Monday, August 28, 2017

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মানদণ্ড (৪) প্রসঙ্গ ভন্ডপীর

ভন্ডপীরের আকিদার গোড়ার কথা
মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ

১) “পরকালে মুক্তির জন্য ইসলাম জরূরী নয়” উক্তিটি দেওয়ানবাগীর। তিনি আরো বলেন, “সকল ধর্মের লোকেরাই নাজাত পাবে। যদি সে নিজ অবস্থায় থেকে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে তাহলে সে একজন নামধারী মুসলমান থেকেও উত্তম”।
তিনি তাঁর বই “মানতের নির্দেশিকা”তে লিখেছেন, “ভিন্ন ধর্মের অনুসারী আমার এক মুরিদকে তাঁর ধর্ম থেকে অযিফা, আমল দিয়েছি তা পালন করে সে নবিজীর সাথে মুসাফাহা করতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর হৃদয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সংবাদ আসে এবং ভাল মন্দ বাতলায়ে তাকে সঠিক পথে পরিচালনা করে”।

দেওয়ানবাগীর এই আকিদাটি সম্পূর্ণ কুফুরী। সূরা বাকারার ৬২ নং আয়াতের অপব্যাখ্যা করে খৃষ্টানদের আকিদামত সে এই ব্যাখ্যা দিয়ে নিজের মতবাদ প্রমাণ করেছে সে। এ কারণেই তাদের দরবারে অমুসলিমদের আগমন দেখা যায়। অথচ সুরা আলে ইমরানের স্পষ্ট আয়াত “ইন্নাদ দিনা ইনদাল্লাহিল ইসলাম, আল্লাহর কাছে ধর্ম শুধু ইসলাম”।

২) ভন্ডপীরদের দ্বিতীয় মৌলিক সমস্যা হচ্ছে, তারা জরুরিয়তে দ্বীনকে অস্বীকার করে। এমন অনেক বিষয়কে অস্বীকার করে যা কুরআন হাদিসের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত। তাদের কতিপয় দাবীঃ
-বেহেশতের হুর বলতে মানুষের আত্মাকে বুঝায়।
-আত্মায় চিরস্থায়ী যন্ত্রণাদায়ক অবস্থাকে জাহান্নাম বুঝায়।
-সূফি সাধকদের দৃষ্টিতে মানুষের হাশর পৃথিবীর বুকে সংগঠিত হয়।
-পুলসিরাত পাড়ি বলতে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ইমানের উপর থাকাকে বুঝায়।
-আল্লাহ ও জিব্রাইল এক ও অভিন্ন। নাউজুবিল্লাহ

৩) অনেক কিছু নিয়েই তাদের বেশ বাড়াবাড়ি আছে। যেমন এক বছর ওরস কাযা করলে এই এক বছর বহু দুর্ভোগ পোহাতে হবে। অথচ ওরস সহীহ হাদিস দ্বারা নাজায়েজ বলে প্রমাণিত।

৪) বুজুর্গ হলে ইবাদাত লাগেনা। চন্দ্রপাড়ার পীর তাঁর বই হাক্কুল ইয়াকীনে এমনই লিখেছেন। এমনকি মাকামে ছুদুর, নাশর, নূরী ও কুরবে মাকিনের মাকার অতিক্রম করার পর ইবাদত করলে নাকি কুফুরী হবার সম্ভাবনাও থাকে। এরপক্ষে আবার তারা আয়াতও পেশ করে।
“ওয়াবুদ রব্বাকা হাত্তা ইয়াতিয়াকাল ইয়াকিন, ইয়াকিন আসা পর্যন্ত ইবাদাত করো”। এখানে তারা ইয়াকীন শব্দের ব্যাখ্যা করে মারেফত দিয়ে। অথচ সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনগণ এই ব্যাপারে একমত যে ইয়াকীন বলতে এখানে মৃত্যুকে বুঝানো হয়েছে।

৫) রাসুল ও আল্লাহর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। দেওয়ানবাগী, মাইজভান্ডারী ও চন্দ্রপুরীর এই আকিদা। এই আকিদা মূলত ওয়াহদাতুল উজুদ অর্থাৎ সর্বেশ্বরবাদের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে আবিষ্কৃত। সম্পূর্ণ শিরক। এ দর্শনেই খৃষ্টানরা বিশ্বাসী। তারা ঈসা আ.কে আল্লাহ তায়ালায় পুত্র মানে।

ভন্ডপীরদের এইসব আকীদা পোষন করলে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত তো দূরের কথা মুসলমান থাকারই সুযোগ নেই।

No comments:

Post a Comment

The word of Shaykhul Azhar about Corona victim

সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব তাদের কিছু ব্যয়ভার বহন করা যারা এই রোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ লকডাউনে ঘরে আটকা পড়ার কারণে হ...