Wednesday, November 1, 2017

ইসলাম কি নারীদের তুচ্ছ ভাবে? একটি নারীবাদী আক্রমণের জবাব


প্রশ্নঃ
মুসলিম শরীফের তিন খন্ডে নিকাহ অধ্যায়ের ৩৫১২ নং হাদীসে বলা হচ্ছে,"দুনিয়া উপভোগের উপকরণ এবং দুনিয়ার উত্তম উপভোগ্য উপকরণ হলো পূন্যবতী নারী"।
অনেক উলামারা আজকাল লেখেন এই পূজিবাদী সমাজ,রাষ্ট্রব্যবস্থা নারীকে উপভোগের পণ্য বানিয়ে নিচ্ছে। তাহলে এই হাদীসের ক্ষেত্রে ব্যখ্যা কি হবে? হাদিসের শব্দ প্রয়োগ কি নারীদের পণ্যই বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ
ইসলামের প্রশ্নটা হচ্ছে উপভোগটা কি পুরা দুনিয়ার মানুষ অবাধ স্বাধীনতার সাথে করবে নাকি এতে কোন নিয়ম নীতি থাকবে। পুঁজিপতিদের নারীভোগ কোন নিয়ম মেনে হয়না। টাকা দিয়ে তারা নিয়ম খরিদ করে। কিন্তু অপরদিকে ইসলাম তার বেধে দেওয়া নিয়মনীতিকে আদর্শ সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার উপায় হিসেবে উপস্থাপন করে। পার্থক্য এইটাই।
আর ন্যাচারাল ও জেনেটিক একটা ব্যাপার হল নারী চায় তাকে তার পুরুষ ভোগ করুক। এটা তার বাইয়োলজিকাল আর্জ। এখন কোন নারী "বাধ ভেঙে দিয়ে" "স্বাধীন" হয়ে দুনিয়ার সকল পুঁজিপতির ভোগের বস্তু হতে চায়। আর কোন নারী মনে করে সে শুধু তার স্বামীর ভোগের জন্য নিজেকে রেষ্টিক্টেড রাখবে। তার ধর্মের এই নীতির অনুসরণেই সে নিজের নারীত্বের সম্মান খুজে পায়। তবে ইসলামের নীতি অনুযায়ী দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নারীকে "উপভোগ্য উপকরণ" শব্দে ব্যাখ্যা না করে আরো শালীন ও ইতিবাচক কোন অর্থে ব্যাখ্যা করা উচিত।

তাহলে হাদিসে এমন শব্দ কেন বলা হল যার অর্থ হয় পণ্য? এই প্রশ্নের উত্তরটা আসলে "মাতা" শব্দের অর্থের ব্যপকতার মধ্যেই আছে। "মাতা" বলা হয় যার মধ্যে এমন উপকার নিহিত যেই উপকার স্বার্থহীন না। উভয়েরই এক্ষেত্রে অলিখিত একটি স্বার্থ আছে। এবং "মাতা" শব্দের আরো সুন্দর একটি অর্থ হচ্ছে যেই জিনিষ সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে প্রবল আগ্রহ থাকে। সে হিসেবেও স্বার্থটা হচ্ছে এখানে অঙ্গিকারনামা। সংসারে স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা যেই অঙ্গিকারের উপর থাকে সেটাকেই স্বার্থ বলে। এই স্বার্থ ছাড়া সংসার একবিন্দুও টিকবেনা। এবং মাতা এর এই দ্বিতীয় অর্থটাও সম্পূর্ণ ইতিবাচক। কারণ এই "মাতা" এর সংরক্ষণও "মাতা" এর উপভোগকারীই করবে। আর এই পুরা প্রসেসটাই একটা অঙ্গিকার। শব্দের শুধু একটা অর্থের মধ্য দিয়া বুঝতে গেলে এর ব্যাপকতাটা বুঝা যাবেনা।

স্বামীর ভোগের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দেওয়ার কথা তো হাদিসে আছেই। স্ত্রীর জান্নাত স্বামীর সন্তুষ্টকরণে, আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদার অনুমোদন থাকলে সেইটা হইতো স্ত্রীর জন্য স্বামীরে সেজদা। তো এইসব কথা তো ইসলাম স্বামীকে বলে নাই, স্ত্রীর জন্য নির্দেশনা। কিন্তু উলটা দিকে স্বামীকে বলা হয়েছে তোমার স্ত্রী তোমার জন্য সম্পূরক, লেবাস। সেই পুরুষ সমাজে সর্বোত্তম ব্যক্তি নির্বাচিত হবে যেই পুরুষ তার মহিলার কাছে সর্বোত্তম। তো এখানে ইসলামের ভারসাম্য রক্ষার নীতিটা খেয়াল করে দেখলে মুগ্ধই হতে হয়। একদিকে ইসলাম স্ত্রীকে বলছে তুমি তোমার স্বামীর কাছে ভালো হওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করো। আবার স্বামীরে বলছে তুমি তোমার বউয়ের কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে থাকো। এটাই লাইফে শতভাগ সুখী দাম্পত্যজীবনের ইফেক্টিভ থিওরি।
এই কনসেপ্টেই তো ক্যাফে ৯৯৯ দেখানো হল এই ঈদে। ইসলামে দায়িত্ববোধ অনুসারে প্রত্যেকের জন্যই ম্যাসেজ আছে। সমস্যাটা হয় যখন একজন আরেকজনের ম্যাসেজ ধরে টানাটানি করে।

No comments:

Post a Comment

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...