Friday, November 3, 2017

কায়রোর দিনলিপি ১৩


শুনলাম আপনারা নব্বই টাকা কেজি দরে পেয়াজ খাইতেছেন! দেশে থাইকা আর কি হবে! মিসরে চইলা আসলেই পারেন!

মিসরে গত দুই মাসে সব কিছুর মূল্য দ্বিগুণ হওয়ার পরও আমরা এখন তিন থেকে সাড়ে তিন পাউন্ড কেজি দরে পেয়াজ খাই। মানে আমাদের দেশীয় টাকার হিসেবে ষোল টাকা পড়ে। আর তিন কেজি পেয়াজ একসাথে নিলে দশ পাউন্ড রাখে। এইটুকু মূল্যবৃদ্ধিতেই মিশরীরা চরমভাবে ক্ষেপে আছে সরকারের উপর। এখন তো ট্যাক্সি আর উবারওয়ালারা আযহারের ওয়াফেদীন ছাত্রদের থেকেও ভাড়া বাড়িয়ে নেয়। কম রাখতে বললেই বলে,
"মুশ ইয়ানফা কাদা, আশান দিলওয়াতি কুল্লু হাগা গালি, যাইত গালি, বাতাতিস গালি"।
অনুবাদঃ "এমনে ভাড়া কম দিলে কাম হইতোনা। কারণ এখন সবকিছুর দাম বাইড়া গেছে, তেলের দাম বাড়ছে, আলুর দাম বাড়ছে।"

অথচ আলুর দাম বেড়েই কিন্তু আড়াই পাউন্ড হয়েছে। মানে দশ টাকা কেজি। তেলের দামটা হুট করে বেড়ে গেছে। এসে দেখেছিলাম লিটার ছিল আড়াই পাউন্ড। মাত্র দুই মাস পর হয়ে গেল পাচ পাউন্ড। মিশরীদের জন্য এসব অবশ্য একটু বেশীই। কারণ সবকিছুর মূল্য যেভাবে বাড়ানো হয়েছে সে তুলনায় তাদের বেতন বা আয়-রোজগার কিছুই বাড়েনি। মিসর দেশটাই তো একরকম বিদেশী প্রভূদের ভিক্ষার উপর চলছে। আবার এই ভিক্ষার বড় অংশ খরচ করতে হয় সামরিক বাহিনীর সন্তুষ্টির পেছনে। তা নাহলে ক্ষমতা নিয়ে টান পড়বে যে! মিসরের রিজার্ভ এখন বাংলাদেশ থেকে কম হলেও এখানে পুঁজিপতির সংখ্যা আবার কম না। এক শ্রেণির লোক এসব গরিবদের হক মেরে এখানেও সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে।

ইদানীং অনেক ক্ষেত্রেই মিসরের সাথে বাংলাদেশের অদ্ভুত সব মিল খুজে পাই। তবে জনসাধারণকে পেয়াজের মূল্যের যাঁতাকলে পিষ্ট করার মাধ্যমে আমাদের দেশেও পুঁজিপতিদের উদরপূর্তি করা হচ্ছে কিনা, এবং বাংলাদেশও কি মিসরের পথেই হাটছে কিনা সে বিষয়ে নিয়ে কথা বলার জন্য বিজ্ঞজনেরা আছেন।
আপাতত একটা ধান্ধা নিয়া আলাপ করি চলেন। :p

আগে কাহিনী শুনেন। মিসরে আমরা এত সস্তায় পেয়াজ খাই শুনে কিন্তু ইতিমধ্যেই অনেক বাঙালি ভাইয়েরা পেয়াজ খরিদ করতে মিশরে আসার তীব্র আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছেন।
ভাবতেছি, দেশে পেয়াজ পাঠানোর ব্যবসা শুরু কইরা দিলে কেমন হয়! মানে ধরেন, যদি পাঠানোর খরচ কেজিপ্রতি বিশ টাকাও পইড়া যায় তাও কিন্তু মিনিমাম তেষট্টি টাকা কইরা লাভ থাকতেছে আমার।

তো পাঠায় দিব নাকি এক জাহাজ পেয়াজ? আমাদের আদার ব্যাপারীদের দিয়া তো আর কিছু হইলোই না। আপাতত পেয়াজের ব্যাপারীরাই নাইলে জাহাজের খবর নিতে থাকলো! খারাপ হয়না কিন্তু ব্যাপারটা

No comments:

Post a Comment

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...