সিরিয়ার যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে আগে এর পক্ষ বিপক্ষগুলো বুঝে নেওয়াটা জরুরী। এই যুদ্ধক্ষেত্রে মোটাদাগে পক্ষগুলোকে দেখলে চারটি পক্ষ দেখা যাবে।
১ সরকার প্রধান বাশার আল আসাদ ও তার বাহিনী
২ বিদ্রোহী গ্রুপ, যারা সরকার পতনের ডাক দিয়েছে
৩ আইএস
৪ কুর্দি
এদের প্রত্যেকের সাথেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বৈদেশিক মিত্রের মদদ আছে।কিন্তু বিষয় হল বিদেশী মদদদাতাদের মধ্যে অনেকেই সরাসরি স্বীকার করে না
যে সিরিয়া যুদ্ধে কে কাকে কিভাবে সাহায্য করছে। যার ফলে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গভীর নজর না রাখলে পক্ষ বিপক্ষ নির্ণয় করতে চরম সংশয়ে পড়তে হয়।
নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে যারা নিয়মিত সিরিয়া যুদ্ধের খবরাখবর রাখেন তারা জেনে থাকবেন, স্বাভাবিকভাবে নিয়ম মত দুই পক্ষের সংঘাতের মাধ্যমেই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। একদিকে ছিল সরকার প্রধান বাশার আল আসাদ ও তার বাহিনী, অন্যদিকে সরকার পতনের আন্দোলনে নামা বিদ্রোহী গ্রুপ।
যুদ্ধের বিভিন্ন সময়ে একদিকে বিদ্রোহীগ্রুপদের সমর্থন দিয়েছে সৌদি, তুরস্ক, জর্ডান আর আমেরিকার ট্রাম্প এডমিনিস্ট্রেশন।
অন্যদিকে সরকার প্রধান বাশার আল আসাদের সমর্থনে ছিল রাশিয়া, ইরান ও লেবাননের শিয়া অধ্যুষিত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। বলাবাহুল্য, হিজবুল্লাহ ইরান ও সিরিয়া সরকার থেকে আর্থিক ও রাজনৈতিক মদদ গ্রহণ করে। এবং অন্যদিকে ইউরোপ আমেরিকা কানাডা ও ইসরাইল হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সংগঠক সাব্যস্ত করে।
যুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপটঃ
২০১১ সালে মার্চ মাসে সিরিয়ার স্বৈরাচার সরকার বাশারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সূচনা করে বিক্ষোভকারীরা। অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আরবদের এই জাগরণের সময়টাকেই "আরব বসন্ত" বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ক্ষমতার নেশায় বুদ হয়ে থাকা বাশার আল আসাদ সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের উচ্ছেদ করতে সরাসরি গুলি চালানোর আদেশ দেয় তার সেনাবাহিনীকে। এতে বিক্ষোভ নস্যাৎ হয়ে সাময়িকভাবে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ে। কিন্তু সেই দমন পীড়নের ফলে বিক্ষোভকারীদের চাপা ক্ষোভ আরো ভয়ংকর রূপ নেয়। পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে সে বছর জুলাই মাসে পুনরায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে সিরিয়ান বিক্ষোভকারীরা। আর এবারের বিক্ষোভ রূপ নেয় সশস্ত্র বিদ্রোহে। সিরিয়ান সেনাবাহিনী থেকে একটি দল বের হয়ে বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দেয়। শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
২০১২ সালে বিশ্বের অন্যান্য হক্বপন্থী জীহাদী
সংগঠন সেখানে গিয়ে বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিতে শুরু করে। এতে বিদ্রোহীরা আরো শক্তিশালি হতে থাকে। ফলে বাশারও ধীরে ধীরে কোণঠাসা হতে থাকে। একটা পর্যায়ে বাশার আল আসাদ সিরিয়ার জেল
থেকে মুজাহিদদের মুক্তি দেয়া শুরু করে।
মুজাহিদদেরকে সন্দেহজনকভাবে মুক্ত করে দেওয়াটা অনেকে বিদেশী শক্তির মদদ গ্রহণ করার জন্য বাশারের কূটচাল বলে মনে করে থাকেন। কারণ জিহাদী শক্তিকে "সন্ত্রাস" বলে দেখাতে পারলে বিদেশী মদদ পাওয়ার বিষয়টি এখন খুবই কমন একটা ব্যাপার।
তবে অনেকে আবার ভিন্ন কথাও বলে থাকে। কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল বলেই শেষ পর্যায়ে বাধ্য হয়েছিল মুজাহীদদের মুক্তি দিয়েছিল বাশার সরকার।
বাশারের এই ক্রান্তিলগ্নে প্রথম
মিত্র হিসেবে পাশে দাঁড়ায় ইরান। এবং যেসব বুদ্ধিজীবীরা এই প্রেক্ষাপটকে শিয়া সুন্নি
বিরোধ বলে আখ্যা ও ব্যাখ্যা দিতে চায়, বাশার সরকারকে এইভাবে মদদ দিতে এগিয়ে এসে মাধ্যমে সেইসব বুদ্ধিজীবীদের হাতে প্রথমবারের মত দলিল তুলে দেয় ইরান।
এরপর শুরু হয় ইরান+বাশার বনাম বিদ্রোহীদের যুদ্ধ। ২০১২ এর শেষ দিকে এমন সময়ও গেছে যখন ইরান প্রত্যেকদিন কার্গো ফ্লাইট পাঠাতো সিরিয়াতে। যার প্রত্যেকটির সাথে থাকতো একশরও বেশী হাইলি ট্রেইন্ড কমান্ডার।
ইরান বাশারের পাশে দাড়ানোর পরই সৌদি
আরব সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপকে অস্ত্র ও অর্থের যোগান দেয়া শুরু করে। সৌদির সাথে এগিয়ে আসে তুরস্ক
ও জর্ডান।
অতঃপর যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রথম সশস্ত্র গ্রুপ হিসেবে আগমণ ঘটে হিযবুল্লাহর। বাশারকে শক্তিশালী করতে
ইরানের নির্দেশেই হিযবুল্লাহ যুদ্ধে যোগ দেয়।
আমেরিকায় তখন বারাক ওবামার শাসন চলছিল। ওয়ার অন টেররে মিশনে সে সফলতা দেখাতে উদগ্রীব। তাই সিরিয়ার অত পক্ষ নির্ণয়ের প্যাচে ঢুকার সময় ওবামার হাতে ছিল না বলেই হয়তো জঙ্গিবাদ বিরোধী মুখস্থ বয়ান দিয়ে নিজের মোড়লগিরি টিকিয়ে রাখার গুরুদায়িত্বটা পালন করে যাচ্ছিল সে।
তখন উড়ে এসে জুড়ে বসে ওবামা এডমিনিস্ট্রেশন থেকে
সৌদিকে বলা হল উগ্রবাদীদের অর্থের যোগান দেয়া বন্ধ করতে।
উগ্রবাদী কারা এর ব্যাখ্যা আমেরিকাও দিচ্ছিল না। একটা সরল সমীকরণে গিয়ে নিজেদের জঙ্গি গেইম খেললো তারা।
বাশার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ! এ কি করে হয়! এরাই তো জঙ্গিবাদ, এদেরকেই থামাতে হবে। অতসব বুঝার কাজ নেই, সৌদি যেহেতু পোষ মেনে আছে অতএব তাদেরকে একটা ধমক দিয়ে দেয়া যাক। কেন বলছি আমেরিকা কিছু না বুঝেই এই বক্তব্য দিয়েছে, কারণ এই এই আমেরিকা এখন যেই বিদ্রোহীদের উগ্রপন্থী বলছে একটু পর তাদেরকেই অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে মদদ দেওয়া শুরু করবে। অথবা হয়তো এইভাবে না বুঝার ভান করাটাও পরিকল্পনার অংশ ছিল।
এভাবেই যুদ্ধে যুদ্ধে ২০১৩ সাল চলে আসলো। ক্ষমতার স্বপ্ন পুনরায় দেখতে থাকলো বাশার আল আসাদ। কিন্তু ততদিনে সাধারণ জনগণ সবই তার বিপক্ষে চলে গেছে। যদিও সবাই সশস্ত্র আন্দোলনে যোগ দেয়নি। অবস্থা বেগতিক দেখে আসাদ সময়ের সবচেয়ে ঘৃণিত আক্রমণটা করলো। নিজের দেশের নিরপরাধ নিরস্ত্র সাধারণ জনগণের উপর ক্যামিকাল অস্ত্র প্রয়োগ করলো। এরপর এক বছরের টানা হামলায় হত্যা করলো সতেরোশরও বেশী মানুষ। হ্যা এক আর সাতের পর দুইটা শূন্য, ১৭০০।
ওবামা তখন আবারো অফিশিয়ালি "গভীর উদ্বেগ" প্রকাশ করে। এবং বাশারের বিপক্ষে চলে যায়। এবং
সপ্তাহ খানেকে মধ্যেই সে আমেরিকা থেকে সিআইএর ট্রেইনিংপ্রাপ্ত কমান্ডারদের পাঠিয়ে দেয় সিরিয়ান
বিদ্রোহীদের মদদে।
যুদ্ধে এখন পর্যন্ত পক্ষ দুইটাই। একদিকে বাশার বাহিনী যাদের পেছনে আছে
ইরান ও হিযবুল্লাহ। অন্যদিকে বিদ্রোহীগ্রুপ যাদের সাথে ছিল অন্যান্য জীহাদী গ্রুপ এবং সর্বশেষ মদদ নিয়ে আসলো আমেরিকা।
ফেব্রুয়ারী ২০১৪। সিরিয়া যুদ্ধের
প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় টারনিং পয়েন্ট। সিরিয়াতে আইএসের আগমন ঘটলো। এসেই অন্যান্য জীহাদী গ্রুপের
সাথে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লো। এবং বিদ্রোহীদের পক্ষে লড়াইরত জীহাদী গ্রুপ আলকায়দা ও জাবহাতুন নুসরার সাথে চরম শত্রুতা শুরু করলো। এমনকি আইএসের বাধানো অভ্যন্তরীণ এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে তারা জাবহাতুন
নুসরার নেতাদের ঘাটি থেকে ধরে এনে জবাই করেছিল বলেও খবর পাওয়া গেছে। আর আইএসের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের রেশ ধরেই সিরিয়ার যুদ্ধে ত্রিমুখী সংঘর্ষের সূচনা হয়।
তখন আইএস এক সাথে দুই "মহৎকাজ" শুরু করে। একদিকে বাশারের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে অন্যদিকে সকল হক্বপন্থী মুজাহিদ বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু করে। এবং তাদের "খেলাফত" কায়েমের ঘোষণা দেয়।
আইএসের এই আচরণের সাথে আমেরিকার লক্ষ্য উদ্দেশ্যে পৌছানোর ছক কিভাবে যেন মিলে যায়। কারণ ঠিক এই সময়ে আমেরিকার আচরণও রহস্যজনকভাবে পরিবর্তন হতে শুরু করে। এতদিন যেখানে আমেরিকা বিদ্রোহীদের মদদ দিয়ে যাচ্ছিল, আইএসের খেলাফত ঘোষণার পর আমেরিকা তাদের টার্গেট পরিবর্তন করে ফেলে। আসাদ বিরোধিতা থেকে আমেরিকা এইবার পুরোপুরী আইএস বিরোধিতার মিশনে নামে। এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে শুধুমাত্র তাদেরকেই অস্ত্র ও ট্রেনিং সরবরাহ করা শুরু করে যারা আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এবং যারা আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায় তাদেরকে ট্রেনিং দেয়া
বন্ধ করে দেয়। এর ফলে মূল বিদ্রোহকারী ও বিদ্রোহ দুইটাই চরমভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।
এভাবে আমেরিকা যুদ্ধের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আইএসকে মূল লক্ষ্য বস্তু বানানোর ফলে সুবিধা হয় আসাদের। এবং ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বাশার আল আসাদের পাশে এসে দাঁড়ায় রাশিয়া। পাঠিয়ে দেয় কয়েক ডজন মিলিটারী এয়ারক্রাফট। ধীরে ধীরে আসাদ শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে।
ওদিকে আমেরিকায় ওমাবার যেতে না যেতেই ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাশার আল আসাদেকে ক্ষমতায় রাখার বিকল্প নেই। বুঝাই যাচ্ছে, আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ট্রাম্প- ওবামার কিছু দ্বিমত থাকলেও সিরিয়াইস্যুতে গোটা আমেরিকার নীতি এক ও অভিন্ন। ওমাবা যেই পর্যন্ত খেলে গিয়েছিল, ট্রাম্প ঠিক তারপর থেকেই কন্টিনিউ করেছে।
সেকারণেই আমেরিকান ইলেকশনের সময়ও ট্রাম্প আর পুতিনের বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতা কারোই নজর এড়িয়ে যায়নি। এই বন্ধুত্বের সুবাদে বাশারের জন্য
নিজের দেশের জনগণের বিরুদ্ধে বিজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো।
এরপর ২০১৬ এর শেষের দিকে যখন ইরানি মিলিশিয়া ও
রাশিয়ান এয়ার ক্রাফটের সাহায্য আসে বাশার তখনই আলেপ্পো দখল করে
নেয়।
সিরিয়ার সাধারণ মানুষগুলো মৃত্যুর প্রহর গুনতে শুরু করে। বেসামরিক মানুষগুলোকে মেরে ফেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বাশার সরকার। কেউ বেচে থাকলে তাকেও ক্যামিকাল অস্ত্র ব্যবহার করে মেরে ফেলা হবে। সোশাল মিডিয়াগুলোতে তখন অনেকগুলো বিদায়ী ভিডিও বা ফাইনাল ম্যাসেজ ভাইরাল হয়েছিল। ঘরের ভেতর বন্দি হয়ে অসহায় সিরিয়ানরা দুনিয়াবাসীকে উদ্দেশ্যে করে বলছিল আমাদের যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই।
তাদের একটাই আশা ছিল। এই ফাইনাল ম্যাসেজগুলো যদি মেইনস্ট্রিম মিডিয়া প্রচার করে তাহলে হয়তো কোনভাবে কেউ এসে বাচিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা ব্যবস্থা হলেও হতে পারে। বাইরে শুধুই ভয়ংকর সব বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। কেউ ঘর থেকে বের হয়ে পালাবার চেষ্টা করছিল ঠিকই, কিন্তু কোথায় পালাবে! সামনের পথগুলো তো সব সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। নিজ ভূখন্ডের মাটিগুলো পায়ের নিচ থেকে সরে যাচ্ছিল।
তাদের একটাই আশা ছিল। এই ফাইনাল ম্যাসেজগুলো যদি মেইনস্ট্রিম মিডিয়া প্রচার করে তাহলে হয়তো কোনভাবে কেউ এসে বাচিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা ব্যবস্থা হলেও হতে পারে। বাইরে শুধুই ভয়ংকর সব বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। কেউ ঘর থেকে বের হয়ে পালাবার চেষ্টা করছিল ঠিকই, কিন্তু কোথায় পালাবে! সামনের পথগুলো তো সব সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। নিজ ভূখন্ডের মাটিগুলো পায়ের নিচ থেকে সরে যাচ্ছিল।
সেই সময়টাতে আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে কিছু একটিভিষ্টদের কথা এসেছিল। তাদের একজন ছিলেন মোহাম্মদ আলহামদু। ২০১৬ সালের অক্টোবরে টুইটার জয়েন করেছেন। এসছিল আরেকজন সোশ্যাল এক্টিভিষ্ট লিনা শামীর কথাও। অল্প সময়েই তাদের ফলোয়ার সংখ্যা যেভাবে লাখ ছাড়িয়ে যেত সোশ্যাল মিডিয়াতে এতে বুঝা যেত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লাখ লাখ মানুষ এই জুলুম অন্যায়ের সাক্ষী হয়ে আছে।
এই সোশ্যাল একটিভিস্টদের সবাই আসাদ সরকারের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া মহান বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বলে নিজেদের পরিচয় দেয়। অনেকের প্রোফাইলেই এবাউটে দেখা যেত, স্পষ্ট ভাষায় লিখে রেখেছে, "সিরিয়ার এই মহান বিপ্লবের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত"। সাত বছরের মেয়ে বানা ছিল এই একটিভিষ্টদের মধ্যে একজন। তার মা তার টুইটার থেকে টুইট করতো। তার ফলোয়ার ছিল প্রায় তিন লাখের মত। মৃত্যুর আগে তার শেষ টুইটটি ছিল একটি বিদায়ী বার্তা, "আমাদের বাচাতে কেউ আসেনি, আমরা চলে যাচ্ছি.. গুডবাই.."।
এই সোশ্যাল একটিভিস্টদের সবাই আসাদ সরকারের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া মহান বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বলে নিজেদের পরিচয় দেয়। অনেকের প্রোফাইলেই এবাউটে দেখা যেত, স্পষ্ট ভাষায় লিখে রেখেছে, "সিরিয়ার এই মহান বিপ্লবের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত"। সাত বছরের মেয়ে বানা ছিল এই একটিভিষ্টদের মধ্যে একজন। তার মা তার টুইটার থেকে টুইট করতো। তার ফলোয়ার ছিল প্রায় তিন লাখের মত। মৃত্যুর আগে তার শেষ টুইটটি ছিল একটি বিদায়ী বার্তা, "আমাদের বাচাতে কেউ আসেনি, আমরা চলে যাচ্ছি.. গুডবাই.."।
এইসব সোশ্যাল এক্টিভিস্টের ভূমিকায় থাকা মানুষগুলো দুনিয়াবাসীকে আরেকটি বার্তা দিয়ে গিয়েছিল, একটি সত্য বার্তা, আসাদবাহিনী প্রত্যেকটা শহরে, এলাকায়, মহল্লায় গিয়ে নিরপরাধ মানুষগুলোকে মেরেছে এবং রাশিয়া এই গণহত্যায় আসাদকে প্রত্যক্ষভাবে মদদ দিয়েছে।
অন্যদিকে আল কায়েদা যখন সিরিয়ায় ঢুকেছিল তখন এই নিষ্ঠুর বাশার বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের জীবন বাজী রেখে তাঁরা বাচিয়েছিল ইস্ট আলেপ্পোর সাধারণ জনগণকে। কিন্তু এই সত্য সংবাদটি সবচেয়ে কম প্রচার হয়েছে। কারণ দুনিয়াবাসীর কাছে এই আল কায়েদাকে শুধুমাত্র জঙ্গি হিসেবেই চেনানো হয়েছে। এরা যে ভাল কাজ করতে পারে এ কথা বিশ্বাস করতে দুনিয়াবাসীর কষ্টই হওয়ার কথা।
২০১৭ তে আসাদ আবারো ক্যামিকাল অস্ত্র ব্যবহার করে নিরস্ত্র জনগণ হত্যা করেছে। এই হামলায়প্রাণ হারিয়েছে ১০৫ জন নিরপরাধ মানুষ। যাদের মধ্যে বিশজনই ছিল শিশু। বুঝাই যাচ্ছে আসাদের রক্তের পিপাসা এখনো নিবারণ হয়নি। এক হাতে দিকে লাখো সিরিয়ানের রক্তের স্রোত অন্যদিকে বিদেশী শকুনের দৃষ্টি। এসবের ধোপে আসাদের ক্ষমতার নেশার ঘোর কতদিন টিকবে তাই এখন দেখার বিষয়।
No comments:
Post a Comment