ইতিহাস বিকৃতির এই সময়ে রোহিঙ্গা নির্যাতনের সূত্রপাত নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা থেকে জেনে আসা প্রকৃত কিছু সত্য তুলে ধরার প্রয়োজন বোধ করছি।
রোহিঙ্গা হত্যাকে বৈধ করার জন্য ঘটনার যে অংশটুকু এখন সর্বত্র প্রচার করা হচ্ছে তা হলঃ
"গত বছর ৭ই অক্টোবর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলা করার জের ধরেই রোহিঙ্গাদের উপর এই অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী"
ঘটনা এর আগে আরো কিছু ঘটেছিল। যেই অংশটুকুকে আড়াল করে প্রকৃত সত্যকে চাপা দেয়া হচ্ছে। দুঃখের বিষয় হল, আমাদের দেশীয় মিডিয়াগুলোও এখন এতটাই বিদেশী সংবাদের অনুবাদ আর অনুকরণ নির্ভর যে তারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে থাকার পরও এই আংশিক সত্যকেই প্রচার করছে। ঘটনার শুরুর অংশটুকু না লিখে নিজেরা বিভ্রান্ত হচ্ছে ও মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বলেছিলাম না? এইভাবেই দেখবেন একসময় রোহিঙ্গা হত্যার বৈধতার দলিলপত্র বের হবে।
ঘটনার শুরুতে যা ঘটেছিলঃ
২০১৬ সালের অক্টোবরে অভিযান শুরু হওয়ার আগে একটি গুজব ছড়ানো হয়। তা হল, "রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে"। রোহিঙ্গাদের প্রবল ধারণা যে এই কাজটা মগরাই করেছিল। কারণ রাখাইনে এই মগরাই রোহিঙ্গাদের উপর চরম বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে।
গুজবে বিশ্বাস করে সেনাবাহিনীর ছোট একটা গ্রুপ এসে রাখাইনের একটা গ্রামে তল্লাশি চালায়। অনেক খুজেও তারা রোহিঙ্গাদের থেকে কোন ধরণের অস্ত্র বা যুদ্ধের প্রস্তুতির প্রমাণ পায়না। কিন্তু মুসলিম বিদ্বেষী সেই সেনাবাহিনীকে উস্কানী এতটাই মারাত্মকভাবে দেয়া হয়েছিল যে, তারা তল্লাশি নিতে গিয়ে শুধুমাত্র সন্দেহবশত চারজন রোহিঙ্গা যুবকের উপর অকথ্য নির্যাতন শুরু করে এবং নির্যাতনের একপর্যায়ে তাদেরকে মেরে ফেলে। যেহেতু এভাবে মেরে ফেলাটা গত অর্ধশতাব্দী ধরে সেনাবাহিনীর কাছে নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা তাই রোহিঙ্গারা যে এর জবাব দিতে উপর চড়াও হবে সেটা তারা ভাবতে পারেনি। তাই তাদের কোন প্রস্তুতিও ছিল না। বিগত চার বছর নির্যাতন থেকে বিরত থাকায় হয়তো রোহিঙ্গারা নিজেদের ভেতরের পরাজিত মনোভাব কিছুটা কাটিয়ে উঠেছিল। এ কারণেই হয়তো গ্রামে গুটিকয়েক সেনাসদস্য ঢুকে বিনা কারণে তাদের চারজন যুবককে হত্যা করে ফেলবে এটা রোহিঙ্গারা মানতে পারেনি।
ঘটনার এই অংশটুকু সমস্ত সংবাদমাধ্যম চেপে গেছে। তারা বর্ণনা শুরু করেছে এর পর থেকে। এরপর সেই গ্রামের রোহিঙ্গারা ক্ষোভ আটকে না রেখে সেই সেনাবাহিনীর উপর চড়াও হয় এবং গণধোলাই দিয়ে মেরে ফেলে। এই ঘটনায় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। "রোহিঙ্গারা সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে" এই গুজবকে সত্য ভাবার যথেষ্ট কারণ খুজে পায় মিয়ানমার প্রশাসন। এবং আলজাযিরার মতে, এইভাবে গায়ে পড়ে কারণ খুজে বের করাটাও মিয়ানমারের পরিকল্পনার অংশ। তাই তাঁরা দুনিয়ার গণমাধ্যমকে বলেছে, এই গুজবই সত্য। তোমরা এটাকেই বিশ্বাস করো এবং মানুষকেও বিশ্বাস করাও।
চেপে যাওয়া এই সত্যকে বিশ্বাস করার যথেষ্ট যুক্তি ও কারণ রয়েছে। সরেজমিনের ঘুরে রিলায়েবল সোর্সেস জমা করে আলজাযিরা ওয়ারল্ডক্লাস একাডেমিকসদের থেকে বিশ্লেষণ নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরী করেছে। তাতে এসব কিছুই যে পরিকল্পিত সে বিষয়টি বেশ স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সীমান্তের শেষ প্রান্তে বসবাস করা বাঙালিদের এইসব বর্ণনার থেকে যা কোট করেছি তা আমার নিজ কানে শোনা। টেকনাফের বসবাসরত বাঙালী অথবা সেখানে আশ্রয় নেয়া যে কোন রোহিঙ্গাকে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন যে এই গণহত্যার সূত্রপাত কিভাবে, তারা সবাই আপনাকে অবিকল পুরো এই ঘটনাটাই বলবে। তাদের বর্ণনায় যদি মিথ্যা বা বানোয়াট কিছু থাকতো তাহলে এতগুলো মানুষ এতটা অভিন্নভাবে কখনোই বলতে পারতো না।
রোহিঙ্গা হত্যাকে বৈধ করার জন্য ঘটনার যে অংশটুকু এখন সর্বত্র প্রচার করা হচ্ছে তা হলঃ
"গত বছর ৭ই অক্টোবর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলা করার জের ধরেই রোহিঙ্গাদের উপর এই অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী"
ঘটনা এর আগে আরো কিছু ঘটেছিল। যেই অংশটুকুকে আড়াল করে প্রকৃত সত্যকে চাপা দেয়া হচ্ছে। দুঃখের বিষয় হল, আমাদের দেশীয় মিডিয়াগুলোও এখন এতটাই বিদেশী সংবাদের অনুবাদ আর অনুকরণ নির্ভর যে তারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে থাকার পরও এই আংশিক সত্যকেই প্রচার করছে। ঘটনার শুরুর অংশটুকু না লিখে নিজেরা বিভ্রান্ত হচ্ছে ও মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বলেছিলাম না? এইভাবেই দেখবেন একসময় রোহিঙ্গা হত্যার বৈধতার দলিলপত্র বের হবে।
ঘটনার শুরুতে যা ঘটেছিলঃ
২০১৬ সালের অক্টোবরে অভিযান শুরু হওয়ার আগে একটি গুজব ছড়ানো হয়। তা হল, "রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে"। রোহিঙ্গাদের প্রবল ধারণা যে এই কাজটা মগরাই করেছিল। কারণ রাখাইনে এই মগরাই রোহিঙ্গাদের উপর চরম বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে।
গুজবে বিশ্বাস করে সেনাবাহিনীর ছোট একটা গ্রুপ এসে রাখাইনের একটা গ্রামে তল্লাশি চালায়। অনেক খুজেও তারা রোহিঙ্গাদের থেকে কোন ধরণের অস্ত্র বা যুদ্ধের প্রস্তুতির প্রমাণ পায়না। কিন্তু মুসলিম বিদ্বেষী সেই সেনাবাহিনীকে উস্কানী এতটাই মারাত্মকভাবে দেয়া হয়েছিল যে, তারা তল্লাশি নিতে গিয়ে শুধুমাত্র সন্দেহবশত চারজন রোহিঙ্গা যুবকের উপর অকথ্য নির্যাতন শুরু করে এবং নির্যাতনের একপর্যায়ে তাদেরকে মেরে ফেলে। যেহেতু এভাবে মেরে ফেলাটা গত অর্ধশতাব্দী ধরে সেনাবাহিনীর কাছে নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা তাই রোহিঙ্গারা যে এর জবাব দিতে উপর চড়াও হবে সেটা তারা ভাবতে পারেনি। তাই তাদের কোন প্রস্তুতিও ছিল না। বিগত চার বছর নির্যাতন থেকে বিরত থাকায় হয়তো রোহিঙ্গারা নিজেদের ভেতরের পরাজিত মনোভাব কিছুটা কাটিয়ে উঠেছিল। এ কারণেই হয়তো গ্রামে গুটিকয়েক সেনাসদস্য ঢুকে বিনা কারণে তাদের চারজন যুবককে হত্যা করে ফেলবে এটা রোহিঙ্গারা মানতে পারেনি।
ঘটনার এই অংশটুকু সমস্ত সংবাদমাধ্যম চেপে গেছে। তারা বর্ণনা শুরু করেছে এর পর থেকে। এরপর সেই গ্রামের রোহিঙ্গারা ক্ষোভ আটকে না রেখে সেই সেনাবাহিনীর উপর চড়াও হয় এবং গণধোলাই দিয়ে মেরে ফেলে। এই ঘটনায় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। "রোহিঙ্গারা সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে" এই গুজবকে সত্য ভাবার যথেষ্ট কারণ খুজে পায় মিয়ানমার প্রশাসন। এবং আলজাযিরার মতে, এইভাবে গায়ে পড়ে কারণ খুজে বের করাটাও মিয়ানমারের পরিকল্পনার অংশ। তাই তাঁরা দুনিয়ার গণমাধ্যমকে বলেছে, এই গুজবই সত্য। তোমরা এটাকেই বিশ্বাস করো এবং মানুষকেও বিশ্বাস করাও।
চেপে যাওয়া এই সত্যকে বিশ্বাস করার যথেষ্ট যুক্তি ও কারণ রয়েছে। সরেজমিনের ঘুরে রিলায়েবল সোর্সেস জমা করে আলজাযিরা ওয়ারল্ডক্লাস একাডেমিকসদের থেকে বিশ্লেষণ নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরী করেছে। তাতে এসব কিছুই যে পরিকল্পিত সে বিষয়টি বেশ স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সীমান্তের শেষ প্রান্তে বসবাস করা বাঙালিদের এইসব বর্ণনার থেকে যা কোট করেছি তা আমার নিজ কানে শোনা। টেকনাফের বসবাসরত বাঙালী অথবা সেখানে আশ্রয় নেয়া যে কোন রোহিঙ্গাকে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন যে এই গণহত্যার সূত্রপাত কিভাবে, তারা সবাই আপনাকে অবিকল পুরো এই ঘটনাটাই বলবে। তাদের বর্ণনায় যদি মিথ্যা বা বানোয়াট কিছু থাকতো তাহলে এতগুলো মানুষ এতটা অভিন্নভাবে কখনোই বলতে পারতো না।
No comments:
Post a Comment