অবশেষে কাগজপত্র হাতে পেলামঃ
চারদিন মিশরীয় রোদে পুড়ে পুড়ে এম্বাসীতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত লেটারগুলো হাতে পেলাম। এখন তাহরীর স্কয়ারের কড়া রোদে দাড়িয়েও ভেতরে অনাবিল শান্তির সুবাতাস বয়ে যাচ্ছে। শাব্বির মামা আর আব্দুল্লাহ ভাইকে বিশেষ ধন্যবাদ দিতেই হবে। উনারা না থাকলে আরো কয়দিন যে এই কড়া রোদে কাঠখড় পুড়িয়ে এম্বাসীতে যাওয়া লাগতো কে জানে।
আলহামদুলিল্লাহ, বাকিসব কাগজপত্রও প্রস্তুত। আগামীকাল ইনশাল্লাহ, আল আযহার শরিফে ভর্তির জন্য নাম জমা দিতে যাচ্ছি। ভাগ্য ভাল থাকলে এক মাস, আর খারাপ থাকলে দুই মাস, আরো বেশী খারাপ থাকলে বড়জোর তিনমাস অপেক্ষা করতে হবে নাম আসার জন্য। সবার কাছে বিশেষভাবে দুয়া চাচ্ছি।
এখন আপাতত ক্বিরাতের উপর ইজাযা নিতে একটা মারকাযে ভর্তি হয়েছি। রমজান এলে সাধারণত এইধরনের মারকাযগুলোতে বেশ ভীড় লেগে যায়। মিশরীরা এমনিতেও তিলাওয়াতের ব্যাপারে বেশ সিরিয়াস। আর রমজানে এই সিরিয়াসনেস কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আমি সপ্তাহে দুইদিন শুনানোর সুযোগ পেয়েছি। তবে আমার যেহেতু তাড়াহুড়ো নেই এবং ভর্তির আগ পর্যন্ত সময় আছে তাই যে কয়টা ক্বিরাতের উপর ইজাযাহ নেয়া যায় নিয়ে ফেলবো ভাবছি। আর এ সময়ের ভেতর মিসরটাকে ভালভাবে পড়তে হবে। এখানে তো মিসরকে পড়ার জন্য রীতিমত ভার্সিটিগুলোতে বিশেষ ফ্যাকাল্টি পর্যন্ত আছে। তারা একে কুল্লিয়াতুল আছার বলে। এর মধ্যে ফারাও সভ্যতা ও ইসলামী সভ্যতার আলাপ বেশ গভীরভাবে আছে। এবং গ্রীক ও রোমান সভ্যতার প্রাসঙ্গিক ব্যাপারগুলোও চলে আসে। তো সব মিলিয়ে এই ইজিপ্টলজি এক বিশাল জিনিষ।
কায়রোতে আসার পর থেকে নিজের কাজ নিয়েই এতদিন ব্যস্ত সময় কাটলেও অনেক কিছুই দেখা হয়ে গেছে। মিশরীদের হরেকরকম খাবারের এক্সপেরিমেন্ট করার ফিরিস্তি ইতিমধ্যেই অনেক লম্বা হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি আইটেম স্বতন্ত্র পোষ্টের দাবী রাখে। সেগুলো নিয়ে পরে কখনো আলাপ হবে।
আসার পরদিনই যুবায়ের ভাই নিয়ে গিয়েছিল মুজ্জামায়। ওরা বলে মুগাম্মা। মিসরীদের কাছে জিমের উচ্চারণ "গ" আর ক্বফের উচ্চারণ "আ"। তাই তাদের আঞ্চলিকতাটা ধরতে ভালই কষ্ট হয়। তবে এদের আম্মিয়ার সাথেও ফুসহার ভাল একটা যোগাযোগ আছে। ব্যাপারটা ড. শহিদুল্লাহ ফজলুল বারি রহ. ক্লাসে আমাদেরকে বলেছিলেন। হুজুরের কথা মনে পড়তেই এখন শুধু দুয়া আসে। রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা।
তো আমি ছিলাম মুজ্জামার সামনে। সেই বিশাল দালানটি দাঁড়িয়ে আছে তাহরীর স্কয়ারের দিকে মুখ করে। মুজাম্মা থেকে তাসজিল নিতে হয়। মানে হচ্ছে মিসরে আসার পরদিনই সর্বপ্রথম আমি যে জায়গায় গিয়েছিলাম সেটা ছিল তাহরীর স্কয়ার। এখানে তাহরীরের চত্বরের ছবি তোলা নিষেধ। পুলিশ দেখতে পেলে নাকি খবর আছে। তাও আজ দুপুরে লুকিয়ে এই ছবিটা তুলে ফেলেছি। কিন্তু প্রথমদিন সাহস পাইনি।সেদিন অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। যতক্ষণ তাকিয়ে থাকলে স্মৃতিপটে নিখুঁতভাবে সে দৃশ্যধারন করে রাখা যায় তার চেয়েও বেশিক্ষণ।
এরপর যখন মুজাম্মায় ঢুকার জন্য লম্বা লাইনে দাড়িয়েছিলাম তখন পেছন ফিরে তাহরীরে কিছু একটা খুজছিলাম। তাহরীরে ঠিক মাঝখানে কি শাপলার মত কিছু একটা আছে? আরে ধুর! যত্তসব হেফাজতী সেন্টিমেন্ট!
কায়রো শহরের মাইদানুল জাইশে যে বাসায় উঠেছি তার পেছনের রাস্তাটাই ১২০০ বছর পুরোনো ফাতেমী খেলাফতের প্রাচীন সব ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আছে বিশাল এলাকা জুড়ে পুরাতন সব কেল্লা। হাজার বছর আগে যে বাজার থেকে আজীজে মিসর নবী ইউসূফ আ কে ক্রয় করেছিল সে বাজারটি এখন বেশ জমজমাট। এগুলো সময় নিয়ে দেখতে হবে। জানতে হবে। আসলেই জানার ও দেখার অনেক অনেক কিছু ধারণ করে রেখেছে এই হাজার বছরের এই শহর।

আলহামদুলিল্লাহ, বাকিসব কাগজপত্রও প্রস্তুত। আগামীকাল ইনশাল্লাহ, আল আযহার শরিফে ভর্তির জন্য নাম জমা দিতে যাচ্ছি। ভাগ্য ভাল থাকলে এক মাস, আর খারাপ থাকলে দুই মাস, আরো বেশী খারাপ থাকলে বড়জোর তিনমাস অপেক্ষা করতে হবে নাম আসার জন্য। সবার কাছে বিশেষভাবে দুয়া চাচ্ছি।
এখন আপাতত ক্বিরাতের উপর ইজাযা নিতে একটা মারকাযে ভর্তি হয়েছি। রমজান এলে সাধারণত এইধরনের মারকাযগুলোতে বেশ ভীড় লেগে যায়। মিশরীরা এমনিতেও তিলাওয়াতের ব্যাপারে বেশ সিরিয়াস। আর রমজানে এই সিরিয়াসনেস কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আমি সপ্তাহে দুইদিন শুনানোর সুযোগ পেয়েছি। তবে আমার যেহেতু তাড়াহুড়ো নেই এবং ভর্তির আগ পর্যন্ত সময় আছে তাই যে কয়টা ক্বিরাতের উপর ইজাযাহ নেয়া যায় নিয়ে ফেলবো ভাবছি। আর এ সময়ের ভেতর মিসরটাকে ভালভাবে পড়তে হবে। এখানে তো মিসরকে পড়ার জন্য রীতিমত ভার্সিটিগুলোতে বিশেষ ফ্যাকাল্টি পর্যন্ত আছে। তারা একে কুল্লিয়াতুল আছার বলে। এর মধ্যে ফারাও সভ্যতা ও ইসলামী সভ্যতার আলাপ বেশ গভীরভাবে আছে। এবং গ্রীক ও রোমান সভ্যতার প্রাসঙ্গিক ব্যাপারগুলোও চলে আসে। তো সব মিলিয়ে এই ইজিপ্টলজি এক বিশাল জিনিষ।
কায়রোতে আসার পর থেকে নিজের কাজ নিয়েই এতদিন ব্যস্ত সময় কাটলেও অনেক কিছুই দেখা হয়ে গেছে। মিশরীদের হরেকরকম খাবারের এক্সপেরিমেন্ট করার ফিরিস্তি ইতিমধ্যেই অনেক লম্বা হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি আইটেম স্বতন্ত্র পোষ্টের দাবী রাখে। সেগুলো নিয়ে পরে কখনো আলাপ হবে।
আসার পরদিনই যুবায়ের ভাই নিয়ে গিয়েছিল মুজ্জামায়। ওরা বলে মুগাম্মা। মিসরীদের কাছে জিমের উচ্চারণ "গ" আর ক্বফের উচ্চারণ "আ"। তাই তাদের আঞ্চলিকতাটা ধরতে ভালই কষ্ট হয়। তবে এদের আম্মিয়ার সাথেও ফুসহার ভাল একটা যোগাযোগ আছে। ব্যাপারটা ড. শহিদুল্লাহ ফজলুল বারি রহ. ক্লাসে আমাদেরকে বলেছিলেন। হুজুরের কথা মনে পড়তেই এখন শুধু দুয়া আসে। রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা।
তো আমি ছিলাম মুজ্জামার সামনে। সেই বিশাল দালানটি দাঁড়িয়ে আছে তাহরীর স্কয়ারের দিকে মুখ করে। মুজাম্মা থেকে তাসজিল নিতে হয়। মানে হচ্ছে মিসরে আসার পরদিনই সর্বপ্রথম আমি যে জায়গায় গিয়েছিলাম সেটা ছিল তাহরীর স্কয়ার। এখানে তাহরীরের চত্বরের ছবি তোলা নিষেধ। পুলিশ দেখতে পেলে নাকি খবর আছে। তাও আজ দুপুরে লুকিয়ে এই ছবিটা তুলে ফেলেছি। কিন্তু প্রথমদিন সাহস পাইনি।সেদিন অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। যতক্ষণ তাকিয়ে থাকলে স্মৃতিপটে নিখুঁতভাবে সে দৃশ্যধারন করে রাখা যায় তার চেয়েও বেশিক্ষণ।
এরপর যখন মুজাম্মায় ঢুকার জন্য লম্বা লাইনে দাড়িয়েছিলাম তখন পেছন ফিরে তাহরীরে কিছু একটা খুজছিলাম। তাহরীরে ঠিক মাঝখানে কি শাপলার মত কিছু একটা আছে? আরে ধুর! যত্তসব হেফাজতী সেন্টিমেন্ট!
কায়রো শহরের মাইদানুল জাইশে যে বাসায় উঠেছি তার পেছনের রাস্তাটাই ১২০০ বছর পুরোনো ফাতেমী খেলাফতের প্রাচীন সব ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আছে বিশাল এলাকা জুড়ে পুরাতন সব কেল্লা। হাজার বছর আগে যে বাজার থেকে আজীজে মিসর নবী ইউসূফ আ কে ক্রয় করেছিল সে বাজারটি এখন বেশ জমজমাট। এগুলো সময় নিয়ে দেখতে হবে। জানতে হবে। আসলেই জানার ও দেখার অনেক অনেক কিছু ধারণ করে রেখেছে এই হাজার বছরের এই শহর।
No comments:
Post a Comment