Thursday, November 2, 2017

নীলনদ

নীলনদের পানি কি সত্যিই নীল? ছবিতে কিন্তু তাই দেখা যাচ্ছে। এটাকে শুধুই আকাশের রঙ বলে দিলেও হবে না। কারণ সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতে নীল যে বাহারি রূপ ধারণ করে সেটা অবশ্যই আকাশ থেকে নেওয়া না। তাছাড়া মধ্যরাতে নীলের নিস্তব্ধতায় বসে কফির কাপে চুমুক দিতে পারার মুগ্ধতা যে কতটা অবর্ণনীয় সে কথা আর নাইবা বললাম।

নীল নদের আসল রঙটা তাহলে কি? বাসা থেকে নীলের এই পাড়টায় এসে গবেষণায় বসতে আমার সাত পাউন্ড খরচ হয়। মেট্রোতে দুই পাউন্ড আর এই পার্কে ঢুকতে পাঁচ পাউন্ড। যেহেতু বাসা থেকে নীলের দূরত্ব মাত্র দশ মিনিটের তাই অবসরে এখানে বসে বসে এ রহস্যের কূলকিনারা করার চিন্তাটা মন্দ না।

নাইল রিভারের সাথে মূলত দুইটা লেক মিলিত হয়েছে। একটা হচ্ছে ইথোপিয়ার তানা লেক। যার পানি আসলেই নীল। আরেকটি ভিক্টোরিয়া লেক। এটার পানি সাদা। তাই বলা যেতে পারে নীল আর সাদার মিশ্রণেই এই মোহনীয় রঙটা তৈরী হয়। তবে নামকরণের সাথে কিন্তু রঙয়ের দূরতম কোন সম্পর্কও নেই।

ইংরেজীতে বলা হয় নাইল রিভার। মূল শব্দ নেইলোস। গ্রীক ভাষা থেকে আগত। যেহেতু নেইলোস অর্থই নদী তাই নীলের সাথে আলাদা করে নদী বা রিভার বলে সময়ক্ষেপণ করা নিষ্প্রয়োজন।

মিসরের হাজার বছরের ইতিহাসে প্রচুর মিথ ও কল্পকাহিনীর মিশ্রণ আছে। কিন্তু নীলনদকে ঘিরেই যে মিসরের অতি প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল ইতিহাসের এই অংশটুকু অনেকদিক বিবেচনায় নির্ভরযোগ্য। তাই এটা জেনে রাখা দরকার।
প্রাচীনকাল থেকে আজ পর্যন্ত আকাশ থেকে বৃষ্টি নামক কোন কিছুর বর্ষণ মিশরীয়দের কাছে বেশ অবাককর ঘটনা। কারণ এই নীলই হাজার বছর ধরে তাদের পানির প্রয়োজন পূরণ করে আসছে। বৃষ্টির দেখা বছরে দুই এক দিন মিললেও তার ডিউরেশন বড়জোর কয়েক মিনিট। শুরু না হতেই শেষ হয়ে যায়।


সেই বিকেলে বসে বসে এসব ভাবছিলাম আর সন্ধ্যার অপেক্ষা করছিলাম। বর্ণিল আলোয় সাজানো প্রমোদতরীগুলো সন্ধ্যার পরই বেশী সুন্দর দেখা যায়। সৌন্দর্যের অহমিকায় পাল্লা দিয়ে প্রকৃতিকে দৃষ্টিনন্দন করে তোলে নীল আর তার বুকচিড়ে চলা প্রমোদতরী।

No comments:

Post a Comment

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...