মিসর, সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে নতুন বন্ধুত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। কাতার বয়কটের পর এখন মিসরের
তিরান ও সানাফির দ্বীপ হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশকে অনিপত্তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে
মিসর।
তিরান ও সানাফির দ্বীপ দুটির সামরিক
গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ আকাবা উপসাগরে এই দ্বীপ দু’টি মিসর ও সৌদি আরবের নিরাপত্তা দুর্গ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
অন্যদিকে ইসরাইলের কাছেও এই দ্বীপের
গুরুত্ব কম নয়। ইসরাইলের দক্ষিণের ইলাত নৌবন্দরে যাতায়াত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার
সাথে বাণিজ্যের জন্য এটি একমাত্র পথ। ৫০ বছর আগে মিসর তিরান প্রণালীর এ পথ বন্ধ
করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ফলাফল
হিসেবে মিসর সিনাইয়ের মতো বড় এলাকা হারায়।
মিসরের দ্বীপ হস্তান্তরের সিদ্ধান্তকে
মিসরের জনগণ মেনে নেয়নি। মিসরীদের মনে করে আব্দেল ফাত্তাহ সিসি এইভাবে মিসরের
স্বাধীনতাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। কিন্তু বর্তমান সিসির আমল অনুযায়ী মিসরে সিসি
বিরোধী কোন ধরণের আন্দোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যার ফলে সামান্য আন্দোলনেই শত শত
মানুষ গ্রেফতার হয়েছে।
একদিকে দেশের আদালত দ্বীপ হস্তান্তর
নাকচ করে দেয়। কিন্তু অতি
সম্প্রতি মিসরের পার্লামেন্ট এই হস্তান্তর অনুমোদন করেছে। যেহেতু মিসর পার্লামেন্টে
৩০ শতাংশ সংসদ সদস্য প্রেসিডেন্ট সিসি নিজে নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা রাখেন তাই আদালতের
রায়কে তোয়াক্কা না করে এই ধরণের সিদ্ধান্ত দেয়াটা অবাক হওয়ার মত কোন ঘটনা না। এবং
অন্যান্য যেইসব সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন ব্লক থেকে আসে তাদের ক্ষমতায় আসার পিছনেও
রয়েছে সিসির অদৃশ্য হাত।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলতে আছে একমাত্র
মুসলিম ব্রাদারহুড। কিন্তু তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী হয়তো জেলখানায় নয়তো দেশের
বাইরে। তাই সংসদ নির্বাচনে ব্রাদারহুড কোনো ‘ঝামেলা’ সৃষ্টি করতে পারেনি। সিসির সিদ্ধান্তই সংসদে বৈধতা পাবে, তা জানা কথা। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন আদালতের মাধ্যমে মতামত
নিতে। এতে ব্যর্থ হয়ে তিনি এ পথ ধরেছেন।
দ্বীপ হস্তান্তরের বিপরীতে মিসর কয়েক
বিলিয়ন ডলার ঋণ ও বিনিয়োগ পাবে সৌদি আরব থেকে। মিসরের দুর্বল অর্থনীতির জন্য এ
সাহায্য খুবই জরুরি। মিসরের অর্থনীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রুটির জন্য লোকজন
আলেকজান্দ্রিয়া, গিজা ও অন্যান্য শহরে রাস্তায় মিছিল
করছে। সরকার যে রেশনিং করেছিল, তাও ভেঙে পড়ছে।
কার্ড দেখানো সত্ত্বেও বেকারিগুলো পরিমাণমাফিক রুটি দিচ্ছে না। কায়রোর শহরতলিতেও
লোকজন মিছিল করেছে, পুলিশের সাথে
হাতাহাতি হয়েছে। কাফর আল শেখ প্রদেশে ভুক্তভোগীরা রেললাইন উপড়ে ফেলেছে। সরকার
মারাত্মক কারেন্সি সঙ্কট ও মুদ্রাস্ফীতিতে ভুগছে। মুদ্রাস্ফীতি ৩১.৭ শতাংশ। গত ৩০
বছরে এটাই সর্বোচ্চ। কিছু দিন আগে রমজানের সময় চিনির সঙ্কটও প্রকট আকার ধারণ করে।
জ্বালানির ভর্তুকি বাতিল করা হয়েছে এবং রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম
দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে জুন মাসে। সরকার বিশ্ববাজার থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য
প্রচুর গম আমদানি করছে। সাধারণ জনগণ উপায় না দেখে সেনাছাউনিতে অভিযোগ করছে। সেনা
অফিসাররা বলছেন, ‘না পেলে উপোস থাকো।’
এসব সেনা অফিসার এবং পেটোয়া রাজনীতিবিদদের বশে রাখার জন্য
সিসিকে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়। তাদের হাতে দিয়ে রাখা হয়েছে সার্বভৌম ক্ষমতা।
দেশের বড় বড় সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক সেনাবাহিনী। সৌদি আরব ও অন্যান্য আরব দেশ এ
খাতে নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে। এমন এক পরিস্থিতিতে মিসরের নগদ অর্থ ও বিনিয়োগ দরকার।
সৌদি আরব ও আমিরাত বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিচ্ছে। তাই ওদের কথায় উঠবস করা ছাড়া
সিসির কী-ই বা করার আছে?
মিসর-সৌদি আরবের বন্ধুত্ব পুরনো, বহুমুখী ও গভীরে প্রোথিত। ২০ লাখ মিসরীয় নাগরিক সৌদি আরবে
কাজ ও বসবাস করে। ফিবছর প্রায় সমপরিমাণ মিসরীয় হজ ও ওমরা করার জন্য সৌদি আরবে যায়।
হজের সময় হাজার হাজার মিসরীয় নাগরিক গাড়িচালক ও অন্যান্য কাজে নিয়োজিত থাকে। প্রায়
পাঁচ লাখ সৌদি লেখাপড়া ও ব্যবসায়ের জন্য মিসরে থাকে। মিসরের আল আজহার
বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিখ্যাত।
২০১১ সালের বিপ্লবে আরব গণতান্ত্রিক
মুরসি সরকারকে পছন্দ করল না। মুরসি ক্ষমতায় এসে ইসরাইলকে বিনামূল্যে দেয়া তেল
সরবরাহ বন্ধ করে দেন। ফলে ইসরাইল মুরসিকে অপসারণের চেষ্টা চালায়। তারা সামরিক ক্যু
করার জন্য সেনাপ্রধান সিসিকে সহায়তা করে। সিসি ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক
যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র হত্যাকারী সিসি সরকারকে নগদ বিপুল অর্থ ও সামরিক সরঞ্জাম
প্রদান করে।
দূরদর্শী ইসরাইল দ্বীপ হস্তান্তরকে
নিজের জন্য আশীর্বাদ মনে করেছে। এর ফলে ইসরাইল আরবদের আরো কাছাকাছি আসতে পারবে। এই
তিরান প্রণালীর নিয়ন্ত্রণ ও ইসরাইলি নৌযান চলাচলের বিষয়ে মিসরের সাথে ১৯৭৯ সালে
ইসরাইলের চুক্তি আছে। মিসরের সাথে ইসরাইলের শান্তিচুক্তিও রয়েছে। তা ছাড়া উভয়
দেশের একটা কমন শত্রু আছে। তা হচ্ছে ইরান। উভয়েই চায় ইরানকে যুদ্ধে শেষ বা কাবু
করতে। এ জন্যও উভয়ের মধ্যে সমঝোতা দরকার।
তবে এটাও ঠিক, সৌদি আরব যেমন মনে করে ইরান ও ইসরাইল তাদের শত্রু, তেমনি ইসরাইলও মনে করে ইরান ও সৌদি আরব উভয়েই তার শত্রু। সে
হিসাবকে সামনে রেখে তারা সামনে পা বাড়াতে চায়।
ইহুদিবাদীদের দ্য প্রটোকল বইতে
বৃহত্তর ইসরাইলের যে ম্যাপ রয়েছে সেখানে সৌদি আরবের মক্কা-মদিনাসহ বিরাট অঞ্চল
দেখানো হয়েছে। প্রটোকলে আরো উল্লেখ আছে, ইসরাইলি স্কুলগুলোতে নিয়মিত ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষক জোরগলায় বলেন, ‘আমরা আরবদের কী করব?’ ছাত্রছাত্রীরা আরো জোরগলায় বলে, ‘আমরা আরবদের হত্যা করব।’ মোসাদের প্রণীত, মোসাদ এজেন্টদের জন্য অবশ্যপাঠ্য, প্রটোকল বইটি আরব কর্তৃপক্ষের হাতে না পড়ার কথা নয়।
ইসরাইল এবং মিসর এখন যা চায়ঃ
গাজায় হামাস নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইসরাইল
ও মিসর চায় হামাসের পরিবর্তে ৫৫ বছর বয়সী ফাতাহ নেতা দাহলানকে ক্ষমতায় বসাবে। এতে
ফাতাহ-হামাস দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়ে গৃহযুদ্ধে রূপ নিতে পারে, যা আগেও অনেকবার হয়েছে। দাহলানের আগমনে তুরস্ক ও কাতারও
কোণঠাসা হবে, এমনই ধারণা ইসরাইল ও মিসরের। কুয়েত ও
তুরস্ক গাজার জনগণ ও হামাসকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে। দৈনিক আল ইয়াওম পত্রিকার
তথ্য মিসর ও ইসরাইল ফিলিস্তিনে আরো একটি যুদ্ধ চায়। এভাবে ইসরাইল পুরো গাজা দখল
করতে চায় এবং মিসর নেগেভ মরু এলাকায় গাজার সমান আয়তনের জমি মিসরের সাথে সংযুক্ত
করতে ইচ্ছুক। কাতার সঙ্কট মূল জিনিস নয়, বরং মূল ঘটনার শুরু। কাতার ও আলজাজিরাকে কোণঠাসা করতে পারলে পরিকল্পনা
বাস্তবায়ন সহজ হবে।
এসব কারণেই ৩১ বছরের মোহাম্মদ বিন
সালমানের ক্রাউন প্রিন্স হওয়াতে ইসরাইল বিশেষ স্বস্তি পাচ্ছে। অথচ সৌদি আরব
ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি। সালমানের কাছে ইরান ও শিয়া গোষ্ঠী প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
ইয়েমেনের যুদ্ধ তিনিই শুরু করেছেন। তার আমলে ইসরাইল-সৌদি আরব আরো ঘনিষ্ঠ হবে, এমনই আশা ইহুদিদের। এর মধ্যে বিন সালমানকে ইসরাইলে ভ্রমণের
আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং নেতানিয়াহুর সৌদি আরব সফরের জন্য বাদশাহ সালমানকে
অনুরোধ করা হয়েছে। ইরানের সাথে ভবিষ্যতের কোনো যুদ্ধে ইসরাইলি সেনা-যুদ্ধাস্ত্র ও
ইন্টেলিজেন্স জরুরি বলে অনেকে মনে করে। অনেকের ধারণা, ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি আরব ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক করবে এবং
ইরানের পক্ষে যারা তাদের বিরুদ্ধে যাবে। বাস্তবতা সৌদি আরবকে কোথায় নিয়ে যাবে তা এ
মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে সৌদি-ইরান সম্পর্ক আরো খারাপ আকার ধারণ করতে পারে।
ইসরাইলের হারেজ পত্রিকা জানায়, ‘ইরানের বিষয়ে মোসাদের শীর্ষ কর্মকর্তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ইসরাইলের সাথে গোপন সহযোগিতা নিশ্চিত করা হয় এবং দেশটির নিরাপত্তা ও ইরানের
বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’ ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিবারম্যানও সৌদি আরবের সাথে ‘পূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক’ সম্পর্ক স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।
হজ ও ওমরার অব্যবস্থাপনা দূর করতে
সাদ্দাম হোসেন মক্কা ও মদিনার দায়িত্বভার পরিত্যাগ করে বিভিন্ন ইসলামি দেশের
রাষ্ট্রপ্রধানদের সমন্বয়ে হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক কমিটি গঠন করার
জন্য সৌদি আরবের বাদশাহকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এতে সৌদি বাদশাহ ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে
ইরাকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে তা প্রভূত উন্নতি হয়েছে, যে জন্য সৌদি বাদশাহ এবং তাদের পরিকল্পনা প্রশংসার দাবিদার। অনেকের মত, সৌদি আরব ‘আরব বসন্তকে’ আরবদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান মনে করে।
সৌদি আরব ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক
স্বাভাবিক করতে চায়, যদিও ফিলিস্তিন
সমস্যার বিষয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করেনি। ইসরাইল গাজা এলাকায় অহরহ বোমা বর্ষণ করে
আসছে। গাজা যেন এক পরিত্যক্ত নগরীর মতো। কাতার গাজাবাসীকে মিলিয়ন ডলার মানবিক
সহায়তা দিচ্ছে। তুরস্কও কিছু সহায়তা দেয়। এসব মানবিক সহায়তা না পেলে দশক ধরে
অবরুদ্ধ গাজাবাসীর কী দুর্দশা হতো তা শুধু কল্পনা করার বিষয়। ২০০০ সালে
হিজবুল্লাহর আক্রমণের তীব্রতার কারণে ইসরাইল দখলকৃত অনেক জায়গা ছেড়ে দেয়। তারা
ইরানপন্থী এবং ইরানি সহায়তা পেয়ে থাকে। ইসরাইল হিজবুল্লাহ ও হামাসকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছে। এখন
সৌদি আরবও তা বলেছে। অথচ হামাস ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বাজি
রেখে লড়েছে। সৌদির অভিযোগ, হামাসের সাথে
ব্রাদারহুডের সম্পর্ক রয়েছে। এই অবস্থায় নেতানিয়াহু বুক ফুলিয়ে বলছেন, ‘আমরা আরবদের সহযোগী, শত্রু নই।’
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে বিপুল
সামরিক অস্ত্রসম্ভার পাচ্ছে এবং গোপনে যেসব সামরিক সরঞ্জাম পাবে; সেসবে বলীয়ান হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ইরানের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ
নিতে পারবে। তবে ইরানের আক্রমণও হবে ভয়ঙ্কর। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও
ইরাক যুদ্ধের সেনানায়ক কলিন পাওয়েল বলেছেন, ইরানকে খাটো করে দেখলে যুদ্ধে পস্তাতে হবে। খোদ মার্কিন সরকার ইরানে কোনো
হামলা চালায়নি। ইসরাইলও সামরিক হামলা চালায়নি। তবে গুপ্ত হত্যাকাণ্ড ও সাইবার
হামলা চালিয়েছে। আমরা ইতিহাসের দিকে নজর দিলে দেখব, আমেরিকার প্রেসিডেন্টরা ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে সফলতা লাভ করতে
পারেননি। এখন ট্রাম্পের পালা। মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানের সাথে যেকোনো সংলাপের
বিরুদ্ধে। তার মতে, ‘ইরান এই অঞ্চলের
নেতৃত্ব দিতে চায়, মক্কা ও মদিনা
হস্তগত করতে চায় এবং ইরানের মতাদর্শের কারণে তাদের সাথে কোনো সমঝোতার বৈঠক করা যায়
না।’
বাস্তবতা হলো, মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তর মতভেদ আছে, সে কারণে এক দল আরেক দলের বিরুদ্ধে কাজ না করে সবাইকে
একসাথে নিয়ে আগে মুসলিম উম্মাহকে সংগঠিত করা দরকার।
ইসরাইলের চিন্তা-ভাবনা ছিল, জেনেভা চুক্তি স্বাক্ষর হলেই ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক
ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে উঠে আসবে, কিন্তু এটা এত সহজ নয়। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল সামরিক জোট যদি বিন্দুমাত্র ভুল
করে,
তখন ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের কথাই সত্যে
পরিণত হতে পারে- ‘পৃথিবীর মানচিত্রে
কোনো ইসরাইল থাকবে না।’ তখন যুক্তরাষ্ট্র ও
ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাজনীতির নতুন খাতা খুলতে হবে। ২০০৫ সালেই ইরান আক্রমণের জন্য
তোড়জোড় করেও ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবুজ সঙ্কেত পায়নি। এখন যদি যুক্তরাষ্ট্র
উত্তর কোরিয়া নিয়ে যুদ্ধ শুরু করে তবে ইরানের বিষয়টি আরো পিছিয়ে যাবে, যা ইসরাইল চায় না। শক্তিশালী একটি মুসলিম দেশকে ঘায়েল করার
জন্য পাশের আরব দেশগুলোকে নিয়ে ইরানবিরোধী মোর্চা তৈরির প্রচেষ্টা চলছে কয়েক যুগ
ধরে। কুয়েতকে ‘ফিরে আসার জন্য’ আরব জোট মাত্র ১২ দিন সময় দিয়েছে, কিন্তু ইসরাইলের বিরুদ্ধে তারা ৬০ বছরেও কোনো কর্মসূচি দিতে
পারেনি;
এটা অবাক করার বিষয় নয় কি?
লেখক : মো: বজলুর রশীদ, অবসরপ্রাপ্ত
যুগ্মসচিব, বাংলাদেশ সরকার
১২ জুলাই ২০১৭
No comments:
Post a Comment