবার কোন শাহবাগী মতাদর্শীর জঙ্গিবিরোধী ফতুয়ার পক্ষে বিশাল স্ট্যাটাস দেয় কেবল মাত্র দেওবন্দী বলে তখন কি সেটাকে গোড়ামী বলতে হয়না? যাদের কমনসেন্স আছে তাদের কাছে বিষয়টা খুবই হাস্যকর। কারণ এই এইসব লম্বা স্ট্যাটাসে সাফাই গানেওয়ালারা নিজেরাও বুঝে না যে এই সো কল্ড ফতুয়ার রাজনীতিকরনের মাধ্যমে তাকেই জঙ্গি বানানো হচ্ছে।
এটা তখনকার অবস্থা বলছি যখন ধরপাকড়ের ফতুয়া রিলিজ হয়নাই। আর এখন তো ধরপাকড়রের বৈধতায় এই বাংলার লাখো আলেমেদের সাক্ষরিত ফাতওয়ার ফ্রী কপি প্রশাসনের কাছে মওজুদ। সো এখন বৈধতার সহিত আপনাকে জঙ্গি সাব্যস্ত করা হবে। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি...

Monday, June 13, 2016

বেড়ালটা আমার ছিল

তারাবীহ শেষে রুমে ঢুকতে দেরী মাগার আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে উনার দেরী হয়না। এরপর শুরু হয় নখগুলো হালকা বের করে আদুরে খামচি আর হাতে দাত বসিয়ে রাখা। আমার অপরাধ হল দীর্ঘ সময় উনার সাথে দেখা না করে থাকা। অবশ্য আমাকে দেখা মাত্রই উনি সর্বদা এই কাজই করে থাকেন। তাই গত একমাস ধরে মাদরাসায় একটা গুজব রটেছে। এই বিড়ালটা নাকি আমার। আমি অস্বীকার করিনি। কারণ বেশ ভাল একখানা নাম পেয়েছি উনার কল্যাণে। তবে এটা আমার মালিকানাধীন না হলেও পরিক্ষার সময় থেকে নিয়ে এ পর্যন্ত উনার পেছনে খরচ কম হয়নি। প্রতিদিন হাফ কেজি দুধ। যদিও বেশিটুকু আমারই খেতে হয়েছে। তখন একটা উদ্দেশ্য অবশ্য ছিল। মোবাইলে এটার ছবি দেখে ছোট বোন বারবার করে বলছিলো এটাকে বাসায় নিয়ে যেতে। কিন্তু পারমিশন নিতে গেলে আম্মু পাঠায় আব্বুর কাছে, আর আব্বু পাঠায় আম্মুর কাছে। শেষমেশ বেচারী হাল ছেড়ে দিয়েছে।
গতকাল একজন এসে খুব ভয় দেখিয়ে বললো, বিড়ালের কামড় খাওয়ার পর ভেক্সিন না নিলে যেই রোগ হয় সেই রোগ আর সেরে ওঠার সম্ভাবনা নাই। তার মানে হচ্ছে আমি কিছুদিনের মধ্যে মারা গেলেও যেতে পারি। এটা নিয়ে আমার তেমন মাথাব্যথা নেই। মরলে মরলাম।
কিন্তু কিউট বিড়ালটার এই কুকীর্তির কথা আশেপাশে ছড়িয়ে পড়াতেই যত সমস্যা বেধেছে। কত করে বলেছিলাম, "ব্যাটা যা করবি কর। কিন্তু প্রমাণ রাখিস না।" শুনলোই না আমার কথা। নানুবাসায় সেদিন দুই হাতে কামড় আর খামচির দাগ দেখে আম্মু নানীর কাছে বিচার দিলো। কেন আমি এখনো ডাক্তার দেখাচ্ছিনা।
নানী অভিযোগ শুনে যা বললেন,
"ছোট বেলায় শুনছিলাম, বিলাইয়ের কামড় খাইলে চকির নিচে পলায়া নুন খাইতে হয়। তাইলে ভাল হয়া যায়, কিন্তু তুই চকি পাবি কই? এখন তো সবখানেই বক্স খাট"। এ কথা শুনে সবাই হাসতে হাসতে আমার কেসটা হালকা করে দিয়েছিল।
ব্যাপার হলো, সে তো আমাকে আদর করেই কামড়ায়। যদিও মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত উত্তেজিত হওয়ার কারণে দাগ বসে যায়। সেটা তো একান্তই তার ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। মানুষের মত নিষ্ঠুর প্রাণীর ভালবাসায় মরার নিয়ম থাকলে বিড়ালের মত কিউট প্রাণীর ভালবাসার মরার নিয়ম কেন থাকবেনা!

এই বিড়ালের সাথে বিচ্ছেদের ঘটনাটা খুব মজার ছিল। ঘটনা হচ্ছে, রাসেল সেদিন তারাবী পড়ে এসে বিছানায় বসে দেখে কে যেন খেজুর রেখে দিয়েছে। রমজান মাস খেজুর এদিক সেদিক থেকে আসতেই পারে। কিন্তু খেজুরটা হাতে নেয়া মাত্রই যে তাঁর সন্দেহ হয়েছিল সেই স্পন্দেহ দূর করতে কি সে অই খেজুরটা নাকের কাছে নিয়েছিল কিনা আমি জানি না। তবে সে মুখে দেয়ার আগেই নিশ্চিত হয়েছিল যে এটা সেই বেড়ালের পেট থেকে বের হওয়া মলমূত্র সেটা আমি জানি। এরপর দরজাটা আটকে পুরা রুমে বেশ ভালমত ধাওয়া দিল কতক্ষণ। শুনতে নির্মম শুনালেও রাসেলের অবস্থা ভেবে শুধু হাসিই আসছিল তখন। এরপর থেকে বেড়ালটা আর রুমে ঢুকতোনা। দরজার পাশে উকি দিলেই আমানুল্লাহ "রাসেল!" বলে চিৎকার দিত। সাথে সাথে আর তাকে কে পায়। কঠিন দৌড়।

মিসর আসার কিছুদিন আগে ঠিক এক বছর পর বেড়ালটার সাথে আবার দেখা হয়েছিল। রুমের সামনের টেবিলটার নিচে এসেছিল কোত্থেকে যেন। আমি আগের মত ডাকলাম। কিন্তু সে কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল। টেবিলের নিচ থেকে বের হতে দেখলাম না। নিচে তাকিয়েও দেখলাম। সেখানেও নেই। বেড়ালটা আমার ছিল আসলে, এখন আর নেই।

Monday, June 6, 2016

তারাবীহ ২০১৬

বড় মসজিদে তারাবীহ পড়ানোর সুযোগ পাওয়াটা একদিকে যেমন সম্মানের,অন্যদিকে ঠেলাও কম না। এসব মসজিদ কমিটির চৌদ্দজনের চৌদ্দরকম বক্তব্য থাকে। যদি তারতীলের উপর আমল কখনো একটু বেশী হয়ে যায় তখন বলবে "আরে হাফেজ সাব! আজকে এত টাইম লাগলো যে? অসুস্থ নাকি আপনে?"

তবে আমাদের শাহী মসজিদের একটা ভাল দিক হল এখানে মুসল্লীরা তারাবীহ বলতে কেবলই তাড়াহুড়া করে নামাজ পড়াটাই বুঝে না। তাই এখানকার বেশিরভাগ মুসল্লিই তারতীলের সাথে পড়ার পক্ষে। এবং মসজিদ কমিটির মেজরিটির বক্তব্য হল "কারো জলদি পড়বার মুন চাইলে এখানে কিল্লেগা, আরো মোজ্জিদ আছে, অইখানে জাউজ্ঞা" (ঢাকাইয়া টোন হবে  )। 
তাই কোনদিন স্পীড একটু বেড়ে গেলেই এসে জিজ্ঞেস করা শুরু করবে "কি অইলো হাফেসসাব? কেউ কি আপনেরে কিছু কইছে? কারো কথায় কান দিবেন না। আপনে আপনের "অই পড়াটাই" পড়বেন"। 

আমার এই "অই পড়াটা" নাকি তাদের খুব পছন্দের। যেটা একটু তারতীলের সাথে পড়ার চেষ্টা করি। সমস্যা হল, প্রথম সাত বছর যেসব মসজিদে পড়িয়েছিলাম সেগুলোর প্রায় সবখানেই মুসল্লিদের কাছে তারাবীহর নামাজের অর্থ হচ্ছে "যে নামাজ তাড়াতাড়ি পড়া হয়"। তাই দুবছর আগে যখন এখানে পড়ানো শুরু করেছিলাম তখন তারতীলের উপর আমল করতে বেশ কষ্টই হয়ে গিয়েছিল। তার উপর আবার এখানে পিছনে মুসল্লিদের বড় একটা অংশ হাফেজ। আবার এমন এক জায়গায় দাড়ানোর সৌভাগ্য হয়েছে যেখানে হাফেজ্জী হুজুর আর ঢাকবী হুজুরদের মত ব্যক্তিত্বরা দাড়িয়েছিলেন। এটা আবার অনেকেই মনে করিয়ে দিত। যাতে শুকরিয়া আদায় করি। সেটা আদায় তো করতামই তবে সাথে নার্ভাসও হতে থাকতাম। তো সব মিলিয়ে প্রথম বছরটা পা কাপতে কাপতেই কেটে গিয়েছিল।

এরপর গত বছর থেকে আলহামদুলিল্লাহ কিছুটা অভ্যস্ত হতে শুরু করেছি। নার্ভাসনেসও কেটে গেছে অনেকটা। 
এখন দোস্ত ও বুজুর্গদের কাছে দুআর আবেদন। দুআ করবেন, আল্লাহ যাতে এবছরও সুন্দরভাবে পড়ানোর তৌফিক দেয়।

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...